ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

স্বপ্ন পূরণ হাওরপাড়ের কৃষাণ-কৃষাণীর

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৩:১২ পিএম, ৮ মে ২০২১ শনিবার

সুনামগঞ্জ জেলার অধিকাংশ মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে বোরো ফসলের উপর। হাওরপাড়ের কৃষকরা স্ত্রী-সন্তানাদি নিয়ে ভালোভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন বুনে বোরো ফসলের মাঝে। ফসল ভালোভাবে গোলায় উঠলে তাদের স্বপ্ন পূরণ হয়। আর কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফসলহানি ঘটলে স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। তবে এ বছর স্বপ্ন পূরণ হয়েছে হাওরপাড়ের কৃষাণ-কৃষাণীর। হাওরে এবার বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে।

দুর্যোগ-দুর্বিপাক ছাড়াই সময়মতো ফসল ঘরে তুলতে পেরে কৃষকদের মুখে এখন রাজ্য জয়ের হাসি। শ্রমিক সংকট না থাকায় করোনার শঙ্কার মধ্যেও ধান গোলায় তুলতে কোন সমস্যা হয়নি কৃষকদের। বাজারে ধানের ভালো দাম থাকায় লাভবান হচ্ছেন তারা। 

সরেজমিনে বিভিন্ন হাওরে ঘুরে দেখা গেছে, হাওরের প্রায় শতভাগ ধান কাটা শেষ। অনেক কৃষক তাদের ধান কাটা মাড়াই শেষ করে গোলায় তুলছেন। এ বছরের মত ধান তোলার অনুকূল পরিবেশ কবে পাওয়া গেছে ঠিক মনে নেই তাদের। সরকার ভর্তুকি মূল্যে হারভেস্টার মেশিন দেয়ায় উপকৃত হয়েছেন কৃষকরা। প্রতিটি কৃষক পরিবারে এখন আনন্দের ছাপ। 

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে এ উপজেলায় ২২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি। এ বছর ধান উৎপন্ন হয়েছে এক লাখ ১০ হাজার মেট্রিকটন। যার বাজার মূল্য হবে ২৫০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে। 

উপজেলার ডুংরিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল ওয়াহিদ জানান, প্রতিবছর বোরো ধান উত্তোলনের সময় ঝড়বৃষ্টি, অকাল বন্যা, শ্রমিক সংকট, প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা করে আমাদেরকে বোরো ফসল ঘরে তুলতে হতো। প্রতি মুহূর্তে আমাদের মনে শঙ্কা থাকে এই বুঝি কষ্টের ফসল নষ্ট হয়ে গেল। কিন্তু এবার প্রকৃতি অনুকূলে থাকায় এবং শ্রমিক সংকট না থাকায় কোন শঙ্কা ছাড়াই ধান গোলায় তুলতে পেরে খুশি লাগছে। এমন আবহাওয়া এর আগে কখনোই পাইনি।

আরেক কৃষক হান্নান মিয়া বলেন, ১০ কেদার জমি আবাদ করেছিলাম সব ধান কাটা শেষ। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবার আমরা খুশি মনে ধান তুলতে পেরেছি। জমিতে ফসল ভালো হওয়ায় লাভবান হয়েছি। 

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সজীব আল মারুফ বলেন, হাওরের শতভাগ ধান কাটা শেষ। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবং ধানের নায্য দাম থাকায় কৃষকরা খুশি। এবার দক্ষিণ সুনামগঞ্জে লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদিত হয়েছে।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক নূর হোসেন বলেন, শ্রমিক সংকট না থাকায় দ্রুত হাওরের ধান গোলায় তুলতে সক্ষম হয়েছেন কৃষকরা। দক্ষিণ সুনামগঞ্জের প্রতিটি কৃষক পরিবারে এখন হাসির ঝিলিক।  
এএইচ/এসএ/