ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

গ্যাস্ট্রিকের সহজ সমাধান

প্রকাশিত : ০৮:৫৪ পিএম, ২১ মে ২০১৭ রবিবার | আপডেট: ০৪:১০ পিএম, ২৫ মে ২০১৭ বৃহস্পতিবার

গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিটির সমস্যা খুবই স্বাভাবিকে একটি  ব্যাপার। পেটে গ্যাসের সমস্যা নেই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এ সমস্যায় যারা ভুগছেন কেবল তারাই বোঝেন এটি কতো যন্ত্রণার। একটু ভাজাপোড়া অথবা দাওয়াত, পার্টিতে মসলাযু্ক্ত খাবার খেলে তো শুরু হয়ে যায় অস্বস্তিকর গ্যাসের সমস্যা। ফাস্ট ফুড, ব্যস্ত জীবনযাত্রার যুগে গ্যাস, পেটের অসুখ এখন ঘরোয়া রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে কোনও বাসায় গেলেই গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ পাওয়া যাবেই। তবে গ্যাসের ওষুধ না খেয়েও সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া উপায় রয়েছে। চলুন তাহলে জেনে নেই ওষুধ ছাড়া ঘরোয়া উপায়ে কীভাবে গ্যাসের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।  

লবঙ্গ:  

যদি আপনি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় জর্জরিত হয়ে থাকেন, তবে লং হতে পারে আপনার সঠিক পথ্য। দুই থেকে তিনটি লবঙ্গ মুখে দিয়ে চুষলে একদিকে বুক জ্বালা, বমিবমিভাব, গ্যাস দূর হয়। সঙ্গে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়।

পুদিনা পাতার :

 গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধানে পুদিনা পাতার রস বহুদনি ধরেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এক কাপ পানিতে ৫টা পুদিনা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে খান। পেট ফাঁপা, বমিভাব দূরে রাখতে এর বিকল্প নেই।

শসা

শসা পেট ঠাণ্ডা রাখতে অনেক বেশি কার্যকরী খাদ্য। এতে রয়েছে ফ্লেভানয়েড ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা পেটে গ্যাসের উদ্রেক কমায়।

মাঠা:

দুধ এবং মাখন দিয়ে তৈরি মাঠা আমাদের দেশে একসময় খুবই জনপ্রিয় ছিলো। অ্যাসিডিটি দূর করতে টনিকের মতো কাজ করে এই মাঠ। তবে মাঠার সাথে সামান্য গোলমরিচের গুঁড়া যোগ করে নিলে খুবই উপকার দেয়।

বোরহানী:

বিয়ে বাড়িতে আমাদের বোরহানী না হলে চলেই না। টক দই, বীট লবণসহ বিভিন্ন ধরনের অ্যাসিডিটি বিরোধী উপাদান দিয়ে বোরহানী তৈরি করার কারণে এটি হজমে খুবই সহায়ক ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন ভারী খাবারের পর একগ্লাস বোরহানী খেলে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেকাংশে দূর হবে।

তুলসী পাতা:

হাজারো গুণে ভরা তুলসী পাতার কথা আমার সবাই কম বেশি জানি। অ্যাসিডিটি দূর করতে এর ভূমিকা অনন্য। আপনি যখন গ্যাসের খুব সমস্যা অনুভব করবেন তখন পাঁচ থেকে ছয়টি তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে দেখবেন অ্যাসিডিটি কমে আসছে। তুলসী পাতা যে প্রতিদিন ব্লেন্ড করে পানি দিয়ে খাবেন, তার অ্যাসিডিটি হওয়ার প্রবণতা অনেক কমে যাবে।

দই:

দই আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এতে করে দ্রুত খাবার হজম হয়, ফলে পেটে গ্যাস হওয়ার ঝামেলা দূর হয়।

পেঁপে: পেঁপেতে রয়েছে পাপায়া নামক এনজাইম যা হজমশক্তি বাড়ায়। নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করলেও গ্যাসের সমস্যা কমে।

কলা কমলা: 

কলা ও কমলা পাকস্থলীর অতিরিক্ত সোডিয়াম দূর করতে সহায়তা করে। এতে করে গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও কলার স্যলুবল ফাইবারের কারণে কলা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ক্ষমতা রাখে। সারাদিনে অন্তত দুটো কলা খান। পেট পরিষ্কার রাখতে কলার জুড়ি মেলা ভার।

আঁদা

আঁদা সবচাইতে কার্যকরী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার। পেট ফাঁপা এবং পেটে গ্যাস হলে আদা কুচি করে লবণ দিয়ে কাঁচা খান, দেখবেন গ্যাসের সমস্যা সমাধান হবে।

 ঠাণ্ডা দুধ: পাকস্থলির গ্যাসট্রিক অ্যাসিডকে নিয়ন্ত্রণ করে অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি দেয় ঠাণ্ডা দুধ। এক গ্লাস ঠাণ্ডা দুধ পান করলে অ্যাসিডি দূরে থাকে।

দারুচিনি

দারুচিনি হজমের জন্য খুবই ভালো একটি উপাদান। এক গ্লাস পানিতে আধ চামচ দারুচিনির গুঁড়ো দিয়ে ফুটিয়ে দিনে ২ থেকে ৩ বার খেলে গ্যাস দূরে থাকবে।

জিরা

জিরা পেটের গ্যাস, বমি, পায়খানা, রক্তবিকার প্রভৃতিতে অত্যন্ত ফলপ্রদ। জ্বর হলে ৫০ গ্রাম জিরা আখের গুড়ের মধ্যে ভালো করে মিশিয়ে ১০ গ্রাম করে পাঁচটি বড়ি তৈরি করতে হবে। দিনে তিনবার এর একটি করে বড়ি খেলে ঘাম দিয়ে জ্বর সেরে যাবে।

সরিষা :

সরিষা গ্যাস দূর করতে সাহায্য করে। বিভিন্ন খাবারের সাথে সরষে যোগ করা হয় যাতে সেইসব খাবার পেটে গ্যাস সৃষ্টি করতে না পারে। নজর রাখতে হবে নিজের খাওয়া-দাওয়ার প্রতি। জেনে নিতে হবে কোনটি খাওয়া উচিত হবে কোনটি হবে না।

 এলাচ: লবঙ্গের মত এলাচ গুঁড়ো খেলে অম্বল দূরে থাকে।

আমড়া: আমড়া টুকরো করে রোদে দিয়ে খান। এটি গ্যাসের খুব কাজে দেবে। পেটে গ্যাস ও বদহজমজনিত সমস্যা সমাধানে আদা খুব উপকারী।

ওপরের সমস্ত পদ্ধতি ঝামেলার মনে হলে শুধুমাত্র এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পান করুন। কখনোই রাতে পেট বা বুক ব্যথা করবে না।