ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১০ ১৪৩১

একজন আদর্শ ডাক্তার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:৪৮ পিএম, ৫ মার্চ ২০২১ শুক্রবার

আপনি কী একজন শুদ্ধ মানুষ হতে চান? তাহলে পথ চলার ক্ষেত্রে কিছু শুদ্ধাচার মেনে চলুন। আর তা যদি আপনি পারেন, তবে দেখবেন চমৎকার এক জগতে প্রবেশ করেছেন। শুদ্ধ হওয়া বিষয়টি এমন নয় যে এটা আপনা আপনি হয়ে যায়। শুদ্ধ হওয়ার জন্যে আপনাকে এটা চর্চ্চা করতে হবে। এটা অনেকটা ভালো সঙ্গীত শিল্পী বা ক্রীড়াবিদ হয়ে উঠার মতোই। সাফল্যের জন্যে তাদেরকে যেমন চর্চ্চা করতে হয়, শুদ্ধা মানুষ হওয়ার ব্যাাপরেও আপনাকে সেটা করতে হবে।

একজন ডাক্তারের দৈনিক শুদ্ধাচার কেমন হওয়া উচিত তা জানবো আজ।

- সবসময় মনে রাখুন, পৃথিবীতে মানুষের সেবা করার সবচেয়ে ভালো পথ আপনি বেছে নিয়েছেন। তাই অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করে তোলার দায়িত্বকে পেশা বা জীবিকা নয়, মিশন হিসেবে গ্রহণ করুন।
দিন/রাতের হিসাব না করে চিকিৎসক হিসেবে রোগীর প্রয়োজনকে সর্বতোভাবে গুরুত্ব দিন। রোগীকে সাক্ষাৎ দেয়ার ক্ষেত্রে সময়ানুবর্তী হোন।
- রোগীর প্রতি মনোযোগ দিন। তাহলে আপনি শান্তি ও অর্থ দুটোই পাবেন।
- তাড়াহুড়ো নয়, মনোযোগ দিয়ে রোগ বা সমস্যার কথা শুনুন। রোগীর কথা পুরোপুরি শুনে প্রেসক্রিপশন লিখুন।
- রোগীকে ওষুধ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরামর্শ দেয়ার ক্ষেত্রে তার আর্থিক সামর্থ্যের কথা বিবেচনায় রাখুন।
- একসঙ্গে দুই/ তিন জন রোগীকে চেম্বারে ঢোকাবেন না। এতে রোগী ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সমস্যার কথা বলতে বিব্রত বোধ করেন।
- ফেসবুকিং/ মোবাইল স্ক্রিনে চোখ রেখে রোগীর কথা শোনা বা চিকিৎসা দেয়া থেকে বিরত থাকুন।
- যে কোম্পানির ওষুধ আপনি নিজের পরিবারের জন্যে পছন্দ করবেন, রোগীকে সেটিই প্রেসক্রাইব করুন। ওষুধ কোম্পানির কথায় প্রভাবিত না হয়ে নিজের কাছে সৎ থাকুন।
- কোনো ওষুধের সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা (যেমন মাথা ঘোরা, বমি বমি বা ঘুম ঘুম ভাব, ক্লান্ত লাগা ইত্যাদি) রোগী/ স্বজনকে জানান। যাতে ওষুধের প্রতিক্রিয়া দেখে ও অন্যদের মন্তব্য শুনে রোগী ভেবে না বসেন যে, ওষুধে কাজ হচ্ছে না বা এ ডাক্তার ভালো নয়।
- রোগীকে অপ্রয়োজনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা/অতিরিক্ত ওষুধ সেবন/সার্জারি ও লাইফ সাপোর্টের পরামর্শ দেয়া থেকে বিরত থাকুন।
- উদ্দেশ্যমূলকভাবে কাউকে সুবিধা দেয়ার জন্যে মেডিকেল রিপোর্ট বদলে দেয়াও অনৈতিক। এরকম পরিস্থিতিতে সততার পরিচয় দিন।
- আপনি বিশেষজ্ঞ নন এমন রোগের ক্ষেত্রে নিজে চিকিৎসা করবেন না। রোগীকে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের কাছে পাঠান।
- গ্রামে বা প্রত্যন্ত অঞ্চলে পোস্টিং/ট্রান্সফার হলে দায়সারাভাবে দায়িত্ব পালন, অনিয়মিত উপস্থিতি একটি গর্হিত কাজ।
- এলোপ্যাথি হোমিওপ্যাথি নেচারোপ্যাথি আয়ুর্বেদিক ইউনানী–পরস্পর পরস্পরকে একইভাবে সম্মান করুন। কেউ কাউকে হেয় করবেন না। কোনো রোগ এক পদ্ধতিতে ভালো না হলেও অন্য পদ্ধতিতে ভালো হতে পারে-বিষয়টিকে সহজভাবে নিন।
- ভিন্ন মাধ্যমে অথবা অন্য ডাক্তারের কাছে আরো ভালো চিকিৎসা হতে পারে-জানা থাকলে রোগীকে নি:সংকোচে বলুন।
- রোগীর ভয় ও দুশ্চিন্তা দূর করতে তাকে রোগ সম্পর্কে ধারণা দিন। সুস্থতার আশাবাদ ব্যক্ত করুন।
- ধূমপান ত্যাগ করুন। অন্তত রোগীর সামনে ধূমপান করবেন না।
- দুস্থ বঞ্চিত রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্যে নিয়মিত কিছুটা সময় ব্যয় করুন।
- যত ব্যস্তই থাকুন, পরিবার ও সন্তানকে সময় দেয়ার বিষয়টি উপেক্ষা করবেন না।
- স্ট্রেসমুক্তির জন্যে নিয়মিত মেডিটেশন ও ইয়োগা করুন। বাস্তব সামাজিক যোগাযোগ রক্ষার পাশাপাশি সেবামূলক কাজে সম্পৃক্ত থাকুন। রোগীকেও মেডিটেশনের পরামর্শ দিন।
এসএ/