ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

ভাষা শহীদদের প্রতি ছাত্রলীগের শ্রদ্ধা নিবেদন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:০৮ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ রবিবার

একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে ছাত্রলীগ।

এদিন সকালে ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী কালো ব্যাজ ধারণ করে প্রভাতফেরী সহকারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। রাজধানীর নিউ মার্কেটের দক্ষিণ গেট থেকে প্রভাতফেরী শুরু করে শহীদ মিনারে যান ছাত্রলীগের নেতকর্মীরা।

এ সময় ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি’ গানের সুর বাজতে থাকে। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয় এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ছাত্রলীগ সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবসে সকল ভাষা শহীদদের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির চির প্রেরণার প্রতীক। একুশে ফেব্রুয়ারির রক্তঝরা পথ বেয়েই শৃঙ্খলমুক্ত হয়েছিল দুঃখিনী বর্ণমালা, মায়ের ভাষা। এদিন মাতৃভাষার মর্যাদা রাখতে গিয়ে বুকের রক্ত ঢেলে বাঙালি জাতি যে ইতিহাস রচনা করেছিল, তা শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্ব তাকে বরণ করেছে সুগভীর শ্রদ্ধায়। সেদিন রক্তে কেবল ভাষার অধিকার অর্জিত হয়নি, স্বাধীনতার বীজও রোপিত হয়েছিল। যার ফল আসে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন।’

সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রক্তাক্ত ত্যাগের মহিমায় বাঙালি জাতি খুঁজে পায় তার নিজস্ব জাতিসত্তা, স্বকীয়তা ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য। এদিন মায়ের ভাষার অধিকারের জন্য নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন বাঙালি জাতির সূর্য সন্তানেরা। অমর একুশের পথ ধরেই উন্মেষ ঘটেছিল বাঙালির স্বাধিকার চেতনার। অমর একুশের অবিনাশী চেতনাই আমাদের যুগিয়েছে অফুরন্ত প্রেরণা ও অসীম সাহস এবং বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের যে সংগ্রামের সূচনা সেদিন ঘটেছিল, ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় পথ বেয়ে, স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মধ্য দিয়ে তা চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে।’

রক্তস্নাত সেই অমর একুশে ফেব্রুয়ারি আজ। বাঙালি জাতির শোকের ও গৌরবের দিন। রক্তের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। দিবসটি আজ শুধু বাঙালির নয়, পৃথিবীর সব ভাষাভাষী মানুষের। পৃথিবীর কয়েক হাজার ভাষাভাষী মানুষও দিনটি শ্রদ্ধাভরে পালন করছেন। কিন্তু বাংলাদেশের কাছে এর আবেদন অন্যরকম। রক্তস্নানের মধ্য দিয়ে ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দিন।

ভাষা আন্দোলন দমন করতে ১৯৫২ সালের আজকের এই দিনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল করেন। সেই মিছিলে গুলি চলে। গুলিতে শহীদ হন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার। তাঁদের স্মরণেই দেশবাসী এই শহীদ মিনারের সামনে এসে বিনম্র শ্রদ্ধা জানায়। শ্রদ্ধা-ভালোবাসার ফুলে ছেয়ে যায় মিনারের বেদি।

এনএস/