ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৪ ১৪৩১

দশ মাসেও সংস্কার হয়নি, ঝুঁকিতে এলাকাবাসী

বেনাপোল প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ০৩:১০ পিএম, ২৫ নভেম্বর ২০২০ বুধবার

যশোরের শার্শা উপজেলার নাভারণ-কাজীরবেড়-গোড়পাড়া জিসি সড়কের দুটি ব্রিজ দীর্ঘদিন ধরে ভেঙ্গেচুরে অবহেলায় পড়ে আছে। প্রতিদিনই সাামান্য করে ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে আজ একেবারে জরাজীর্ণ অবস্থায় পরিণত হয়েছে। যা এখন মরণ ফাঁদে রূপ নিয়েছে। 

ব্রিজটির অবস্থা এতটাই খারাপ যে ১০ কিলোমিটার গ্রামীণ এই সড়কে যাবতীয় যানবাহন চলাচল এবং জনসাধারণের জন্য যাতায়াত মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রায় ১০ মাস আগে বিধ্বস্ত এ ব্রিজ দুটি সংস্কারের জন্য শার্শা ও যশোর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে ঢাকা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজেস শীর্ষক কর্মসূচি ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সড়ক ও সেতু রক্ষণাবেক্ষন)-এর প্রকল্প পরিচালক বরাবর পত্র পাঠানো হলেও কবে নাগাদ মেরামত করা হবে তার কোন সদুত্তর দিতে পারেনি উপজেলা এলজিইডি। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নাভারণ জিসি-গোড়পাড়া জিসি সড়কে ৯১৬ মিটার চেইনেজে ৬০ মিটার ব্রিজ নির্মাণ। নাভারণ জিসি-গোড়পাড়া জিসি সড়কে ৩২৩৭ মিটার চেইনেজে ২টি বিধ্বস্ত ব্রিজের ওপরের ঢালাই ধসে গিয়ে ভেতরের রডগুলো বের হয়ে আছে এবং চলাচলের জন্য সাইডে মাত্র অল্প কিছু জায়গা অবশিষ্ট রয়েছে। যার ফলে ব্রিজ দিয়ে একটি ভ্যান-রিকশা চলাচল করতে পারছে না। চরম সমস্যা হচ্ছে জণসাধারনের চলাচলেও। 

পায়ে হেঁটে চলতেও ভয় পান কখন ব্রিজের ফাঁক দিয়ে নীচে পড়ে যান। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটিতে জরাজীর্ণ, ঝুঁকিপূর্ণ ও ভাঙ্গাচোরা ব্রিজের মেরামত বা সংস্কার না করে স্থানীয় এলজিইডি কর্মকর্তারা নিরাপদে চলাচলের জন্য নির্দেশনামূলক নাম ফলক লাগিয়ে দিয়েছেন। দীর্ঘদিন সেটার দিকেও নজর না দেয়ায় সতর্ককীকরণ নাম ফলকটিও আজ হুমড়ি খেয়ে পড়ে আছে। 

এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজ দুটি এভাবেই পড়ে আছে, মেরামতের কোনো খোঁজ নেই। এ ব্রিজ  এতটাই ভেঙে গিয়েছে যে গবাদি পশু থেকে শুরু করে শিশুদের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। শিশুদের কোনো নিরাপত্তা দিতে পারছি না। ফলে যেকোন সময়ই ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। শিশুদেরকে নিয়ে আমাদের সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়।

গাতিপাড়া খেয়াঘাট মোড় এলাকার বাসিন্দা আরিফুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ভাঙ্গাচোরা ব্রিজ দুটির জন্য ভারী কোন যানবাহন তো দূরের কথা ইমার্জেন্সি কোন রোগীকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়াটাও অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। ব্রিজটি দ্রুত সংস্কার না হলে চিকিৎসার অভাবে বাড়িতে মরে যেতে হবে। ’

এলজিইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এলাকাবাসী জানান, সংস্কার অভাবে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা ব্রিজটি অতিদ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হোক। সড়কে চলাচলকারী যানবাহন এবং স্থানীয় জনসাধারণের সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন এমনটাই মনে করেন এলাকাবাসী ও সচেতন মহল।

এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলীএম. এম মামুন হাসান বলেন, ‘ব্রিজ  দুটি সংস্কারের জন্য চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি যশোর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশল বরাবর নাভারণ জিসি-গোড়পাড়া জিসি সড়কে ৯১৬ মিটার ও ৩২৩৭ মিটার চেইনেজে ২টি বিধ্বস্ত ব্রিজের সংস্কারের জন্য বলা হয়েছে। ’

তিনি বলেন, ‘যশোর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর্জা মো. ইফতেখার আলী গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজেস শীর্ষক কর্মসূচি ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর (সড়ক ও সেতু রক্ষণাবেক্ষণ) প্রকল্প পরিচালক বরাবর ব্রিজ দুটি দ্রুত সংস্কারের জন্য পত্র পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত কোন উত্তর না আসায় কাজ করতে বিলম্ব হচ্ছে। ব্রিজ দুটি সংস্কারের কাজ যাতে দ্রুত করা যায় সে ব্যাপারে জোর চেষ্টা চলছে।’
এআই/এসএ/