ঢাকা, রবিবার   ২৮ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য দারুণভাবে বিপর্যস্ত (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:১২ এএম, ২২ এপ্রিল ২০২১ বৃহস্পতিবার

করোনা মহামারীতে সববয়সী মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য দারুণভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গবেষণায় দেখা গেছে, করোনায় বিষণ্নতার হার ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪৬ শতাংশ এবং উদ্বিগ্নতা ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩৩ শতাংশে পৌঁছেছে। বেড়েছে আত্মহত্যার প্রবণতাও। মাইন্ড সেটআপ, অনুশীলন ও আচরণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে করোনা মোকাবেলায় সবাইকে মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ১৬ এপ্রিল রাতে হাসপাতাল ভবন থেকে লাফিয়ে পড়েন আসিফ ইকবাল নামে এক রোগী। ৫০ বছরের ওই ব্যক্তি কোভিড আক্রান্ত ছিলেন। পুলিশ বলছে, সুইসাইড নোটে নিজের একাকিত্বের যন্ত্রণার কথা উল্লেখ করেছেন আসিফ।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, গত একবছরে এই ধরনের প্রায় ৬ থেকে ৭টি আত্মহত্যার কেস রিপোর্ট আমাদের কাছে আছে। যারা করোনা সংক্রান্ত কারণে, করোনা জটিলতায়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে আত্মহত্যা করেছেন। গত একবছরে বাংলাদেশে আত্মহত্যার মোট সংখ্যা একটি বেসরকারি সংস্থা করেছে, ১৪ হাজার জন। যেটি ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত গড়ে ১০ হাজারের বেশি ছিল না।

সময়টা কোভিড মহামারীর, পৃথিবীজুড়েই মানসিক স্বাস্থ্যের ভগ্নদশা। চলতি বছরের ৭ এপ্রিল ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা যায়, করোনা থেকে সুস্থ হয়ে যাওয়া ৩ জনের মধ্যে ১ জন মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। 

কোভিড মহামারীর সময়ে পরিচালিত কিছু গবেষণায় দেখা যায়, বিষণ্নতার হার করোনাপূর্ব সময়ে ৭ শতাংশ থাকলেও বর্তমানে তা বেড়ে ৪৬ শতাংশ। আর উদ্বিগ্নতা ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৩ শতাংশ। 

ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা মনে করি করোনাভাইরাস একটি শারীরিক রোগ, শারীরিক চিকিৎসা করেই হয়তো এর উন্নতি সম্ভব। কিন্তু শারীরিক চিকিৎসার পাশাপাশি এই সময়টিতে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং যারা আক্রান্ত নন তাদের প্রত্যেকেরই মানসিক স্বাস্থ্যের যত্নের প্রয়োজন আছে। সেই বিষয়টি যদি আমাদের লিডাররা, আমাদের নির্ধারকরা উপলব্ধি করতে পারেন সেটাই হচ্ছে প্রকৃত উত্তরণের পথ।

মানসিক স্বাস্থ্য বিপর্যস্ত হচ্ছে শিশুদেরও। গুণগত সময় ও শিশুদের আচরণের দিকে নজর দিতে হবে অভিভাবকদের। 

সহযোগী অধ্যাপক আরও বলেন, শিশুদের মধ্যে প্রভাবটা কিন্তু দ্বিগুণ আকারে হচ্ছে। কারণ একদিকে তাদের করোনার ঢেউ সামলাতে হচ্ছে, তাদের স্কুলগুলো ১৩ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। এই যে বিষয়টা তাদের মনের উপরে চাপ ফেলছে। তাদেরকে শুধু গেজেটের মধ্যে আটকে না রেখে তাদেরকে কিছু হাতের কাজ, বই পড়া, পরিবারের কাজগুলোতে জড়াতে পারি তাহলে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের কিছুটা উন্নতি করতে পারবো। 

সম্মুখসারির যোদ্ধাসহ প্রত্যেককেই মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে যত্নশীল হওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মাস্ক পড়া, হাত ধোয়া, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি প্রত্যেকে আমরা নিজেরা নিজেদের মানসিক স্বাস্থ্যের যেন যত্নটা নেই। 
দেখুন ভিডিও :

এএইচ/এসএ