ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

দূর্লভ খনিজ ধাতব সরবরাহে চীনা আধিপত্যে শঙ্কিত পশ্চিমারা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:০০ পিএম, ২৭ এপ্রিল ২০২১ মঙ্গলবার | আপডেট: ১০:০৩ পিএম, ২৭ এপ্রিল ২০২১ মঙ্গলবার

বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি, স্যাটেলাইট, বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র, বায়ুকল ও সোলার প্যানেল উৎপাদনে দুর্লভ খনিজ উপাদান (রেয়ার আর্থ এলিমেন্ট) ব্যবহার অপরিহার্য। বিশ্বে এসব রেয়ার আর্থ এলিমেন্টের ৮৫ শতাংশই জোগান দিচ্ছে চীন।

এছাড়া বিভিন্ন ধরনের দুর্লভ ধাতব এবং খনিজের বৈশ্বিক সরবরাহের দুই-তৃতীয়াংশই এই দেশটি থেকে আসছে। এ ধরনের ধাতব আমদানিতে চীনের ওপর নির্ভরশীলতা ক্রমে বৃদ্ধি পাওয়ায় শঙ্কিত হয়ে উঠেছে পশ্চিমা দেশগুলো। যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের দেশগুলো আশঙ্কা করছে কোনভাবে এই সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্নিত হলে তাদের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পখাত ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখিন হবে। 

বিশ্বে সৌর পিভি ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে সবচেয়ে আধিপত্য চীনের। এছাড়া দেশটির বৈশ্বিক ওয়েফার (অত্যন্ত হালকা-পাতলা সেমিকন্ডাক্টর) উৎপাদন সক্ষমতার ৯০ শতাংশেরও বেশি চীনের কাছে। দ্য সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি তৈরিতে ব্যবহৃত উপাদানের সিংহভাগ এবং ব্যাটারি সেল ম্যানুফ্যাকচারিং এর বৈশ্বিক উৎপাদন সক্ষমতার ৮০ শতাংশই চীনের হাতে। যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের দেশগুলো আশঙ্কা করছে এ ধরনের পণ্যের সরবরাহ শৃঙ্খলে কোনরকম বিঘ্ন ঘটলে তাদের শিল্প-কারখানা ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখিন হবে। 

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সম্প্রতি বলা হয়েছে, চীনের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাস করতে তারা নিজেদের দুর্লভ ধাতব সরবরাহ শৃঙ্খল পুনর্নিমাণ করবে। এটি তাদের বিমানচলাচল, প্রতিরক্ষা এবং গাড়ি শিল্পকে শক্তিশালী করবে। 

জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির এলিয়ট স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের অধ্যাপক ডেভিড শিন এ প্রসঙ্গে বলেন, রেয়াল আর্থসহ গুরুত্বপূর্ণ খনিজের সরবরাহ শৃঙ্খলে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে যুক্তরাষ্ট্র সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বৈশ্বিক পর্যায়ে ১০ শতাংশ রেয়ার আর্থ উপাদান উৎপাদন করছে যুক্তরাষ্ট্র, তবে দেশটির প্রয়োজন এর চেয়েও বেশি। রেয়ার আর্থ উপাদান উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য যুক্তরাষ্ট্র ক্যালিফোর্নিয়ায় মাউন্টেইটন পাস খনিটি পুনরায় খোলে দিয়েছে। 

অন্যদিকে গত বছর ইউরোপিয় ইউনিয়ন (ইইউ) তাদের শিল্পকারখানার জন্য ৩০টি অতিপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল শনাক্ত করে। এসময় ইইউর পক্ষ থেকে আরো বলা হয়, এই বাজারে চীনের আধিপত্য ‘মূল্যবান শৃঙ্খলকে ভয়াবহরকমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।’

সিএসআইএসের জেষ্ঠ্য ফেলো জেন নাকানো সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলেন, ‘সাধারণ খনিজ উত্তোলনকারী বা যন্ত্রাংশ সংযোজনকারী নয় চীন বড় ধরনের ম্যানুফ্যাকচার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে; যাদের খনিজ ও ধাতবগুলো পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি উৎপাদনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়।’ 

অন্যদিকে রেয়ার আর্থ উপাদান উৎপাদনে আরো অগ্রগামি হতে কঙ্গোর মতো খনিজ সমৃদ্ধ দেশগুলোয় বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করছে চীন। বিশ্বের কোবাল্ট আকরিক লোহার ৬০ শতাংশের বেশি কঙ্গোতে উৎপাদিত হয়। সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

এসি