ঢাকা, বুধবার   ০৮ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২৪ ১৪৩১

অবৈধ স্থাপনায় উধাও একশ ফুট রাস্তা (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৫২ পিএম, ১৬ অক্টোবর ২০২০ শুক্রবার

নথিপত্রে রাস্তার প্রস্থ ১২০ ফুট। দখল দৌরাত্মে ব্যবহার উপযোগী মাত্র ১৮ ফুট। বসেছে বাজার, দোকান, হোটেল আরও কতো কী! এমনই অবস্থা রাজধানী ঢাকার মোহম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে বুদ্ধিজীবী সেতু হয়ে দক্ষিণমুখী সড়কের। 

ধানমণ্ডি-মোহম্মদপুর থেকে ওপারে আটিবাজার। একপাশে সাভার হয়ে উত্তর কিংবা দক্ষিণবঙ্গে যাচ্ছে শত শত পরিবহন। আরেকপাশে কেরাণীগঞ্জ হয়ে রাস্তা মিশেছে পদ্মা সেতুতে। সেই রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে নাকাল গন্তব্যে ফেরা মানুষ।

পথচারীরা বলছেন, ‘ব্রিজের উভয় পাশে এমনভাবে দোকান বসানো হয়েছে, যেখানে একটা গাড়ি মোড় ঘুরানো মতো অবস্থা নেই। একটি বাস চললে একজন মানুষও চলতে পারেন না। রাস্তা যেখানে ১২০ ফুট ছিল সেখানে এখন ২০ ফুটও নেই।’

ভুক্তভোগীরা বলছেন, ‘এখানে র‌্যাবের একটি কার্যালয় ও আরবি বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তারপরও রাস্তার এই দশা। ব্রিজে যানজটের ভয়াবহতার ফলে প্রায়ই ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটছে। মোবাইল থেকে শুরু করে মেয়েদের গলা থেকে চেইন, কানের দুল পর্যন্ত ছিনিয়ে নেয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে।’ 

তারা আরও বলেন, ‘ব্রিজে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যানজট লেগেই আছে। ফলে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। রাস্তা চওড়া হলেও যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, দোকান স্থাপনের ফলে একেবারে ছোট হয়ে এসেছে।’

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, আশপাশে অনেকগুলো সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা। কিন্তু জটের কারণে তার সুফল পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। 

জানতে চাইলে কেরাণীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ বলেন, ‘পদ্মসেতু নিয়ে সরকারের যে পলিসি সেখানে কেরাণীগঞ্জের কানেক্টিভি বিস্তারের জন্য চেষ্টা চলছে। কোন গাড়ির যদি স্টার্ট বন্ধ হয়, তখন উভয় পাশেই যানজটের সৃষ্টি হয়। রাস্তার উভয় পাশেই কিছু অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। অতিদ্রুত সেগুলো সরিয়ে দেয়া হবে। সরু রাস্তাগুলো বিস্তারের কাজ চলছে।’

এদিকে দিন পেরিয়ে সন্ধ্যা কিংবা গভীর রাতেও যানজটের ধকল সইতে হয় আম জনতার। স্থানীয় এমপি আর কাউন্সিলরের নাম ভাঙান দখলদার পেশীশক্তি। চিনলেও তাই নাম বলা সম্ভব নয় ভুক্তভোগীদের। 

কয়েকজন জানান, ‘রাস্তার উভয় পাশে ভাড়া নিয়ে দোকান বসানো হয়েছে। আর চলতে সমস্যা হচ্ছে আমাদের। রাস্তা যেখানে ছিল ১২০ ফুট রাস্তা, সেখানে কোন না কোনভাবেই একশ ফিট উধাও হয়েছে। তাই যানজটের কারণে যেখানে যেতে সময় লাগার কথা ১০ মিনিট সেখানে ঘণ্টাতেও পৌঁছানো যাচ্ছে না। 

তারা বলেন, ‘রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স হলেও যাওয়ার মতোই উপায় নেই। রাস্তার দু’পাশেই ময়লা। সামনে র‌্যাবের অফিস থাকলেও সামান্য বৃষ্টিতে হাটু পানি জমে এ রাস্তায়।’

এ ব্যাপারে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি)-এর প্রেসিডেন্ট প্রোকৌশলী নূরুল হুদা বলেন, ‘যে সংস্থাই কাজ করুক না কেন, যদি এটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও সমন্বয় করে করা হয় তাহলে রাজধানীর মানুষের ভোগান্তি কমবে। পাশাপাশি মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন হলে সমস্যা থাকবে না।’

এআই/এমবি