ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৪ ১৪৩১

বাল্যবিয়ে করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করলেন ইউপি চেয়ারম্যান

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৭:২৭ পিএম, ২ নভেম্বর ২০২০ সোমবার | আপডেট: ০৭:২৯ পিএম, ২ নভেম্বর ২০২০ সোমবার

কুড়িগ্রামে ৯ম শ্রেণী পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীকে বিয়ে করে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছেন ৪৫ বছর বয়সী এক ইউপি চেয়ারম্যান। তৃতীয়বারের মতো বিয়ের পিঁড়িতে বসায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন ওই চেয়ারম্যান। 

ঘটনার নায়ক উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু তালেব সরকার। সরকার যেখানে বাল্য বিয়ে মুক্ত সমাজ গড়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে, সেখানে নিজেই বাল্যবিয়ে করে সরকারকেই ব্রদ্ধাঙ্গুলি দেখালেন এই জনপ্রতিনিধি। এই ঘটনায় জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়নের দোলন গ্রামের প্রতিবন্ধী বাচ্চু মিয়ার ৯ম শ্রেণীতে পড়ুয়া বকসীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বহ্নি আক্তারের ওপর কু-নজর পড়ে ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব সরকারের। এরপর ওই শিক্ষার্থীকে নানাভাবে ফুসলিয়ে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং হতদরিদ্র পরিবারটিকে আর্থিক সহায়তার প্রলোভন দেখাতে থাকেন। এরই এক পর্যায়ে গত রোববার (১ নভেম্বর) রাতে মেয়েটির পরিবারের লোকজন চেয়ারম্যানের সঙ্গে তাকে বিয়ে দেন। 

ব্যক্তিগত জীবনে ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব সরকারের এক স্ত্রী ও কলেজ পড়ুয়া এক কন্যা সন্তান রয়েছে। তবে এর আগেও তিনি আরও একটি বিয়ে করলেও সেটি বেশি দিন টিকেনি। চেয়ারম্যানের তৃতীয় বিয়ের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সদ্য নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান প্রকাশ্যে বাল্যবিয়ে করলেও প্রশাসন কোনও আইনগত ব্যবস্থা না নেয়ায় জনমনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। 

বকসীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেরুজ্জামান বলেন, ওই শিক্ষার্থী আমার স্কুলের মানবিক বিভাগের ৯ম শ্রেণীতে পড়ালেখা করছে। বিয়ে হবার কথাটি আমি বিভিন্ন লোক মুখে আজ শুনতে পেরেছি।  

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। 

বিষয়টি নিয়ে উলিপুর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলম রাসেল জানান, যেহেতু বাল্য বিবাহ হয়ে গেছে, সেখানে মোবাইল কোর্ট করার সুযোগ নেই। তবে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট এসএম আব্রাহাম লিংকন জানান, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। বাল্য বিয়ে করা একটা অপরাধ। বিয়ে হয়ে গেলেও আইনগত ব্যবস্থা নেবার সুযোগ রয়েছে। 

এনএস/