ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

অর্ধশতাধিক বুদ্ধিজীবীর বিবৃতি এবং বাস্তবতা

শাহাজাদা নোমান

প্রকাশিত : ০৪:৩৭ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৪:৩৯ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার

চিম্বুক পাহাড়

চিম্বুক পাহাড়

আজ সকালে বিভিন্ন পত্রিকায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও পরিবেশবিদ সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতি দেখলাম। যেখানে দেশের ৬২ জন বিশিষ্ট নাগরিক তথা বুদ্ধিজীবী পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান জেলার চিম্বুক-থানচি সড়কে ম্রো জনগোষ্ঠী আধ্যুষিত এলাকায় বিনোদন পার্ক স্থাপন কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

পার্বত্য চট্টগ্রামের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে নিবন্ধটি পড়ার পর আমার মনের মধ্যে অনেকগুলো প্রশ্ন উঁকি দিতে শুরু করেছে, আর তার উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছি। এই বিবৃতিতে তথাকথিত বুদ্ধিজীবী বা দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা যে বক্তব্য পেশ করেছেন তার সাথে বাস্তবতার মিল কতটুকু তা বোঝার চেষ্টা করছি। পাহাড়ের সাধারণ একজন মানুষ হিসেবে অবশ্য তাদের মত এত উচ্চশিক্ষিত নই বা জ্ঞান-বুদ্ধিতে তাদের ধারে কাছেও নেই। তবে আজকে তাদের এই বিবৃতি পড়ে মনে হচ্ছে যে, তাদের হয়তো অন্য বিষয়ে অগাধ জ্ঞান থাকতে পারে, কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের বিষয়ে এবং এখানকার বাস্তবতা সম্বন্ধে তাদের কোন ধারনাই নাই।

আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এটি তাদের ড্রাফটিং বা রচিত কোন বিবৃতি নয়। বরং আমরা যারা চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়ের লেখা বিভিন্ন প্রবন্ধ বা নিবন্ধ এর সাথে পরিচিত, তারা খুব সহজেই বুঝতে পারছি, এটি আসলে কার লেখা বিবৃতি। আর আমাদের সম্মানিত বুদ্ধিজীবীরা কিছু না জেনে, না বুঝে অন্ধের মত স্বাক্ষর করে দিয়েছেন।

পূর্বেও বহুবার ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় তার বুদ্ধির ঝলক দেখিয়ে এ ধরনের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য পেশ করার মাধ্যমে দেশবাসীকে ধোঁকা দিয়েছেন এবং এবারও সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। এখানে আমি আমাদের সুশীল সমাজের কাণ্ডারী এসকল বিশিষ্ট নাগরিকদের কয়েকটি প্রশ্ন করতে চাই:

প্রথমত, যে এলাকায় এই পাঁচ তারকা হোটেলটি নির্মাণ নিয়ে বিক্ষোভ হচ্ছে, সে এলাকাটি সম্বন্ধে তাদের প্রত্যক্ষ কোনও ধারণা আছে কিনা? তারা কি কখনও সরেজমিনে গিয়ে জায়গাটি দেখেছেন? আদৌ কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে তাদের বসতভিটা হতে উচ্ছেদ করা হয়েছে কিনা এবং এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে কি পরিমাণ বসতি বা চাষাবাদের জমি ধ্বংস হয়েছে সে বিষয়ে বস্তুনিষ্ঠ তদন্ত করে দেখেছেন কিনা?

আমি জানি এই উত্তর হবে ‘না’। তাই তাদের জ্ঞাতার্থে আমি কিছু তথ্য জানাতে চাই। যে এলাকাটিকে নিয়ে এই বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে তা হলো- পার্বত্য চট্টগ্রামে অবস্থিত ১৫টি পর্বতমালা বা রেঞ্জ-এর অন্যতম চিম্বুক পাহাড়ের চন্দ্রপাহাড় নামক স্থানে অবস্থিত তৃতীয় শ্রেণীভুক্ত জঙ্গলাকীর্ণ একটি এলাকা, যা সরকারের খাস খতিয়ান ভুক্ত অর্থাৎ কোন ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি নয়। চিম্বুক পাহাড় আনুমানিক ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ, যা বান্দরবান সদরের তেতুলপাড়া নামক স্থান থেকে শুরু হয়ে সীমান্ত পিলার ৬৪ অতিক্রম করে মায়ানমারে প্রবেশ করেছে। এর মধ্যে মাত্র ২০ একর জমি পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রচলিত প্রথা ও রীতি মেনে সেখানকার জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি অর্থাৎ হেডম্যানের অনুমতি সাপেক্ষে বান্দরবান জেলা পরিষদের মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে ৩৫ বছরের জন্য লিজ নেওয়া হয়েছে।

