ঢাকা, মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

বশির আহমেদের স্মরণে গাইলেন মেসবাহ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:০৫ পিএম, ১৭ নভেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার

বাংলা গানের ধ্রুপদী সাধক বশির আহমেদের জন্মদিন ১৮ নভেম্বর। তিনি একাধারে গায়ক, সুরকার, গীতিকার ও সংগীত পরিচালক ছিলেন। প্রয়াত এই সঙ্গীতজ্ঞের জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে শিল্পীর দুই সন্তান হুমায়েরা বশির ও রাজা বশির বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। ভার্চ্যুয়েল এ আয়োজনে ষাটের দশকে শিল্পীর গাওয়া একটি গজল গেয়েছেন এই সময়ের আলোচিত গজলশিল্পী মেসবাহ আহমেদ।

‘কুছ আপনি কেহিয়ে, কুছ মেরি সুনিয়ে’ শীর্ষক শিল্পী বশির আহমেদের গাওয়া উর্দু গজলটি ওই সময় গোটা উপমহাদেশে সমাদৃত হয়েছিল। 

শিল্পীর জন্মদিনে তার গাওয়া একটি ক্লাসিক গজল নতুন করে গাওয়ার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মেসবাহ আহমেদ বলেন, ‘আমি সম্মানিত বোধ করছি। কারণ বশির আহমেদ বাংলাদেশে এমন একজন সঙ্গীতজ্ঞ, যার নাম শুনলে শ্রদ্ধায় বিনত হতে হয়। তার জন্মদিনে শিল্পীর দুই সন্তান হুমায়েরা বশির ও রাজা বশির তাদের বাবার গাওয়া বিখ্যাত গজলটি গাইতে আমাকে স্মরণ করেছেন, এটি আমার জন্য এক বড় প্রাপ্তি।’

জন্মদিনে বশির আহমেদ স্মরণে সারগাম ইন্টারন্যাশনাল মিউজিক্যাল একাডেমির ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবেশনায় থাকছে ভক্তিমূলক গান। মেসবাহ ছাড়াও অনুষ্ঠানে প্রয়াত শিল্পীর গাওয়া বিভিন্ন সময়ের জনপ্রিয় গান গাইবেন বাপ্পা মজুমদার, দিঠি আনোয়ার, সোহেল মেহেদী, ইব্রাহিম খলিল, ইউসুফ আহমেদ খান এবং শিল্পীর দুই সন্তান হোমায়েরা বশির ও রাজা বশির।

উল্লেখ্য, বরেণ্য এই শিল্পীর সম্মানে গত বছর থেকে ‘বশির আহমেদ সম্মাননা পদক’ চালু করা হয়। এবার দ্বিতীয়বারের মতো এ সম্মাননা প্রদান করা হচ্ছে। এ বছর সম্মাননা পাচ্ছেন- গাজী মাজহারুল আনোয়ার (গীতিকার), সুজেয় শ্যাম (সুরকার), মিলন ভট্রাচার্য (যন্ত্রসংগীত), ওস্তাদ নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী (সংগীত শিল্পী), লিয়াকত আলী লাকী (সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব) এবং নঈম নিজাম (সাংবাদিকতা)।

১৮ নভেম্বর, বুধবার রাত ৮টায় বশির আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে শিল্পীর স্মরণে অনলাইনে অনুষ্ঠানটি প্রচার কার হবে। অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা হোমায়েরা বশির এবং রাজা বশির জানিয়েছেন, সম্মাননা পদক আগেই প্রাপ্য ব্যাক্তিত্বদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। তাদের সেই সম্মাননা গ্রহণের দৃশ্য এবং অনুভুতির অংশটুকু আমরা অনুষ্ঠানের সময় অনলাইনে দেখানোর উদ্যোগ নিয়েছি।

তারা জানান, সারগাম সাউন্ড ষ্টেশন পেইজ থেকে বশির আহমেদের জন্মদিনের আয়োজন ও সম্মাননা পদক প্রদান দেখতে পাবেন সবাই। 

প্রসঙ্গত, দিল্লির সওদাগর পরিবারের সন্তান বশির আহমেদ ১৯৩৯ সালের ১৯ নভেম্বর কলকাতার খিদিরপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম নাসির আহমেদ। ষাটের দশকের শুরুতে তিনি সপরিবারে ঢাকায় আসেন। ঢাকায় আসার আগেই উর্দু চলচ্চিত্রে গান গাওয়া শুরু করেন তিনি। ওই সময়ই শিল্পী হিসেবে তাঁর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর কণ্ঠ ছিল মাধুর্যে ভরা। রাগসংগীতেও দখল ছিল তাঁর। ওস্তাদ বড়ে গোলাম আলী খাঁর কাছে তালিম নেন তিনি। তালাশ চলচ্চিত্রে বিখ্যাত শিল্পী তালাত মাহমুদের সঙ্গে কাজ করেন। রেডিও পাকিস্তানেও গান গেয়েছেন তিনি।

একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন গুণী এই শিল্পী। তাঁর জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে- ‘অনেক সাধের ময়না আমার’, ‘আমাকে পোড়াতে যদি এত লাগে ভালো’, ‘আমি সাত সাগর পাড়ি দিয়ে’, ‘যারে যাবি যদি যা/ পিঞ্জর খুলে দিয়েছি’, ‘ডেকো না আমাকে তুমি/ কাছে ডেকো না’ ইত্যাদি।
এসএ/