ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

উৎসব-পার্বণ-বিশেষ দিবস পালন করবেন যেভাবে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:১৫ পিএম, ১৯ মার্চ ২০২১ শুক্রবার

আপনি কী একজন শুদ্ধ মানুষ হতে চান? তাহলে পথ চলার ক্ষেত্রে কিছু শুদ্ধাচার মেনে চলুন। আর তা যদি আপনি পারেন, তবে দেখবেন চমৎকার এক জগতে প্রবেশ করেছেন। শুদ্ধ হওয়া বিষয়টি এমন নয় যে এটা আপনা আপনি হয়ে যায়। শুদ্ধ হওয়ার জন্যে আপনাকে এটা চর্চা  করতে হবে। এটা অনেকটা ভালো সঙ্গীত শিল্পী বা ক্রীড়াবিদ হয়ে উঠার মতোই। সাফল্যের জন্যে তাদেরকে যেমন চর্চা করতে হয়, শুদ্ধ মানুষ হওয়ার ব্যাাপরেও আপনাকে সেটা করতে হবে।

আজ আমরা আলোচনা করবো উৎসবে-পার্বণে-বিশেষ দিবস কিভাবে পালন করবেন সে সম্পর্কে-
- দেশের নাগরিক হিসেবে শহিদ দিবস/ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস কবে তা স্মরণ রাখুন ও মর্যাদা দিন। এই দিবসগুলোতে শুধু নয়, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও মাতৃভাষার সম্মান রক্ষার্থে আত্মদানকারী সকল শহিদের জন্যে বছরজুড়েই বিশেষভাবে দোয়া করুন।

- স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে প্রভুর কাছে শুকরিয়া জানিয়ে দেশ ও মানুষের জন্যে প্রার্থনা করুন– প্রভু হে! তুমি সকল ক্ষমতার মালিক। তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দান করো। যাকে ইচ্ছা ক্ষমতাচ্যুত করো। সৎ বিচক্ষণ দেশপ্রেমিক নেতৃত্বকে তুমি ক্ষমতা দাও। মুসলমান হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান পাহাড়ি ধনী–গরিব দলমত নির্বিশেষে সবার মধ্যে তুমি দেশপ্রেম জাগিয়ে দাও। আমাদের মেধাকে বিকশিত করো। জ্ঞান দক্ষতা ও প্রযুক্তিতে করো অনন্য। সমৃদ্ধি ও প্রাচুর্যে ভরিয়ে দাও আমাদের জীবন। আমাদের উন্নীত করো মানবিক মহাসমাজে, বিশ্বকে নেতৃত্ব দানকারী নৈতিক মহাশক্তিতে। তুমি সর্বশক্তিমান! ক্ষমতানিধান! দয়াময়! মেহেরবান!

- ভাষার জন্যে প্রাণ দেয়ার যে অনন্য উদাহরণ বাঙালি হিসেবে আমাদের রয়েছে, এ মূল্যবোধকে ধরে রাখতে মাতৃভাষা বাংলাকে ভালোভাবে আয়ত্ত করুন।

- বাবা দিবস, মা দিবস, ভালবাসা দিবস ইত্যাদি আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অংশ নয়। পাশ্চাত্যের এসব অন্ত:সারশূন্য দিবস পালন আপনার অন্ত:সারশূন্যতারই প্রকাশ ঘটাবে।

- ধর্মীয় বিশেষ দিনগুলোর তাৎপর্য সম্পর্কে জানুন। তাহলে যথাযথ মর্যাদায় তা উদযাপন করতে পারবেন।

- ধর্মীয়/ জাতীয় উৎসব এবং নানা দিবসে মুনাফালিপ্সু বেনিয়াগোষ্ঠী ও মিডিয়ার প্ররোচনায় বিশেষ রঙ-থিম-ডিজাইনের পোশাক কেনার বদলে স্বকীয়তায় ভাস্বর হোন।

- পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার অপসংস্কৃতি বর্জন করুন। বৈশাখে প্রজনন মৌসুমে ইলিশ না খেয়ে সারা বছর পর্যাপ্ত ইলিশের প্রাপ্তি নিশ্চিত করুন।

- পাড়া কাঁপিয়ে গান বাজানো, আতশবাজি বা পটকা ফোটানোর মাধ্যমে উন্মত্ত আনন্দ প্রকাশ করে চারপাশের সবার বিরক্তির কারণ হবেন না।

- ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে কেনাকাটা মাসখানেক আগেই সম্পন্ন করুন। বিশেষত ঈদুল ফিতরের কেনাকাটা শবে বরাতের আগেই সম্পন্ন করুন।

- ঈদ উপহার সাধ্যের মধ্যে কিনুন। ঈদ কেনাকাটা থেকে কিছুটা অর্থ বাঁচিয়ে সবচেয়ে কল্যাণকর উপহার পৌঁছে দিন।

- ঈদ সালামি হিসেবে অর্থ আদায় একটি অপসংস্কৃতি ও জুলুম। এটি শিশু-কিশোরদের লোভাতুর করে তোলার একটি অপকৌশল। নিজে ঈদ সালামি দেয়া থেকে বিরত থাকুন, পরিচিতদেরও সচেতন করুন আর শিশু-কিশোরদের নিরুৎসাহিত করুন। ঈদের দিনে প্রাণভরে সবার জন্যে আপ্যায়ন, দোয়া ও শুভকামনা করুন।

- কেউ ইচ্ছুক না হলে জোর করে রং/ আতর লাগাতে যাবেন না। আর কেউ ইচ্ছুক হলেও পুরুষরা কখনোই মহিলাদের পোশাকে রং/আতর লাগিয়ে দেবেন না। এটা অশোভন ও দৃষ্টিকটু।

- ধর্মীয়/ জাতীয় উৎসব ও বিশেষ দিবসগুলোকে মহিমান্বিত করার জন্যে রক্তদান, অর্থদান, গাছের চারা রোপণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান ইত্যাদি কাজ সঙ্ঘবদ্ধভাবে আয়োজন করুন।