ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

কুষ্টিয়ায় বেড়েছে কিশোর অপরাধ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৫:০৭ পিএম, ২৪ নভেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার

করোনাকালে কুষ্টিয়ায় বেড়েছে কিশোর অপরাধ। এরই মধ্যে এসব গ্যাং এর হাতে প্রাণ হারিয়েছে এক কিশোর। এছাড়া একাধিক হামলার ঘটনাও ঘটেছে। অভিযোগ এসব কিশোর গ্যাংকে নেতৃত্ব দিচ্ছে রাজনৈতিক দলের কিছু নেতা। তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে এসব কিশোরদের নানা ভাবে দলে টানছেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৩ জুলাই কুষ্টিয়ার কুঠিপাড়ায় ফুটবল খেলা নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে তারিকুল ইসলাম নামে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এ ঘটনায় ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হলেও একজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। 

তারিকুলের বাবা-মা বলেন, ‘ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে আমার ছেলে আর ফিরে আসেনি। মামলা করা হয়েছিল কিন্তু কোন কাজ হয়নি।’

অন্যদিকে, গত ১২ নভেম্বর কুষ্টিয়া আদালত চত্বরে হৃদয় নামে এক কিশোরকে ছুরিকাঘাত করা হয়। ১৯ নভেম্বর শহরের হাউজিংয়ে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী লাবিব আসলামকে মারধর করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয় ভিডিও। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব কিশোর গ্যাংয়ের পেছন থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কিছু রাজনৈতিক নেতা। এদিকে, অভিযুক্ত কয়েকজনকে এরইমধ্যে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষার।

তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের ভেতরে যারা এসব করছে, দায়িত্বে থাকাকালে তাদের বহিষ্কার করেছি। তারপরও যদি তারা এসব কাজ করে, তাহলে তো এর দায়ভার আমরা নিব না।’ 

এলাকাবাসী জানান, ‘অবশ্যই এর পেছনে কারো হাত আছে। যার কারণে কিশোর অপরাধ দিনদিন আরও বাড়ছে।’ 

কিশোর অপরাধীদের দৌরাত্ম্যের কথা স্বীকার করে পুলিশ ও আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু আইন প্রয়োগ করে নয়, নৈতিক শিক্ষা ও পারিবারিক মূল্যবোধের মাধ্যমে এসব কিশোরকে সঠিক পথে ফেরাতে হবে। পাশাপাশি বন্ধ করতে হবে রাজনৈতিক মদদ।

জেলা পুলিশ সুপার এসএম তানভির আরাফাত বলেন, ‘এই কিশোররা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় লালিত হয়। এটি আসলে সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে।’

কুষ্টিয়া জর্জকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী বলেন, ‘অপরাধ করেও যখন শাস্তি হচ্ছে না, তখন অপরাধীদের সাহসটা আরও বেড়ে যায়। সবার আগে অভিভাবকদের তারপর প্রশাসনের এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে। আর যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে পুরো রাষ্ট্র ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে।’

জেলা গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রের খবর, কুষ্টিয়া শহরে ১১টির মত কিশোর গ্যাং রয়েছে। যাদের বয়স ১২ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে।

 

এআই//এসি