ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লালন ছিলেন প্রতিবাদী (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৪১ এএম, ১৭ অক্টোবর ২০২০ শনিবার

অসাম্প্রদায়িকতার প্রাণপুরুষ, মানবতাবাদি, মরমী ও সহজিয়া ধারার গানের স্রষ্টা ও দার্শনিক ফকির লালন সাঁইয়ের ১৩০তম তিরোধান দিবস আজ। ১৭৭৪ সালে বাংলায় জন্ম নেয়া এই তাপস, জ্ঞানপথ, যোগপথ, ভক্তি ও কর্ম পথের অনুসন্ধান করেছেন, সন্ধান দিয়ে গেছেন। ১৮৯০ সালের ১৭ অক্টোবর ১১৬ বছর বয়সে কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ায় দেহ ত্যাগ করেন মহাত্মা লালন।

লালন শাহ, যিনি লালন ফকির কিংবা মহাত্মা লালন নামে বহুল পরিচিত। ভক্তকূলের বিশ্বাস, তরুণ বয়সে তীর্থ ভ্রমণে বের হলে গুটি বসন্তে আক্রান্ত হন লালন। সঙ্গীরা তাঁকে মৃত ভেবে ফেলে চলে যায়। কালিগঙ্গা নদীতে ভাসমান লালনকে উদ্ধার করেন মলম শাহ নামের আরেক সাধক। পরে কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ায় বসবাস শুরু করেন এই মরমি সাধক। সুফি ভাবতত্ত্বে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি গান রচনায় মনোনিবেশ করেন।

লালনের গানে মানুষই মূখ্য। তার দর্শন আবর্তিত হয় মানুষলগ্ন ভূমিকে ঘিরে। ১১৬ বছর আয়ুষ্কালে ফকির লালন রচনা করেন প্রায় আড়াই হাজার নিগূঢ় অর্থের গান। 

যাবতীয় নিপীড়ন, ধর্মীয় গোঁড়ামি আর কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লালন ছিলেন প্রতিবাদী। ব্রিটিশ শাসন এবং হিন্দু-মুসলিম অনৈক্যের বিরুদ্ধেও উচ্চারণ করেছেন সচেতনতার বাণী। 

বিবিসি বাংলার সেরা গান জরিপে ‘খাঁচার ভেতর অচিন পাখি’ অন্যতম। ২০০৪ সালে একই প্রতিষ্ঠানের সেরা বাঙালির তালিকাতেও তিনি স্থান করে নেন।  

লালনের প্রভাব বাংলা ভাষা-সাহিত্য ছাড়িয়ে পৌঁছে যায় বিশ্বপরিমণ্ডলে। অ্যালেন গিন্সবার্গ তাঁকে নিয়ে লিখেছেন আফটার লালন নামে বই। লালনের গান ও জীবনচরিত নিয়ে তৈরি হয়েছে বহু নাটক-সিনেমা, গান, কবিতা। 

লালন গবেষক ও লেখক সাইমন জাকারিয়া বলেন, লালনকে বোঝার জন্য যে চর্চাগুলো আমাদের দরকার, সেগুলো এখনও করে উঠতে পারিনি। লালন শাহর হ্যান্টরাইটার হিসেবে অর্থাৎ গানগুলো যখন লালন মুখে মুখে বলতেন সেগুলো লিপিবদ্ধ করতেন। সেই খাতাগুলো কোথায় গেল, আজও সেগুলোর হদিস আমরা পাইনি।

অসাম্প্রদায়িক চেতনা, প্রেম ও মানবাত্মার মুক্তির জন্য লালনের সহজিয়া দর্শন অনন্ত ধারায় বহমান এই বাংলায়।

এএইচ/এমবি