ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৫ ১৪৩১

ভিসি শুন্য হাবিপ্রবি: প্রশাসনিক কাজে বাড়ছে স্থবিরতা  

আব্দুল মান্নান, হাবিপ্রবি:

প্রকাশিত : ০৯:২২ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সোমবার

ভাইস চ্যান্সেলর শুন্য হয়ে পড়েছে দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)। এতে ব্যাহত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। দ্রুত ভিসি ও প্রো-ভিসি পদে নিয়োগ দিয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এর আগে, গত ২ ফেব্রুয়ারি  বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ উপাচার্য প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম এর চার বছর মেয়াদ পূর্ণ হয়। এরপর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদটি শূন্য রয়েছে। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ২১ বছর হলেও  এখনো প্রো-ভাইস চান্সেলর পদ শূন্য। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে ভিসির পদ শুন্য ও প্রো-ভিসি না থাকায় ‘চেইন অব কমান্ড’ ভেঙে পড়েছে। সেই সাথে স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের দফতরগুলোও।

জানা যায়, বিগত ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি  বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ  বিভাগের অধ্যাপক ড. মু. আবুল কাসেম কে চারবছরের জন্য হাবিপ্রবি’র ষষ্ঠ ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। গত ২ ফেব্রুয়ারি  তার মেয়াদ শেষ হয়। তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৯দিন আগেই আন্দোলনের মুখে রাতের আধারে স্বস্ত্রীক ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন উপাচার্য। এ সময় তিনি ট্রেজারার অধ্যাপক ড.বিধান চন্দ্র হালদার কে রুটিন দায়িত্ব পালনের কথা জানিয়ে চিঠি দেন। কিন্তু ২ ফেব্রুয়ারি আদেশ অনুসারে রুটিন দায়িত্বও শেষ হয়ে যায়। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় নতুন করে কাউকে রুটিন দায়িত্ব না দেওয়ায় ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব পালনেও কেউ থাকছে না। 

এদিকে, বিগত ২০দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন উপাচার্য না থাকায় পরীক্ষার ফল প্রকাশ, মূল সনদপত্র উত্তোলন, অর্থ সংক্রান্ত অনুমোদন, একাডেমিক সভা, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের পদোন্নতি, বেতন ভাতা ও ঋণ পাস, বিদেশ গমন, বিভিন্ন সভা-সেমিনার আয়োজন, নিয়োগসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজ এ কারণে বন্ধ রয়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন  শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তাসহ সকলেই। সেই সাথে বাড়ছে নানাবিধ জটিলতা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক বলেন, ‘ভাইস চ্যান্সেলর হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক। দীর্ঘদিন এ অবস্থায় থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে যেতে পারে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. খালেদ হোসেন বলেন, ‘ভাইস চ্যান্সেলর না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। দীর্ঘদিন ভিসিবিহীন অবস্থায় চললে বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা সংকট তৈরি হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড.ইমরান পারভেজ জানান, সদ্য বিদায়ী ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম স্যার বিগত ১৮-০৩-২০২০ ইং তারিখ হইতে ১৩-০১-২০২১ ইং পযন্ত মোট ৯ মাস ২৫ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত বাসভবন থেকে এক মূর্হুতের জন্যও বের হননি। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে স্থবিরতা বিরাজ করছিল। তিনি দীর্ঘদিন বাসায় অবস্থান শেষে গত ১৩ জানুয়ারী/২০২১ খ্রী তারিখে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন এবং মেয়াদের বাকী ১৮ দিন ঢাকায় নিজ বাসভবনে বসে কাটিয়ে দিলে করোনাকালে আটকে যাওয়া বিভিন্ন শিক্ষা-বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষা গ্রহণ,  বিশ্ববিদ্যালয়ের  শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের নিয়মিত প্রমোশন- আপগ্রেডশন, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর এ প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পরীক্ষা গ্রহণ, মাস্টাররোল শ্রমিকদের নিয়মিত করণসহ নানামূখী কাজ আটকা পড়ে যায়। তদুপরি প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে ভিসি শুন্য অবস্থায় অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত কাউকে রুটিন দায়িত্বও প্রদান না করার ফলে দীর্ঘায়িত হচ্ছে নানমুখী কাজের চাপ। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের দায়িত্বে থাকা মেডিসিন, সার্জারি এন্ড অবস্টেট্রিক্স বিভাগের অধ্যাপক বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা.মো.ফজলুল হক জানান, আমরা আশা করছি অতি দ্রুত ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ হবে। ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ হয়ে গেলে পরীক্ষা ও অন্যান্য শিক্ষা কার্যক্রমকে বিশ্বদ্যালয়ের নির্ধারিত একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সম্পন্ন করতে কোনও বাধা থাকবে না।

আরকে//