ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

যশোরে নতুন যাচাই বাছাইয়ের আওতায় ২৪৯ মুক্তিযোদ্ধা

যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৪:৪০ পিএম, ১৭ জানুয়ারি ২০২১ রবিবার

যশোর সদর উপজেলার গেজেটভূক্ত ২৪৯ জন মুক্তিযোদ্ধাকে নতুন করে যাচাই-বাছাইয়ের আওতায় আনা হয়েছে। এদের মধ্যে চূড়ান্ত বাছাইয়ের কার্যক্রম শুরু হবে আগামী ৩০ জানুয়ারি। তবে ‘উৎরে দেবেন’ এমন আশ্বাস দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ায় সক্রিয় হয়েছে একাধিক প্রতারক চক্র।

২০১০ সাল পর্যন্ত যেসব মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভূক্ত হয়েছেন তারা রয়েছেন এই তালিকায়। তবে, ওই তালিকার মধ্যে যাদের নাম ভারতীয় মুক্তি বার্তায় থাকবে, তাদের যাচাই করা হবে না।

মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় নির্দেশিত ৩৩ প্রকার প্রমাণের মধ্যে একটি প্রমাণ যথাযথ উপস্থাপন করতে পারলে তাকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বলে ধরে নেয়া হবে। উপজেলা পর্যায়ে আগামী ৩০ জানুয়ারি এই যাচাই বাছাই কার্যক্রম শুরু হবে। আর এ লক্ষে কাগজপত্রে ত্রুটি আছে এমন মুক্তিযোদ্ধাদের ‘উৎরে দেবেন’ এমন আশ্বাস দিয়ে একাধিক প্রতারক চক্র মাঠে নেমেছে।

যশোর জেলা প্রশাসন ও সদর উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, ২০১০ সালের আগ পর্যন্ত যেসব মুক্তিযোদ্ধা গেজেটভূক্ত হয়েছেন তাদের ব্যাপারে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল জামুকার পক্ষে নানা তথ্য দেয়া হয় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে।  জামুকার চিঠি চালাচালির এক পর্যায়ে যশোর সদর উপজেলার গেজেটভূক্ত ২৪৯ জন মুক্তিযোদ্ধাকে যাচাই বাছাই তালিকায় আনা হচ্ছে। এ সংক্রান্ত একাধিক পত্র এসেছে যশোরের জেলা প্রশাসক ও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে।

ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ২৪৯ জন মুক্তিযোদ্ধার কাছে এই মেসেজ পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান জানান, যাচাই বাছাই সংক্রান্ত মন্ত্রণালয় থেকে তার কার্যালয়ে একাধিক পত্র ও নির্দেশনা এসেছে। স্বচ্ছতার সাথে যাচাই কার্যক্রম এগুবে। এ ব্যাপারে কমিটির রূপরেখাও এসেছে। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিত বিধি মোতাবেক যাচাই কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

যশোর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জানান, মূলত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের প্রস্তাবনার কারণেই নতুন করে যাচাই বাছাই শুরু হচ্ছে। তবে সংখ্যায় ২৪৯ জন হলেও যেসব মুক্তিযোদ্ধার ভারতীয় মুক্তি বার্তায় নাম আছে তাদের যাচাইয়ের আওতায় আনা হবে না। 

তিনি আরও জানান, এ ব্যাপারে কমিটি করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে থেকে একজনকে সভাপতি মনোনীত করে নাম দেবে যাচাই বাছাই কমিটিতে। এছাড়া ৩৩ প্রকার প্রমাণের মধ্যে একটি স্বচ্ছতার সাথে উপস্থাপন করতে পারলে সেই মুক্তিযোদ্ধাকে প্রকৃত বলে ধরে নেয়া হবে এমন নির্দেশনা এসেছে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে। সব মিলিয়ে আগামী ৩০ জানুয়ারি কার্যক্রম শুরু হবে। একদিনে শেষ না হলে ৩১ জানুয়ারি যাচাইয়ের কাজ করা হবে।

অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই পত্র যশোরে আসার পর একটি প্রতারক চক্র মাঠে নেমেছে। কাগজপত্রে ত্রুটি আছে এমন মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে টাকা সংগ্রহ করছে ওই চক্রটি। এছাড়া যশোর শহরের দড়াটানা এলাকার একটি হোটেলে বসে দুটি চক্র মুক্তিযোদ্ধাদের ডেকে এনে অর্থ বাণিজ্য করছে। 

জামুকা ও যাচাই বাছাই কমিটি ম্যানেজ করার কথা বলে তারা মিথ্যাচার করছে। আর হাতিয়ে নিচ্ছে ৫০ হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত। মিথ্যা স্বাক্ষী দিলে ছয় মাসের ভাতা বন্ধ হওয়ার কথা বলে তারা ভয় দেখাচ্ছে। স্বাক্ষী দিয়ে দেয়ার কথা বলেও টাকা হাতানো হচ্ছে বলে সূত্রটি জানায়। 

এএইচ/