ঢাকা, সোমবার   ০২ ডিসেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৭ ১৪৩১

হুমায়ূন আহমেদের কালজয়ী চার চরিত্র 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৪৩ এএম, ১২ নভেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার

কলম যাদুকর, কথা সাহিত্যিক, দেশ বরেন্য লেখক, চলচ্চিত্র ও বিখ্যাত নাট্য নির্মাতা হুমায়ুন আহমেদ তার লেখায় বিভিন্ন চরিত্রের অবতারণা করেছেন।  

বর্তমানে মানুষ হুমায়ূন আহমেদ আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তার লেখায় যে সকল কালজয়ী চরিত্র ফুটিয়ে তোলেছেন তা এখনো আমাদের মাঝে অম্লানভাবে টিকে আছে।

তার লেখায় ফুটিয়ে তোলা কয়েকটি চরিত্র আপনাদের সুবিধার্থে উল্লেখ করা হলো-  

১) হিমু :
হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্ট চরিত্রগুলোর মধ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা চরিত্রের একটি হচ্ছে হিমু। প্রচন্ড রোদ নিউ মার্কেট এলাকায় দাড়িয়ে আছে যুবক। হাতে একটি সিগারেট। আজ হরতাল। কখন একটি বাস পুড়বে সেই আগুনে সে সিগারেট ধরাবে!’ এই বিস্ময়কর তরুনটিই হলো হিমু্।

উদ্ভট সব কাজই তার মূল কর্মকাণ্ড। যুক্তির ধারধারেন না। এমন সব কাণ্ড করেন যে তার আশে পাশের মানুষ বরাবরই অবাক হয়ে যায়। মানুষকে চমকে দেওয়াই তার কাজ।

প্রজন্মের পর প্রজন্ম ‘হিমু’ হতে চেয়ে খালি পায়ে পিচ ঢালা পথে ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতাটা নিয়েছেন অনেকে। হিমুর প্রথম বইয়ের নাম ‘ময়ূরাক্ষী’।  

২) মিসির আলী :
যতো রহস্যময় ঘটনাই ঘটুক যুক্তি দিয়ে তার সমাধান খুজে নেন মিসির আলী।  হিমু’র ঠিক বিপরীত। হিমু যেমন যুক্তি মানে না, মিসির আলী আবার যুক্তির বাইরে হাঁটেন না।

ফ্রেমের ভারী চশমা পরিহিত মিসির আলী অতিপ্রাকৃতিক ঘটনা বিশ্বাস করেন না। মানুষের মন, আচরণ, স্বপ্ন এবং সংকট যুক্তির আলোকে ব্যাখা করাই হলো মিসির আলীর একমাত্র কাজ।

হুমায়ূন আহমেদের তৈরি করা চরিত্রগুলোর মধ্যে ‘মিসির আলী’ছিল তার সবচেয়ে প্রিয় চরিত্র।

৩) শুভ্র :
হুমায়ূন আহমেদের চরিত্রগুলোর মধ্যে শুভ্র অন্যতম। নিজেকে পৃথিবীর যাবতীয় জটিলতা থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করেন।

দৈনন্দিন সমস্যা নিয়ে ভাবতে চান না শুভ্র। সব সময় মোটা ফ্রেমের চশমা পড়ে বইয়ের মাঝে ডুবে থাকেন।

হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে তৌকির আহমেদ পরিচালিত ‘দারুচিনি দ্বীপ’ সিনেমায় দেখা যায় এই শুভ্রকে। এ চরিত্রে অভিনয় করেন নায়ক রিয়াজ।

৪) বাকের ভাই :
হুমায়ূন আহমেদই সেই বিস্ময়কর ইতিহাস সৃষ্টি করেন ‘বাকের ভাই’ চরিত্রের মাধ্যেমে। হুমায়ূন আহমেদের ‘কোথাও কেউ নেই’ উপন্যাস অবলম্বনে নিমির্ত হয় নাটক। এ নাটকে ‘বাকের ভাই’র চরিত্রে অভিনয় করেন আসাদুজ্জামান নূর।

পাড়ার এক মাস্তানকে একটি মিথ্যা মামলায় ফাঁসি দেওয়া হয়। এরই প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে শত শত মানুষ! ‘বাকের ভাই’র ফাঁসি বন্ধের দাবিতে মিছিল, সমাবেশ বিক্ষোভ হয়। নাটকের স্ক্রিপ্ট ঘুরানোর কথা বলা হয়।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফাঁসিই বহাল রেখেছেন নাট্যকার। ‘বাকের ভাই’র ফাঁসি হওয়ার পর কেঁদেছিলেন মানুষ। এমনকি নাট্যকারের উপর তীব্র অভিমান থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। 
এসএ/