ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

জনসনের এক ডোজের টিকা অনুমোদন দিল যুক্তরাষ্ট্র

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:০৩ এএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ রবিবার

করোনা প্রতিরোধে তৃতীয় কোন ভ্যাক্সিন হিসেবে বেলজিয়ামের আবিষ্কৃত জনসনের টিকা অনুমোদন দিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে ফাইজার-বায়োনটেকের টিকা অনুমোদন দিয়েছে করোনায় সর্বোচ্চ ক্ষতিগ্রস্ত দেশটি। খবর বিবিসির। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বেলজিয়ামের জনসেন কোম্পানি এক ডোজের এই টিকা উৎপাদন করেছে। আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রে জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা পাওয়া যাবে। জুনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে তারা ১০০ মিলিয়ন টিকা দেবে বলে কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসন অ্যান্ড জনসন কোম্পানির তৈরি এক ডোজের ভ্যাকসিন নিরাপদ ও কার্যকর। অন্য টিকার মতো জনসনের টিকায় দুটি ডোজ নেয়ার প্রয়োজন হয় না।

নিয়ন্ত্রকদের এই স্বীকৃতির তিন দিনের মাথায় ভ্যাক্সিনটি অনুমোদন দিল বাইডেনের দেশ। যা সে দেশে অনুমোদন পাওয়া কোভিড-১৯ এর তৃতীয় ভ্যাকসিন এবং ফাইজার ও মডার্নার টিকার অর্থ-সাশ্রয়ী বিকল্প।

জনসনের এই টিকা রেফ্রিজারেটরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যাবে। কোন ফ্রিজারের প্রয়োজন পড়বে না। মানব দেহের ওপর জনসনের এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষায় দেখা গেছে, এটি সার্বিকভাবে করোনার বিরুদ্ধে ৬৬% কার্যকর। ব্রিটেন, ইইউ এবং কানাডাও এই টিকা কেনার অর্ডার দিয়েছে। দরিদ্র দেশগুলোর সহায়তায় জনসন কোভ্যাক্স কর্মসূচির আওতায় ৫০ কোটি ডোজ টিকা সরবরাহ করবে।

যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন এফডিএ তাদের কাছে জনসন অ্যান্ড জনসনের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান জ্যানসেনের দাখিল করা তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করেছে যেখানে মানবদেহের ওপর তাদের টিকার কার্যকারিতার পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।

পর্যালোচনা শেষে এই টিকার কার্যকারিতা সম্পর্কে এফডিএ বলছে, কোভিড-১৯ এর উপসর্গ-যুক্ত অসুস্থতা এবং গুরুতর অসুস্থতা - এই দুই ক্ষেত্রেই জনসনের টিকা কার্যকর দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ব্রাজিলে মানব দেহের ওপর জনসনের টিকার পরীক্ষায় দেখা গেছে, ভাইরাসের তীব্র সংক্রমণের বিরুদ্ধে এই ভ্যাকসিন ‘উচ্চমাত্রায় একই রকম’ কার্যকর।

কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলে কোভিডের নতুন ধরনের বিরুদ্ধে এটি কম কার্যকর বলে দেখা গেছে। তথ্য-উপাত্তে দেখা গেছে, গুরুতর অসুস্থতার ক্ষেত্রে জনসনের টিকা ৮৫ শতাংশেরও বেশি কার্যকর। তবে সার্বিকভাবে মধ্যম মাত্রার অসুস্থতার বিরুদ্ধে এটি ৬৬ শতাংশ কার্যকর।

ওষুধ বিশেষজ্ঞদের একটি কমিটি শুক্রবার এক বৈঠকে বসে জনসনের টিকার অনুমোদন দেয়া এফডিএর উচিত হবে কি না, সে বিষয়ে সুপারিশ করবে। হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা বলছেন, এফডিএ-র জরুরি অনুমোদন সাপেক্ষে আগামী সপ্তাহের মধ্যে জনসনের অন্তত তিন কোটি ডোজ টিকা বিতরণ করা যাবে বলে প্রশাসন আশা করছে।

জনসন অ্যান্ড জনসন বলেছে, মার্চ মাসের শেষ নাগাদ তারা দুই কোটি ডোজ টিকা সরবরাহ করার পরিকল্পনা করছে। এবং মার্কিন সরকারের সাথে চুক্তি মতো আগামী জুনের মধ্যে তারা ১০ কোটি ডোজ টিকা সরবরাহ করবে।

কোভিড-১৯ প্রতিরোধে যেখানে ফাইজার ও মডার্নার টিকায় দুটি ডোজের প্রয়োজন হয়, সেখানে জনসনের টিকা শুধু এক ডোজই লাগবে না বরং টিকাদানের জন্য রোগীদের জন্য কম অ্যাপয়েন্টমেন্টের প্রয়োজন হবে এবং কম সংখ্যক চিকিৎসাকর্মী লাগবে। 

এআই/