ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

ক্ষুধার তাড়নায় রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন প্রতিবন্ধী মমিন

ধামইরহাট সংবাদদাতা

প্রকাশিত : ০৪:০৫ পিএম, ১৩ এপ্রিল ২০২১ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৪:০৬ পিএম, ১৩ এপ্রিল ২০২১ মঙ্গলবার

প্রতিবন্ধী মমিন হোসেন

প্রতিবন্ধী মমিন হোসেন

ভীষণ রোদ! শরীরের ওপর দিয়ে বইছে গরম হাওয়া। অন্যদিকে মহামারি করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় রাস্তায় দু-একটা ভ্যান রিক্সা ব্যতীত দেখা নেই সাধারণ মানুষের। দোকানপাট ছিল অনেকটা বন্ধ। স্বাস্থ্যবিধি মানতে তখন সমাজের উঁচু স্তরের মানুষগুলো পরিবার নিয়ে রয়েছেন ঘরে। কিন্তু ক্ষুধার তাড়নায় অর্থের খোঁজে ঘর থেকে রাস্তায় নেমে আসতে হয়েছে সমাজের অসহায় ও অবহেলার শিকার শারীরিক প্রতিবন্ধীদেরকে। বলছিলাম প্রতিবন্ধী মমিন হোসেনের কথা।

নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার ১নং ধামইরহাট ইউনিয়নের হরিতকী ডাঙ্গা নামক গ্রামের মৃত জামাল হোসেনের ঘরে তার জন্ম হয়েছিল। জন্মের পর পোলিও রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি পুরোপুরি বিকলাঙ্গ হয়ে যান। দরিদ্র ঘরে জন্ম নেওয়ায় বাবা মা অনেক চেষ্টা করেও অর্থের কাছে হেরে যায় তার চিকিৎসা। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, বর্তমান তাকে একজন শারীরিকভাবে কর্মহীন প্রতিবন্ধী হিসেবে পঙ্গুত্ব জীবন নিয়ে ঘুরতে হচ্ছে।

করোনাকালে অসহায় মানুষগুলোর খোঁজ-খবর নিতে সাংবাদিকদের সাথে দেখা মিলল এমনই একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী মমিন হোসেন নামক এক ব্যক্তির সাথে। হলুদ বিবর্ণ শরীরে তার কিছুই নেই। বাহ্যিক দিক থেকে দেখে চামড়ার ভেতর থেকে বের হয়ে আসছে শুঁকনো জীর্ন শরীরের হাড়। জোড়া-তালি দিয়ে নিজ হাতে তৈরি করা পুরনো কাপড়ের একটি ব্যাগ গলায় ঝুলিয়ে কয়েকটা টাকার খোঁজে ঘুরছেন রাস্তায় রাস্তায়। দাঁড়াতে কিংবা পায়ে হেঁটে চলাফেরা করতে পারেন না তিনি। সেজন্য বসে বসে পঙ্গু দুই পায়েই শরীরের সব ভার বয়ে নিয়ে যেতে হয় অর্থের খোঁজে। শরীরের মতো দিনদিন তার হাত দুটিও হয়ে যাচ্ছে অকেজো। 

মমিন হোসেন আক্ষেপ করে বলেন, বছর চার আগে মা মারা গেছে। অভাবের সংসারে বাবা আমাদের সম্বল ছিল। তিনিও গত দুমাস আগে মারা গেছেন। 'আমাদের করোনা নেই আমাদের আছে পেটের ক্ষুধা। পেটের ক্ষুধার জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে দুই এক টাকার জন্য ঘুরে বেড়াই। এই লকডাউনে খাবো কি? সমাজে আমাদের মত মানুষের কেউ খোঁজ রাখে না'। তার অভিযোগ, প্রতিবন্ধী কার্ড পেলেও নিয়মিত ভাতার টাকা পাননা তিনি।

ধামইরহাট ১নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান মুঠোফোনে জানান, প্রতিবন্ধীদের টাকা ব্যাংকে দিয়ে থাকে। আমরা সব সময় চেষ্টা করে থাকি তারা যেন খুব সহজেই টাকা পান। বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এনএস/