ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

শরীরের যাকাত হচ্ছে রোজা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:৫২ পিএম, ১৫ এপ্রিল ২০২১ বৃহস্পতিবার

রমজান মাসকে সবরের মাস বলা হয়। রোজাকে সবরের অর্ধেক বলা হয়েছে। এ মাসেই বান্দা সবরের শিক্ষা লাভ করে। সবরকারীর জন্য রয়েছে অগণিত পুরস্কার। রোজা মানুষকে আল্লাহর হুকুম পালনে ধৈর্যশীল ও পরমসহিষ্ণু হতে শেখায়। 

রোজা হচ্ছে আত্মিক ইবাদত। যাকে বাহ্যিক দৃষ্টিতে দেখানোর কোনো সুযোগ নেই। রোজাদার মনে প্রাণে আল্লাহকে ভয় করে। সে ভালোবেসেই আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নে রোজা রাখে। 

রোজা মানুষকে অলসতা দূর করতে পরিশ্রমী হতে শেখায়। রোজাদার দিনের বেলায় পানাহার ত্যাগ করা সত্ত্বেও নামাজসহ অন্যান্য ইবাদাত-বন্দেগির পাশাপাশি সারাদিন কঠোর পরিশ্রম করে। সারা দিন রোজা রেখে রাতের বেলায় তারাবিহ, তাহাজ্জুদ নামাজ আদয়, কুরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার করে। আবার শেষ রাতে ওঠে সাহরি খাওয়া ও ফজর আদায় করা অনেক কষ্টকর। এই রোজা থেকেই মানুষ পরিশ্রমী হতে শেখায়।

রোজা সবরের অর্ধেক। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা-পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক।
—সুফিয়ান সাওরী (র); তিরমিজী

রোজা রাখো, যাতে তোমরা সুস্থ থাকতে পারো।
—আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা), আবু হুরায়রা (রা); তাবারানী

সবকিছুর জন্যেই যাকাত (শুদ্ধি প্রক্রিয়া) রয়েছে। শরীরের যাকাত হচ্ছে রোজা।
—আবু হুরায়রা (রা); ইবনে মাজাহ

আল্লাহ বলেন, মানুষের প্রতিটি আমল বা কাজ হচ্ছে তার নিজের জন্যে। আর রোজা হচ্ছে কেবল আমার জন্যে। (আমার জন্যেই সে খাবার ও পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকে এবং যৌন কামনা-বাসনাকে সংযত করে।) তাই রোজার পুরস্কার আমিই তাকে দেবো। রোজা হচ্ছে (পাপাচার ও জাহান্নামের আগুনের বিরুদ্ধে) বর্ম। অতএব তোমরা যখনই রোজা রাখো, তখন ফালতু আজেবাজে অপ্রয়োজনীয় কথা বলবে না, চেঁচামেচি করবে না। কেউ গালি দিলে বা ঝগড়া করতে এলে বলবে, আমি রোজাদার। রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মৃগনাভির (বিশেষ সুগন্ধি) গন্ধের চেয়েও পছন্দনীয়। রোজাদার দুটি আনন্দ লাভ করে। প্রথমত, ইফতারের সময়। দ্বিতীয় আনন্দ লাভ করবে—যখন সে তার প্রতিপালকের সাথে মিলিত হবে।
—আবু হুরায়রা (রা); বোখারী, মুসলিম

মানুষের প্রত্যেকটি সৎকর্মের নেকি আল্লাহ গুণিতক করেন। ১০ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি দান করেন। আর রোজার নেকি আল্লাহ নিজে দেবেন, কোনো সীমা ছাড়া, তাঁর ইচ্ছানুসারে।
—আবু হুরায়রা (রা); মুসলিম

আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আত্মশুদ্ধির নিয়তে যে রমজান মাসে রোজা রাখে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ হয়ে যায়।
—আবু হুরায়রা (রা); বোখারী, মুসলিম

অসুস্থতা বা যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া কেউ রমজান মাসের একটি রোজাও ত্যাগ কোরো না। এই একটি রোজার পরিবর্তে সারাজীবন ধরে রোজা রাখলেও—যা তুমি হারিয়েছ তা কখনো পূরণ হবে না।
—আবু হুরায়রা (রা); তিরমিজী, ইবনে মাজাহ

যদি তুমি রোজা রাখার কথা ভুলে গিয়ে হঠাৎ করে কিছু খেয়ে ফেলো বা পান করো, তবে তুমি অবশ্যই রোজা পুরো করবে। (ভুলবশত খেয়ে ফেলায় তোমার রোজা ভেঙে যাবে না) আসলে আল্লাহই তোমাকে খাইয়েছেন।
—আবু হুরায়রা (রা); বোখারী, মুসলিম

রোজাদার যদি মিথ্যাচার ও অশোভন কাজ পরিহার না করে, তবে তার পানাহার বর্জন আল্লাহর কাছে কোনো গুরুত্ব বহন করে না।
—আবু হুরায়রা (রা); বোখারী