ঢাকা, বুধবার   ১১ ডিসেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ২৬ ১৪৩১

জমে উঠল ব্রিসবেন টেস্ট

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:৫৩ পিএম, ১৮ জানুয়ারি ২০২১ সোমবার | আপডেট: ০৭:২৬ পিএম, ১৮ জানুয়ারি ২০২১ সোমবার

ক্যারিয়ারের তৃতীয় ম্যাচেই ৫ উইকেট শিকার সিরাজের।

ক্যারিয়ারের তৃতীয় ম্যাচেই ৫ উইকেট শিকার সিরাজের।

দারুণভাবে জমে গেল ব্রিসবেন টেস্ট। টেস্টটি জিততে পঞ্চম ও শেষ দিনে ভারতকে তুলতে হবে ৩২৪ রান। আর অস্ট্রেলিয়ার চাই ১০ উইকেট। তাই জয়-হার অথবা ড্র, যে কোনও নাটকীয়তার সামনে দাঁড়িয়ে সিরিজের চতুর্থ ও শেষ টেস্টটি।

ভারতের দুই পেসার মোহাম্মদ সিরাজ ও শারদুল ঠাকুরের বোলিং নৈপুন্যে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৯৪ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। ফলে ভারতকে জয়ের জন্য ৩২৮ রানের টার্গেট ছুঁড়ে দিতে পারে অজিরা। জবাবে বৃষ্টির কারণে খেলা আগেভাগে শেষ হওয়ার আগে ১১ বলে বিনা উইকেটে ৪ রান করে ভারত। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া ৩৬৯ ও ভারত ৩৩৬ রান করেছিলো।

প্রথম ইনিংস থেকে বড় লিড নিতে না পারলেও, ৩৩ রানে এগিয়ে থেকে তৃতীয় দিনই নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। ৬ ওভারে বিনা উইকেটে ২১ রান করেছিলো অসিরা। ডেভিড ওয়ার্নার ২০ ও মার্কাস হ্যারিস ১ রানে অপরাজিত ছিলেন।

চতুর্থ দিনের শুরু থেকে ভারতের বোলারদের বিপক্ষে আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকেন অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার ওয়ার্নার ও হ্যারিস। এ জুটির নৈপুন্যে দলের স্কোর হাফ-সেঞ্চুরির পর সেঞ্চুরির দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিলো।

তবে ওয়ার্নার-হ্যারিসকে জুটিকে তিন অংকে পৌঁছাতে দেননি ঠাকুর। ২৫তম ওভারের শেষ বলে দলীয় ৮৯ রানে অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী ভাঙ্গেন ঠাকুর। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ৩৮ রানে আউট হন হ্যারিস। ৮২ বলে ৮টি চার মারেন তিনি।

পরের ওভারে ওয়ার্নারের বিদায়ও নিশ্চিত করেন ভারতের স্পিনার ওয়াশিংটন সুন্দর। লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ার আগে ৭৫ বল খেলে ৬ বাউন্ডারিতে ৪৮ রান করেন ওয়ার্নার।

৯১ রানে দুই ওপেনারকে হারানোর পর বড় জুটির আশায় ছিলো অস্ট্রেলিয়া। প্রতিপক্ষের সেই আশাতে পানি ঢেলে দেন ভারতের পেসার সিরাজ। মার্নাস লাবুশেনকে ২৫ ও ম্যাথু ওয়েডকে খালি হাতে ফেরান সিরাজ। এমন অবস্থায় ৪ উইকেটে ১৪৯ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যায় অস্ট্রেলিয়া।

দুর্দান্ত শুরুর পরও ৩৪ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া অস্ট্রেলিয়াকে খেলায় ফেরানোর চেষ্টা করেন সাবেক অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ ও ক্যামেরুন গ্রিন।

তবে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর দুইশ-তে পা দেয়ার আগেই ভারতকে খেলায় ফেরানোর পথ তৈরি করেন সিরাজ। টেস্ট ক্যারিয়ারের ৩১তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেয়া স্মিথকে বিদায় দেন সিরাজ। ফলে গ্রিনের সাথে স্মিথের গড়ে উঠা দায়িত্বশীল জুটিটি ৭৩ রানেই থেমে যায়। দু’জনে ১৪২টি বল খেলেছেন। ৭৪ বলে ৭টি চারে ৫৫ রান করেন স্মিথ।

স্মিথের বিদায়ের পর অস্ট্রেলিয়ার স্বীকৃত শেষ দুই ব্যাটসম্যানকে বড় ইনিংস খেলতে দেননি ঠাকুর। গ্রিন ৩৭ ও অধিনায়ক টিম পাইন ২৭ রান করে ঠাকুরের শিকার হন। আর মিচেল স্টার্ককে ১ রানে থামিয়ে ইনিংসে চতুর্থ উইকেট তুলে নেন সিরাজ। ২৪৭ রানে অষ্টম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। তাই অস্ট্রেলিয়ার শেষ ২ উইকেট দ্রুত তুলে নিয়ে ৩শর নীচে টার্গেট পাবার আশায় ছিলো ভারত।

কিন্তু শেষ ২ উইকেটে ৪৭ রান যোগ করেন প্যাট কামিন্স-নাথান লিঁও ও জশ হ্যাজেলউড। নবম উইকেটে লিঁওর সাথে ৩০ বলে ২৭ ও শেষ উইকেটে হ্যাজেলউডকে নিয়ে ২৩ বলে ২০ রান দলকে এনে দেন কামিন্স। লিঁওকে ১৩ রানে ঠাকুর ও হ্যাজেলউডকে ৯ রানে আউট করেন সিরাজ।

হ্যাজেলউডকে শিকার করে ইনিংসে ৫ উইকেট নেয়ার স্বাদ পান সফরচলাকালীন বাবাকে হারানো সিরাজ। এই সিরিজে অভিষেক হওয়া সিরাজ টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় ম্যাচেই ৫ উইকেট শিকার করলেন । ১৯ দশমিক ৫ ওভারে ৭৩ রানে ৫ উইকেট নেন তিনি। ভারতের পঞ্চম বোলার হিসেবে এই ভেন্যুতে ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেন সিরাজ। এর আগে এরাপল্লি প্রসন্ন, বিষেণ সিংহ বেদি, মদন লাল, জহির খান এই ভেন্যুতে ৫ উইকেট নেয়ার স্বাদ পেয়েছিলেন।

দিনের শেষ সেশনে খেলতে নেমে মাত্র ১১ বল খেলতে পারে ভারত। বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হয় দিনের খেলা। রোহিত শর্মা ৪ ও শুভমান গিল রান না করে দিন শেষ করেছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া: ৩৬৯ ও ২৯৪/১০, ৭৫.৫ ওভার (স্মিথ ৫৫, ওয়ার্নার ৪৮, সিরাজ ৫/৭৩)।
ভারত: ৩৩৬ ও ৪/০, ১.৫ ওভার (রোহিত ৪*, গিল ০)।

এনএস/