এ থেকে সহজেই অনুমেয় যে, বিবৃতিতে উল্লেখিত ম্রো উপজাতির শ্মশান, পবিত্র পাথর, পবিত্র পর্বত ইত্যাদি নষ্ট করে হোটেল ও বিনোদন পার্ক নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

বস্তুত সেখানে কোন জনবসতিই নেই, কাজেই সেখান থেকে ম্রো সম্প্রদায়ের ১০ হাজার মানুষকে তাদের ভিটামাটি থেকে উচ্ছেদ করার যে গল্প তৈরি করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। পার্বত্য চট্টগ্রামে ম্রো জনগোষ্ঠীর সংখ্যাই যেখানে ২৫ হাজারের বেশী নয়, সেখানে ১০ হাজার লোকের উচ্ছেদ আষাঢ়ে গল্পের মতো শোনায় কিনা ভেবে দেখেছেন? বিশেষ করে ২০ একর জায়গার মধ্যে ১০ হাজার লোকের বসতি বা চাষাবাদ কল্পকাহিনীকেও হার মানায়।

আর এরূপ একটি কল্পকাহিনীকে কোন প্রকার যাচাই-বাছাই না করে শুধু অন্যের কথা আমলে নিয়ে কীভাবে তারা এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করলেন তা ভেবে পাচ্ছি না। অবশ্য এটাকে তাদের জ্ঞানের অভাব না বলে সরল বিশ্বাসের মাশুল হিসেবে দেখতে চাই। তারা কি কিছু না বুঝেই বিশিষ্ট রাজাকার ত্রিদিব রায়ের ধৃর্ত সন্তান দেবাশীষ রায়ের ফাঁদে পা দিয়েছেন? অন্যভাবে বললে বলা যায় বোকা হয়েছেনকি? কিন্তু দেশের খ্যাতনামা বুদ্ধিজীবীরা বোকা হবেন - এটাও তো মানা যায় না।

এখানে তাদেরকে একটি প্রশ্ন করতে চাই, আচ্ছা বলুন তো পৃথিবীর সর্বোচ্চ ও দীর্ঘ পর্বতমালা হিমালয়ের মালিক কে? সেখানে বসবাসকারী তামাং, লিম্বু, গুরখা বা সেরপা জাতিগোষ্ঠীর মানুষ, না নেপালের সরকার? নিশ্চয়ই বলবেন সরকার। তাহলে কীভাবে ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই চিম্বুক পাহাড়ের মালিকানা সেখানে বসবাসরত একটি ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর হয়? প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার পর্যটক শুধুমাত্র হিমালয় পর্বত দেখতে নেপালে গমন করে। আর এই পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে সেখানে গড়ে উঠেছে শত শত হোটেল ও রিসোর্ট, যা কিনা নেপালের অর্থনীতির প্রধান স্তম্ভ। এখন যদি সেখানকার জনগণ এই হিমালয়ে হোটেল বা রিসোর্ট তৈরিতে বাধা দিতো, তাহলে নেপালের মতো পর্বতময় একটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা কি হতো তা ভেবে দেখেছেন কি? তাই হিমালয় যদি কারো ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তি না হয়ে থাকে তাহলে চিম্বুক পাহাড়ের মত বিশাল একটি পর্বতমালা কিভাবে একটি জাতিগোষ্ঠীর কিছু সংখ্যক মানুষের পৈত্রিক সম্পত্তি হয়, তা আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে বোধগম্য নয়।

আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, এই চিম্বুক পাহাড়েই কিন্তু ইতিমধ্যে সাইরু নামে পাঁচ তারকা বিশিষ্ট ব্যক্তিমালিকানাধীন একটি রিসোর্ট তৈরি হয়েছে, যা এলাকার মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখেছে। কই, সেটা নিয়ে তো কোনো কথা বলছেন না। আশ্চর্যের বিষয় হলো- চন্দ্রপাহাড়ে হোটেল নির্মাণ প্রকল্প শুরু হয়েছিল ২০১৫ সালে। তখন কিন্তু কেউ এর বিরোধিতা করেনি। যদি ম্রো সম্প্রদায়ের লোকেরা উচ্ছেদ হতো, তাদের চাষাবাদের জমি বেদখল হতো তাহলে তো তখনই তাদের প্রতিবাদ করার কথা।

তাহলে এখন কোন উদ্দেশ্যে এ সকল আন্দোলন, মিটিং-মিছিল বা বিবৃতি প্রদান করা হচ্ছে তা ভেবে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। আর বর্তমানে সরকার যখন পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে ও দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছে, ঠিক তখনই পর্যটন বান্ধব একটি প্রকল্পকে বাধাগ্রস্ত করতে দেবাশীষ রায়ের মত চরম বিতর্কিত একজন ব্যক্তির নেতৃত্বাধীন স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্রে আপনাদের মত বিশিষ্ট নাগরিকরা কিভাবে শামিল হলেন তা ভেবে পাচ্ছিনা। এর পিছনের কারণ কি? বিরাট একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন রেখে যাচ্ছি এখানে।

এই প্রকল্পের বিরোধিতা করতে গিয়ে আপনারা বারবার শান্তিচুক্তির ব্যত্যয় ঘটেছে এবং সংবিধান লংঘন হয়েছে, কথাটি বলেছেন। আপনাদের কি কোন ধারণা আছে যে, পার্বত্য শান্তি চুক্তির কতগুলো ধারা দেশের সংবিধানের সাথে মারাত্মক ভাবে সাংঘর্ষিক, দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি এবং মানবাধিকারের পরিপন্থী? পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির অনেকগুলো ধারা বাংলাদেশের সংবিধানের আর্টিকেল ১, ৬-৯,১১,১৯,২৬-২৯, ৫৫-৫৬, ১২২, ১২৫ সহ আরো বেশ কয়েকটি আর্টিকেল এর সুস্পষ্ট লংঘন। আমার বক্তব্য বিশ্বাস না হলে শান্তি চুক্তির একটি কপি হাতে নিয়ে দেখতে পারেন।

বিশেষ করে- চুক্তির প্রথম খন্ডের ধারা ১, দ্বিতীয় খন্ডের ধারা ৯, ২৬(১),২৯,৩২,৩৪,৩৫ সহ আরো অনেকগুলো ধারা পড়লে দেখতে পাবেন এই শান্তিচুক্তিটি আমাদের পবিত্র সংবিধানের সাথে কতটুকু সাংঘর্ষিক, যা শুধু সেখানে বসবাসকারী কিছু মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করেনি বরং আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতা ও ভৌগলিক অখণ্ডতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। আর এই শান্তি চুক্তির ফসল পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি নিষ্পত্তি সংশোধনী আইন– ২০১৬(সংশোধন) বাস্তবায়িত হলে দেশের সার্বভৌমত্ব কতখানি লঙ্ঘিত হবে, তা ভেবে দেখেছেন কি? কই কখনো তো এ ব্যাপারে আপনাদেরকে কোন কথা বলতে দেখলাম না?

আপনারা এই হোটেল নির্মাণের বিরোধিতা করতে গিয়ে জনস্বার্থ ও জাতীয় স্বার্থের কথা বলেছেন, বান্দরবানের মত জায়গার সংবেদনশীল পরিবেশ ও প্রতিবেশের বিষয়ে বলেছেন তা খুব ভালো কথা। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে- কার স্বার্থ? কিসের স্বার্থ? আর পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটলে কার স্বার্থের ব্যাঘাত ঘটবে? আসলে দেবাশীষ গং-রা চান না যে, এ অঞ্চলের মানুষ পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে অর্থনৈতিক মুক্তি লাভ করুক, দারিদ্রতার কষাঘাত থেকে বেরিয়ে আসুক। কেননা তারা জানে যে, অর্থনৈতিক মুক্তি লাভ করলে এ সকল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জনগণকে আর প্রথার নামে সামন্তবাদী দাসত্বের শৃংখলে বেঁধে রাখা যাবেনা, পাওয়া যাবে না এদেরকে পুঁজি করে বিদেশি দাতা সংস্থার কাছ থেকে কাড়ি কাড়ি ডলার-পাউন্ড। আর তাই বলছি, জনস্বার্থ ও জাতীয় স্বার্থের ধুয়া তুলে একটি জনবান্ধব উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধের ষড়যন্ত্রের অংশ হবেন না।

