ঢাকা, সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

কুড়িগ্রামে আলু নিয়ে বিপাকে কৃষক

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৪:৩৭ পিএম, ২৫ মার্চ ২০২১ বৃহস্পতিবার

কুড়িগ্রামে হিমাগার স্বল্পতার কারণে আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছে আলু চাষীরা। হিমাগারগুলোর সামনে আলু বোঝাই ট্রলি, ঘোড়ার গাড়ি, ভ্যান ও মহিষের গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। হিমাগার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ধারণ ক্ষমতা শেষ হওয়ায় তারা হিমাগারের প্রধান ফটক বন্ধ করে দিয়েছে। তারপরেও ভিড় করছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। 

বাজারে আলুর দাম কম, ক্রেতার অভাব ও বিদেশে রপ্তানি কমে যাওয়ায় আলু উৎপাদন করে এখন মাথায় হাত বহু কৃষকের। 

বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুড়িগ্রামের কয়েকটি হিমাগার ঘুরে দেখা গেছে, হিমাগারগুলো প্রধান ফটক বন্ধ। মাঠে ও রাস্তায় শত শত বস্তা আলু নিয়ে অপেক্ষমান কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে দুটি পিকআপ নিয়ে বাবর কোল্ড স্টোরেজের সামনে রাস্তায় বসে আছেন পিকআপ চালক সাইদুল মিয়া। কিন্তু ভেতরে ঢুকতে পারছেন না। একই অবস্থা হক হিমাগারের সামনেও। ৭০ বস্তা আলু নিয়ে দুদিন ধরে অপেক্ষা করছেন কৃষক রিয়াজুল ইসলাম। 

হক হিমাগারের কর্মচারি নূর ইসলাম জানান, এই হিমাগারের ১ লাখ ৭০ হাজার বস্তা ধারণ ক্ষমতা প্রায় পূর্ণ হয়ে গেছে। আর আলু নেয়ার সুযোগ নেই। সেকেন্দার কোল্প স্টোরেজের স্টোর কিপার আইয়ুব আলী জানান, এই হিমাগারে ১ লাখ ৮০ হাজার বস্তা ধারণ ক্ষমতার পুরোটাই পুরণ হওয়ায় আলু নেয়া যাচ্ছেনা। 

এই অতিরিক্ত আলু কৃষকদের বাড়িতে সংরক্ষণ করা ছাড়া উপায় নেই। এখনও জমি থেকে প্রচুর আলু তোলা বাকী আছে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ৪টি হিমাগারে মোট ধারণ ক্ষমতা ৬ লাখ ২০ হাজার বস্তা। ধারণ ক্ষমতার প্রায় পুরোটাই পুরণ হওয়ায় অতিরিক্ত কিছু আলু সংরক্ষণের চেষ্টা করছে এসব হিমাগার কর্তৃপক্ষ।

সদর উপজেলার সন্ন্যাসী গ্রামের কৃষক আব্দুল বাতেন, রাজারহাটের দেবালয় গ্রামের কৃষক আজম আউয়াল দোলনসহ কয়েকজন কৃষক জানান, প্রতি কেজি আলুর মূল্য ৬-৭ টাকায় নেমে গেছে। তাও ক্রেতা মিলছেনা, হিমাগারেও জায়গা মিলছেনা। ফলে আলু চাষ করে বিরাট লোকসানের মুখে পড়েছেন তারা। 

সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী বাজারের আলু ব্যবসায়ী ছোলেমন আলী জানান, অন্যান্য বছর বিদেশে আলু রপ্তানির কারণে আলুর বাজার স্থিতিশীল থাকলেও এবছর রপ্তানি চাহিদা কম থাকায় এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে আলুর বাজারে। দিনে দিনে কমছে দাম। 

আলু রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এগ্রি কনসার্নের ডেপুটি ম্যানেজার সাহানুজ্জামান জানান, বর্তমানে তারা শ্রীলংকা ও সিঙ্গাপুরে সীমিত পরিমাণ আলু রপ্তানি করছেন। তবে ডোনাটা, সানসাইন ও কুম্বিকার মতো কিছু জাতের আলুর ব্যাপক চাহিদা থাকলেও বাংলাদেশে এসব জাতের আলু আবাদ কম হওয়ায় রপ্তানির সুফল পাওয়া যাচ্ছেনা। 

এএইচ/