ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

কিংবদন্তি শিল্পী ভূপেন হাজারিকার মৃত্যুবার্ষিকী আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:২৮ এএম, ৫ নভেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার

বাংলা গানের কিংবদন্তি শিল্পী ভূপেন হাজারিকার নবম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। গান দিয়ে ভীষণভাবে সময়কে ছুঁয়ে দিয়েছেন কিংবদন্তি এই গায়ক। বাংলা ও হিন্দি দু’ভাষাতেই আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা পায় তাঁর গান। এই গুণি শিল্পী ২০১১ সালের এই দিনে পৃথিবীকে চিরবিদায় জানান।

বাংলা সংগীতে জীবনমুখী গানের অন্যতম পথপ্রদর্শক ভূপেন হাজারিকা। তিনি আজীবন মানুষের জন্য গেয়েছেন। তাঁর গানে উঠে এসেছে মানবপ্রেম, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, ধর্ম, প্রকৃতি, শোষণ, নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ প্রতিবাদ।

১৯২৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ভারতের আসামে জন্ম ভুপেন হাজারিকার। মাত্র ১০ বছর বয়স থেকেই গান গাইতে এবং লিখতে শুরু করেন তিনি। শিশুশিল্পী হিসেবে আসামের চলচ্চিত্রেও কাজ করেছেন বহুদিন। ১৯৪২ সালে তিনি গোহাটির কটন কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। 

এরপর ১৯৪৪ সালে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাস করেন এবং পরে ১৯৪৬ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ পাস করেন। ১৯৫৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

বাংলা, হিন্দিসহ বিভিন্ন ভাষায় অসংখ্য গান রয়েছে ভূপেন হাজারিকার। বাংলাদেশের ‘সীমানা পেরিয়ে’ চলচ্চিত্রেও সঙ্গীত পরিচালনা করেন ভূপেন হাজারিকা। এ চলচ্চিত্রের বিখ্যাত গান ‘মেঘ থম থম করে’ এখনও সবার মুখে মুখে। 

এছাড়া বহু জীবন ঘনিষ্ঠ গান রয়েছে ভূপেন হাজারিকার। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ‘মানুষ মানুষের জন্য’, ‘আমি এক যাযাবর’, ‘প্রতিধ্বনি শুনি’, ‘চোখ ছল ছল করে’, ‘আজ জীবন খুঁজে পাবি রে..  ছুটে ছুটে আয়’, ‘বিস্তীর্ণ দু’পাড়ে’, ‘সাগর সঙ্গমে’, ‘দোলা হে দোলা’, ‘প্রতিধ্বনি  শুনি’, ‘আমায় একটা সাদা মানুষ দাও’, ‘শরৎ বাবু খোলা চিঠি দিলেম তোমার কাছে’, ‘গঙ্গা আমার মা-পদ্মা আমার মা’, ‘জীবন নাটকের নাট্যকার কি বিধাতা পুরুষ’।

বাংলাদেশের সঙ্গে আত্মিক সম্পর্কের বাঁধন ছিল তাঁর। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিয্দ্ধু চলাকালে এই শিল্পীর সঙ্গীত স্বাধীনতাকামী জনগণের মাঝে আশার আলো জাগিয়েছিল। মৃত্যুর কয়েক বছর আগে ঢাকায় এসেও ভক্ত শ্রোতাদের মাতিয়ে যান তিনি।

৩৩টি চলচ্চিত্রে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। সুর ও সঙ্গীত পরিচালনা করেন একাধিক ছবিতে। তাঁর গান গাওয়া ও সঙ্গীত পরিচালনায় বিখ্যাত ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘রুদালী’, ‘দামান’, ‘দারমিয়া’, ‘গজগামিনী’ প্রভৃতি। 

সর্বশেষ ২০০৬ সালে ‘চিঙ্গারী’ চলচ্চিত্রে কণ্ঠ দেন তিনি। বাংলাদেশে  ১৯৭৩ সালে ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ নামে যৌথ প্রযোজনায় ছবিতে কণ্ঠ এবং ১৯৭৭ সালে ‘সীমানা পেরিয়ে’ ছবির সংগীত পরিচালনা করেন। 

কিংবদন্তি এই শিল্পীর প্রতিটি গানই যেন উদ্বুদ্ধ হওয়ার মন্ত্র। ভূপেনের গান মানুষকে অধিকার আদায়ের সংগ্রামে উদ্দীপ্ত করে আজও। অসামান্য প্রতিভা নিয়ে জন্ম নেওয়া এই মহান শিল্পীর শূন্যস্থান সহজে পূরণ হওয়ার নয়।
এএইচ/ এসএ/