ঢাকা, রবিবার   ১৯ মে ২০২৪,   জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণের সর্বনিম্ন রেকর্ড

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০২:১০ পিএম, ৩০ জানুয়ারি ২০২১ শনিবার

চট্টগ্রামে তিন মাসের মধ্যে করোনাভাইরাসের সর্বনিম্ন সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণ হারও করোনাকালের সর্বনিম্ন রেকর্ড হয়। কোনো রোগীরও মৃত্যু হয়নি।

গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৩১০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩২ জন পজিটিভ চিহ্নিত হন। সংক্রমণ হার ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ। সংখ্যার ক্ষেত্রে সর্বশেষ ৩২ জনের নমুনায় ভাইরাস শনাক্ত হয় ৩১ অক্টোবর ৭১৯ জনের নমুনা পরীক্ষায়। সংক্রমণ হার ছিল ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ। করোনায় আক্রান্ত একজনের মৃত্যু হয়। গতকালের আগে করোনাকালের সর্বনিম্ন সংক্রমণ হার ছিল ১৩ জানুয়ারি ২ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এদিন ৫৩ জন ১ হাজার ৭৯৩ জনের নমুনা পরীক্ষার করা হলে ৫৩ জন পজিটিভ চিহ্নিত হন।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর ছয়টি ও কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে শুক্রবার চট্টগ্রামের ১ হাজার ৩১০ জনের নমুনার ৩২টিতে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৩০ জন ও দুই উপজেলার ২ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে হাটহাজারী ও সীতাকুন্ডে ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৩২ হাজার ৮৮১ জন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৩২ হাজার ৯১৩ জন ও গ্রামের ৭ হাজার ২১১ জন।

গতকাল করোনাক্রান্ত কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। ফলে মৃতের সংখ্যা ৩৬৯ জনই রয়েছে। এতে শহরের বাসিন্দা ২৬৮ জন ও গ্রামের ১০১ জন। সুস্থ্যতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ৪১ জন। মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৩০ হাজার ৭১৫ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ১৯২ জন এবং বাসা থেকে ২৬ হাজার ৫২৩ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ৮ জন । ছাড়পত্র নেন ২০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৩১৭ জন।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের বাহক সংখ্যা একটানা সপ্তদশ দিনের মতো একশ’র নিচে এবং টানা চারদিন পঞ্চাশের নিচে থাকলো। সর্বশেষ একশ’র বেশি করোনাভাইরাসবাহক শনাক্ত হয় ১২ জানুয়ারি। সেদিন ২ রোগীর মৃত্যু হয়। সংক্রমণের হার ছিল ১০ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। গত পাঁচদিন করোনায় আক্রান্ত কারো মৃত্যু হয়নি।

সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বাসস’কে বলেন, ‘গত এক মাস ধরে করোনার সংক্রমণ হার স্বস্তিদায়ক। বিশেষ করে সর্বশেষ ১৭ দিন শনাক্তের সংখ্যা একশ’র নিচে এবং চারদিন পঞ্চাশের নিচে রয়েছে। গতকালের সংখ্যা, হারসহ সবকিছুই ইতিবাচক। চট্টগ্রামে করোনা পরীক্ষার কাঠামো ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এর চেয়ে ভালো রেজাল্ট পাওয়া যায়নি।’

তিনি বলেন, ‘মানুষের সচেতনতার অভাবে প্রথমদিকে সামান্য কয়েকটা নমুনা পরীক্ষার জন্য আসতো। এ সময় যেহেতু পরীক্ষা কম হতো, শনাক্তের সংখ্যাও কম ছিল। তবে হার বেশি থাকতো।’ সিভিল সার্জন আশা প্রকাশ করেন, সংক্রমণ হ্রাসের এ ধারা অব্যাহত থাকার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ করোনামুক্ত হবে। তিনি এ জন্য স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে বর্তমান সচেতনতা অব্যাহত রাখতে সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান।

গতকালের ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৭২৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ১৭৩ জনের নমুনার মধ্যে ১৭ জন করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হন। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ৫০টি নমুনার সবক’টিরই রেজাল্ট নেগেটিভ আসে।

বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি শেভরনে ২০১টি নমুনা পরীক্ষায় ২টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৭৯টি নমুনায় ১০টি এবং মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ১০টি নমুনার মধ্যে ২টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।

চট্টগ্রামের ৭০ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। এতে একটিরও ফল পজিটিভ আসেনি।

নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে এদিন কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।

ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ হার পাওয়া যায়, বিআইটিআইডি’তে ০ দশমিক ১৪ শতাংশ, চমেকে ৯ দশমিক ৮৩, সিভাসু’তে ০ শতাংশ, শেভরনে ০ দশশিক ৯৯, ইম্পেরিয়ালে ১২ দশমিক ৬৬ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ২০ শতাংশ।
সূত্র : বাসস
এসএ/