ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

প্রচণ্ড শীতে যেভাবে বাঁচে গাছ ও প্রাণী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:৪৯ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার

খাবারের, পানির অভাব৷ তবুও প্রচণ্ড শীতে যেভাবে লড়াই করে বেঁচে থাকে বিভিন্ন গাছ ও প্রাণী…

বরফজমা জঙ্গল: তাপমাত্রার পারদ যত নীচের দিকে নামে, তত কমতে থাকে কোনো গাছের বেড়ে ওঠার ক্ষমতা৷ শক্তি সঞ্চয় করতে শুরু করে তারা৷ বরফজমা ঠান্ডা আবহাওয়ায় পানির অভাবও দেখা দেয়, কারণ, মাটি থেকে জমে যাওয়া পানি শুষে নিতে পারে না গাছের শিকড়৷ ফলে, শীতপ্রধান অঞ্চলের কোনিফার প্রজাতির গাছ, যার মধ্যে পাইনগাছও পড়ে, তাদের পাতার ওপর এক ধরনের মোমের মতো আস্তরণ তৈরি করে, যাতে করে পানি বেশি খরচ না হয়৷

পাতা ঝরানোর মৌসুম: কোনিফার গাছের পাতায় মোমের আস্তরণ৷ কিন্তু সব গাছ একরকম নয়৷ বেশ কিছু গাছ পানির ব্যবহার কমাতে পাতা ঝরিয়ে দেয় শীতকালে৷ কিছু কিছু গাছ তো তাদের শরীরের ভেতর বিশেষ চিনি তৈরি করতে পারে, যার সাহায্যে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয় তারা৷

ভাঁড়ার মজুত: শুধু গাছ কেন, শীতকাল বেশ কিছু্ প্রাণীর জন্যেও লড়াই করে বেঁচে থাকার সময়৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে পিকা নামের একটি প্রাণীকে৷ উত্তর আমেরিকা, এশিয়া ও ইউরোপের কিছু অঞ্চলে পাওয়া যায় তাদের৷ পিকা ও অন্য আরো কয়েকটি প্রজাতির প্রাণী শীত আসার আগে থেকেই খাবার সঞ্চয় করতে থাকে, যাতে করে ঠান্ডার দিনগুলি অভুক্ত থাকতে না হয়৷

পশমের জামা গায়ে: শীতকালে মানুষ ঠান্ডা থেকে বাঁচতে গায়ে সোয়েটার, কোট চাপায়৷ আর বিশেষ কিছু শেয়াল ও ভালুক গায়ে চাপায় অতিরিক্ত চর্বি আর ভারী পশম৷ আর্কটিক ফক্স পুরো শীতকালজুড়ে তার কালো পশম ঝেড়ে ফেলে৷ বদলে, তখন দেখা যায় মোটা সাদা পশম, যা শরীরকে অতিরিক্ত ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা করে৷

টানা ঘুম: মাটিতে দীর্ঘ সুড়ঙ্গ খুঁড়ে তাতে ঢুকে গোটা শীতকাল টানা ঘুম দিয়েই কাটিয়ে দিতে পছন্দ করে বেশ কিছু প্রাণী৷ এই ঘুমকে বিজ্ঞানীরা বলেন ‘হাইবারনেশন’ বা শীতনিদ্রা৷ দীর্ঘ ঘুমের সময় হৃৎপিণ্ডের কম্পনকে একদম ঢিমে করে ফেলে তারা, যাতে করে শক্তি সঞ্চয় হয়৷

অক্সিজেন ছাড়া বেঁচে থাকা: পেইন্টেড টার্টল নামের কচ্ছপ শীত কাটায় পুকুরের পানির তলায়৷ মাঝে মাঝে অক্সিজেন নিতে ওপরে উঠলেও, বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন যে, শীতের মাত্রা বাড়লে তারা একবারে অনেকটা অক্সিজেন শরীরে জমিয়ে নিতে পারে৷ ফলে, দীর্ঘ সময় অক্সিজেন না নিয়েই পানিতে থাকতে পারে তারা৷ 

পোকামাকড় যা করে: বেশির ভাগ পোকামাকড়ের শরীরের বেশির ভাগটাই থাকে পানি৷ শীতের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে কিছু পোকামাকড় এক ধরনের বিশেষ ‘অ্যান্টিফ্রিজ’ বা বরফরোধ করে এমন পদার্থ তৈরি করে৷ গবেষণা বলছে, আগুনরঙা গুবরেপোকা মাইনাস ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের শীতেও এভাবেই নিজেকে বাঁচায়৷

অন্ধকারে বেঁচে থাকা: আন্টার্কটিকার ভয়াবহ শীতে খোলা জায়গায় প্রায় কোনো প্রাণীই বেঁচে থাকতে পারে না৷ কিন্তু এক ধরনের আগাছা সূর্যের আলোহীন শীতকাল কাটায় একেবারে মাটির সাথে মিশে গিয়ে৷ এতে করে তীব্র বাতাস ও বরফ, কোনোকিছুই হার মানাতে পারে না তাকে৷ পরে বসন্তকালে সূর্যের দেখা পেলে আবার নতুন করে সোজা হয়ে ওঠে এই ধরনের আগাছা৷ সূত্র: ডয়েচে ভেলে

এসি