আপনারা দেশের সুশীল সমাজ, জাতির বিবেক, দেশে আপনাদের অনেক সম্মান, অনেক নামডাক। আপনাদের কাছে আমরা সব সময় পক্ষপাতবিহীন বক্তব্য ও ন্যায় বিচারের আশা করি। কখনো তো দেখলাম না আপনারা পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী দরিদ্র ও নিপীড়িত বাঙালি জনগোষ্ঠীর পক্ষে একটি কথা বলছেন, যারা কিনা সেখানে বসবাসকারী মোট জনসংখ্যার অর্ধেক। আপনাদের কি এখানে বসবাসকারী বাঙালী জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্বন্ধে কোন ধারণা আছে? তাদের না আছে ভূমির উপর কোন অধিকার, না ভোটাধিকার, না শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে কোন কোটা। 

আপনারা কি জানেন? এখানে বসবাসকারী পাহাড়ি জনগোষ্ঠীকে কোনও প্রকার আয়কর প্রদান করতে হয় না এবং তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হতে সরকার কোনও প্রকার রাজস্ব পর্যন্তও পায় না। অথচ প্রতিবছর পাহাড়ের সার্বিক উন্নয়নে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে থাকে। কোথা থেকে আসে এই অর্থ, কখনও জানতে চেষ্টা করেছেন কি? আপনারা সম অধিকারের কথা বলেন। কিন্তু এসব বিষয়ে তো কখনও কথা বলতে দেখিনা, মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকেন। তখন কি জাতীয় স্বার্থ বিঘ্নিত হয় না? 

শান্তি চুক্তির এত বছর পরও পাহাড়ে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলো সশস্ত্র সন্ত্রাসী ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত এখানকার সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করছে, চাঁদাবাজিতে জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে, দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি সৃষ্টি করে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার মাধ্যমে জুম্মল্যান্ড তৈরীর স্বপ্ন দেখছে, কখনতো আপনাদের এ বিষয়ে কথা বলতে দেখলাম না। অথচ সেখানে একটি হোটেল তৈরি করতে গেলেই জাতীয় স্বার্থের বিঘ্ন ঘটল? এটা কি ধরনের ন্যায়বিচার?

আসলেই এখন আর বুঝতে বাকি নেই যে, আপনারা যে সকল বিষয়ের অবতারণা করেছেন সে সম্পর্কে আপনাদের কোনও ধারণাই নাই বরং আপনারা হয়তো রাজাকারপুত্র ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়ের (যাকে আপনারা রাজা বলে কুর্নিশ করেন) শিখিয়ে দেয়া বুলি আওড়াচ্ছেন। আর এর মাধ্যমে আপনারাও পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশীদার হয়ে গেলেন। 

আর এই যদি আমাদের বিশিষ্টজন, সুশীল সমাজের অবস্থা হয়, তাহলে এদেশের ভবিষ্যৎ সত্যিই অন্ধকার। তবে আমি এখনই হতাশ হতে চাই না বরং মনে করি যে, এখনো সময় শেষ হয়ে যায়নি। নিজের বিবেককে জাগ্রত করুন, বিবেকের আয়নায় নিজের চেহারা দেখুন, তাহলেই উত্তরটি পেয়ে যাবেন। তাই কারো ষড়যন্ত্র বা প্রতারণার ফাঁদে পা না দিয়ে নিজের জ্ঞান ও বুদ্ধি দিয়ে বিষয়গুলো গভীরভাবে বিবেচনা করুন। তাহলেই আপনার-আমার সর্বোপরি আমাদের দেশ ও জাতির মঙ্গল- তা না হলে বিপদ।

লেখক: কলাম লেখক, ফ্রীল্যান্স সাংবাদিক, খাগড়াছড়ি

এনএস/