ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

আজ শহীদ বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ দাসের জন্মদিন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৩৯ এএম, ২৭ অক্টোবর ২০২০ মঙ্গলবার

আজ শহীদ বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ দাসের জন্মদিন। তিনি ১৯০৪ সালের আজকের এই দিনে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। আত্মত্যাগী, সাহসী এ মানুষটি ছিলেন একজন ভারতীয় মুক্তিযোদ্ধা এবং বিপ্লবী ভগৎ সিংয়ের সহকর্মী। লাহোর ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত হয়ে তিনি ১৯২৯ সালের ১৪ জুন গ্রেপ্তার হন। জেলবন্দীদের অধিকারের দাবিতে ওই বছরই ১৩ জুলাই অনশন শুরু করেন তিনি। ৬৩ দিন অনশনের পর ১৩ সেপ্টেম্বর মাত্র ২৪ বছর বয়সে জেলেই মৃত্যু হয় তার।

যতীন্দ্রনাথ দাস ১৯২০ সালে ভবানীপুর মিত্র ইন্সটিটিউশন থেকে ম্যাট্রিক পাস করে কংগ্রেসের সদস্য হয়ে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন। ১৯২৮-২৯ সনে বঙ্গবাসী কলেজের ছাত্র ছিলেন। ১৯২১ সালে পশ্চিমবঙ্গের বন্যার্তদের যথেষ্ট সাহায্য করেন।

স্বাধীনতার পর তার সম্মানে কলকাতা মেট্রোর হাজরা অঞ্চলের মেট্রো স্টেশনটির নামকরণ করা হয় যতীন দাস পার্ক মেট্রো স্টেশন। ১৯২৩ সনে বিপ্লবী শচীন্দ্রনাথ সান্যাল কলকাতার ভবানিপুরে ঘাঁটি করলে তিনি এই দলে যোগ দেন। পরে দক্ষিণেশ্বরের বিপ্লবী দলের সংগেও তাঁর যোগাযোগ হয়। ১৯২৪ সালে দক্ষিণ কলকাতায় ‘তরুণ সমিতি’ প্রতিষ্ঠা করেন এবং এই সময় গ্রেপ্তার হয়ে ঢাকা জেলে প্রেরিত হন। জেল কর্তৃপক্ষের আচরণের প্রতিবাদে ২৩ দিন অনশন করেন। ১৯২৯ সালের ১৪ জুন যতীন দাসকে তাঁর কলকাতার বাড়ি থেকে লাহোর পুলিশের নির্দেশে গ্রেপ্তার করা হয়। মূলত ঐ সময় ইস্যু ছিল লাহোর ষড়যন্ত্র মামলার বিচারাধীন বলে এই গ্রেপ্তার। পরবর্তী সময়ে এরা জেলের ভেতর রাজনৈতিক বন্দিদের মর্যাদার দাবীতে এবং মানবিক সুযোগ সুবিধার আন্দোলনে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিল।

তারা ১৩ জুলাই থেকে ভগৎসিং ও বটুকেশ্বর দত্তের সমর্থনে অনশন সংগ্রাম আরম্ভ করে। যতীন দাস ছাড়া আর কারো অনশন আন্দোলনের অভিজ্ঞতা ছিল না। ভাবাবেগে চালিত হয়ে অনশন সংগ্রামে যোগ দিতে নিষেধ করেছিল অন্য সাথীদের। সে বলল, রিভলবার পিস্তল নিয়ে লড়াই করাই চেয়ে অনেক বেশী কঠোর এক অনশন সংগ্রামে আমরা নামছি। অনশন সংগ্রামীকে তিল তিল করে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে হয়।

তার ওই মৃত্যুর ফলে রাজবন্দিদের উপর অত্যাচার প্রশমিত হয়। এই বীর শহিদের মৃতদেহ কলকাতায় আনা হলে দুই লক্ষ লোকের এক বিরাট মিছিল নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে শোকযাত্রায় কেওড়াতলা শ্মশানঘাট পর্যন্ত অনুগমন করে। মৃত্যুর আগে অতি কষ্টে ক্ষীণ কন্ঠে তিনি তাঁর শেষ ইচ্ছা ব্যাক্ত করে গেলেন, নৈষ্ঠিক শাস্ত্র বিশ্বাসী বাঙালী ফ্যাসনে আমাকে কালীবাড়ী নিয়ে যাওয়া বা অন্যান্য সৎকর্ম করিও না। আমি একজন ভারতীয়। আমি কেবল বাঙালীর নই।
এসএ/