ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

অবহেলিত মানসিক স্বাস্থ্যসেবা (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:০৭ পিএম, ২৫ নভেম্বর ২০২০ বুধবার

দেশে ২ কোটিরও বেশি মানুষ কোনো না কোনোভাবে মানসিক রোগে ভুগছেন। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ১৮.৭ শতাংশের মানসিক সমস্যা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নারীদের মধ্যে মানসিক রোগের হার বেশি। সে হিসেবে চিকিৎসক, জনবল ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো একেবারেই অপ্রতুল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যে কারণে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা একরকম অবহেলিত।

শাহীন হায়দার, জীবন থেকে হারিয়ে গেছে অনেকগুলো বছর। ২০০৮ সাল থেকে মানসিক রোগে ভুগছেন। বোনের বাসায় থাকতেন, বোনের প্রতি তার স্বামীর বৈরি আচরণ প্রভাব ফেলে শাহীনের মনে। সেখান থেকেই শুরু মানসিক অসুস্থতা। 

শাহীনের ভাই জানান, ডাক্তার বলছেন ক্লোস কালচার, অর্থাৎ আমরা পরিবারের সবাই যৌথ থাকতাম। যখন এইচএসসিতে পড়ে তখন ও আমার বোনের বাসায় থাকতো। সেখানে আমার বোনকে নিয়ে দুলাভাইর আচরণ সেটা ওর পছন্দ হতো না। সেখান থেকেই তার মনে একটা প্রভাব ফেলে। আর এখান থেকেই সে মানসিক রোগী হয়।

শাহীনের মত এমন অনেকেই আসছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে। একটি গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, ১শ’ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে ১৮.৭ জন কোন না কোন মানসিক রোগে ভুগছে। আর ১শ’ শিশুর মধ্যে এই সংখ্যা ১৩।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের মধ্যে মানসিক রোগ বেশি। শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে এই হার কম। প্রাপ্তবয়ষ্ক ও নারীদের একটি বড় অংশই ভুগছেন বিষণ্নতায়।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মানসিক রোগে নারী-পুরুষের সংখ্যা প্রায় সমান। তবে নারীদের মধ্যে বিষণ্নতার হার বেশি হওয়ার অনেক সামাজিক কারণ রয়েছে, অনেক পারিবারিক কারণ রয়েছে, অর্থনৈতিকভাবে ক্ষমতায়নের অভাব রয়েছে। এই সমস্ত কারণে নারীদের মধ্যে মানসিক রোগ বেশি। আমরা দেখেছি যে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ১৫ থেকে ৩০ বয়সী নারীদের মধ্যে মানসিক রোগের হারটা খানিকটা বেশি।

দেশে এই রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ২৭০ জন। আর মনোবিজ্ঞানীর সংখ্যা আড়াইশ।

অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ১৮.৭ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে মানসিক রোগ রয়েছে। আর শিশু-কিশোরদের মধ্যে মানসিক রোগের হার হচ্ছে ১৩ শতাংশ। যার বিপরীতে এই মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ এবং মনোবিজ্ঞানীর সংখ্যা অত্যন্ত অপ্রতুল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাসপাতালে আগত গুরুতর মানসিক রোগীর সংখ্যা বেশি হলেও কমিউনিটিতে মানসিক উদ্বেগ ও বিষন্নতায় ভুগছেন এমন রোগীর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। 

 

এএইচ/এসএ/