ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামছে বাংলাদেশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:৫৪ পিএম, ১৯ জানুয়ারি ২০২১ মঙ্গলবার

করোনার কারণে দীর্ঘ বিরতির পর অবশেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। সেরা ১২ খেলোয়াড়কে ছাড়াই সফরে আসা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে নিজেদের মেলে ধরার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবে টাইগাররা।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে। দর্শকশূন্য মাঠে ম্যাচটি শুরু হবে সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে। যা সরাসরি দেখাবে বিটিভি, টি-স্পোর্টস ও নাগরিক টিভি। করোনার কারণে নতুন জৈব-সুরক্ষা পরিবেশে সিরিজটি খেলবে দু’দলের ক্রিকেটাররা।

এদিকে, করোনাভীতিতে বাংলাদেশ সফরে আসেননি টেস্ট অধিনায়ক জেসন হোল্ডার ও ওয়ানডে অধিনায়ক কাইরন পোলার্ডসহ ১০ জন খেলোয়াড়। এছাড়া ব্যক্তিগত কারণে আরও দু’জন ক্রিকেটার সফর থেকে নাম প্রত্যাহার করায় অনেকটা দুর্বল দল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে ক্যারিবিয়রা।

তারপরও সিরিজটি আইসিসি বিশ্বকাপ সুপার লিগের অংশ হওয়াতে আত্মতুষ্টিতে ভুগছে না বাংলাদেশ। কারণ ২০২৩ বিশ্বকাপে সরাসরি খেলতে হলে, ভারত বাদে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষ সাতের মধ্যে থাকতে হবে তামিম-সাকিবদের।

গত বছর শুরু হওয়া সুপার লিগ পর্বে প্রতিটি দলকে হোম ও অ্যাওয়ে ভিত্তিতে চারটি করে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলতে হবে। সুপার লিগে একটি ম্যাচ জিতলে ১০ পয়েন্ট, ম্যাচ টাই/পরিত্যক্ত/বাতিলের জন্য পাঁচ পয়েন্ট করে এবং হারের জন্য কোনও পয়েন্ট পাওয়া যাবে না। পয়েন্টের ভিত্তিতে র‌্যাংকিং নির্ধারিত হবে। সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে না পারা দলকে ২০২৩ সালের জুন-জুলাইয়ে বাছাই পর্ব খেলতে হবে।

ওয়ানডে রেকর্ডের ভিত্তিতে যেহেতু পয়েন্ট অর্জন করা কঠিন, তাই ঘরের মাঠে সিরিজগুলোতে ভালো ফল করে সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার পথ সহজ করতে চায় বাংলাদেশ দল।

সিরিজে প্রত্যকটি পয়েন্টই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে দলের প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য অনেক বড় সিরিজ। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের পয়েন্টগুলো অর্জন করতে হবে। সত্যিকারার্থেই আমাদের শুরুটা ভাল করা নিশ্চিত করতে চাই । আমরা অবশ্যই ম্যাচ বাই ম্যাচ নিয়ে চিন্তা করব। আমরা ভালোভাবে সিরিজ শুরু করতে চাই।’

বাংলাদেশ-উইন্ডিজ ইতোমধ্যে ৩৮টি ওয়ানতে মুখোমুখি হয়েছে। এরমধ্যে বাংলাদেশ ১৫টি ও ক্যারিবীয়ানরা ২১টিতে জয় পেয়েছে। দু’টি ম্যাচে কোনও ফল আসেনি। তবে সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছে বাংলাদেশ।

২০১৮ সালে ঘরের মাঠে পূর্ণশক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয় পেয়েছিলো বাংলাদেশ।

নিজেদের কন্ডিশনে এবার তাই ফেভারিটের তকমা নিয়েই সিরিজ শুরু করছে বাংলাদেশ। তবে ফেভারিট হলেও সর্তক থাকবে টাইগাররা। দলের মূল চ্যালেঞ্জটি হলো গেল ১০ মাস ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে থাকার পর মাঠে ফিরে মানিয়ে নেয়াটা।

করোনা বিরতির পর আন্তর্জাদিক ক্রিকেটে ফিরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইতোমধ্যে তিনটি সিরিজ খেলে ফেলেছে। তবে সে সব সিরিজে তাদের সব খেলোয়াড় অংশ নেয়নি।

বিশেষজ্ঞদের মতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে অনেক অপরিচিত খেলোয়াড় থাকায় ও তাদের খেলার ধরণ সর্ম্পকে ধারনা কম থাকায় প্রতিপক্ষকে নিয়ে পরিকল্পনা করতে বেশ বেগ পেতে হবে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টকে।

তবে প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গোর দাবি, টিম পারফরমেন্স অ্যানালিস্ট শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরণ প্রতিপক্ষকে ইতোমধ্যে পর্যালোচনা করছেন।

ডোমিঙ্গো বলেন, ‘শ্রী আমাদের জন্য অনেক ভালো কিছু কাজ করেছে। সিপিএল ও ঘরোয়া টুর্নামেন্ট থেকে সকল খেলোয়াড়ের খেলার ফুটেজ পেয়েছেন এবং ক্লিপগুলো সংগ্রহ করেছেন সে।’

ফুটেজগুলো দেখার পর ডোমিঙ্গো জানান, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হালকাভাবে নিলে বড় ধরনের ভুল করবে বাংলাদেশ। তার মতে, ২০২৩ বিশ্বকাপের মতো মেগা আসরে একটি স্থিতিশীল দলের জন্য এই সিরিজটি সিরিজটি প্রথম ধাপ।

তবে আশা ছাড়তে রাজি নয় ওয়েস্ট ইন্ডিজও। আশা ছাড়তে চাইছে না তারা। ক্যারিবীয়দের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদ বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য, অবশ্যই সিরিজ জয়। ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলা ও আমরা যে ফলটি আশা করছি, তা অর্জন করতে চাই।’

তবে দলের উপর আস্থা আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ক্যারিবিয় অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদ বলেছেন, ‘অবশ্যই আমাদের লক্ষ্য সিরিজ জয়। কাঙ্খিত ফল পেতে আমাদের ধারাবাহিক ক্রিকেট খেলতে হবে’।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স জানান, সিরিজে তার দল আন্ডারডগ হিসেবে খেলবে, আর এটিই তাদের মনোবলকে বাড়িয়ে দিবে।

তিনি বলেন, ‘নতুন খেলোয়াড়রা তাদের প্রমাণ করতে প্রস্তুত। আমি তাদের চোখে প্রবল আকাঙ্খা দেখেছি। তারা সবাই আমাকে মুগ্ধ করেছে। তবে এখানে আন্ডাডগ হওয়াতেই আমাদের মনোবল বাড়াচ্ছে।’

এনএস/