ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১০ ১৪৩১

করোনার পর রপ্তানি প্রবৃদ্ধি পুরনো ধারায় ফিরবে: বাণিজ্যমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন  

প্রকাশিত : ০৮:২৬ পিএম, ৮ মে ২০২১ শনিবার

রপ্তানি পণ্য ও বাজার বহুমুখীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্চ মোকাবেলায় রপ্তানি পণ্য ও সেবা বহুমুখীকরণ এবং বাজার সম্প্রসারণের বিকল্প নেই। তিনি আরো বলেন, তবে কোভিড অতিমারির কারণে রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে যে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে, কোভিড পরবর্তীতে সেটা সহসা কেটে যাবে। এছাড়া চলতি অর্থবছর ৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানির যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, সেই লক্ষ্য পুরোপুরি অর্জন না হলেও কাছাকাছি পৌঁছাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

শনিবার দ্য ইন্সটিটিউট অব চাটার্ড একাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) আয়োজিত ‘বাংলােেদশর রপ্তানি পণ্য বহুমূখীকরণ : সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্চ’ বিষয়ক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আইসিএবি’র সাবেক প্রেসিডেন্ট আদিব এইচ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন, এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) চেয়ারম্যান মোস্তাক হোসেন, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফরুক হাসান, বাংলাদেশ চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা প্রস্তুত এবং রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম, আইসিএবি সভাপতি মাহমুদুল হাসান খসরু, বাংলাদেশ হ্যান্ডিক্রাফটস্ প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি গোলাম আহসান, বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অফ সফ্টওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিস (বেসিস) এর সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর, বাংলাদেশ পাটজাত পণ্য রপ্তানিকারক সমিতির পরিচালক মারুফ হোসেন, বাংলাদেশ এগ্রো-প্রসেসরস এ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সঈদ মো. সোহরাব হাসান ও আইসিএবির সহ-সভাপতি মারিয়া হাওলাদার বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইসিএবি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশীষ বসু।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কেবল তৈরি পোশাক নয়, আরও অনেক পণ্য ও সেবা রপ্তানি বাড়াতে হবে। এর জন্য আমরা দেশের সম্ভাবনাময় ১৯টি রপ্তানি পণ্যকে টার্গেট করে কাজ করছি। তিনি জানান, রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণে বিশ^ব্যাংকের সহায়তায় ইসিফরজে নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর আওতায় চামড়া, প্লাস্টিক, আইটি এবং হালকা প্রকৌশল এই চার খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধির কাজ চলছে। তিনি আরও বলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে ভূমি বরাদ্দ পাওয়া গেছে, অবকাঠামো নির্মাণ প্রক্রিয়া চলছে। এখানে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে প্রশিক্ষণ প্রদান ও পণ্যের নকশায় বৈচিত্র্য আনার কার্যক্রম রয়েছে যাতে বাংলাদেশে এই চারখাতে বিশ্বমানের পণ্য তৈরি করতে পারে।

এলডিসি থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্চ মোকাবেলায় সরকার ও বেসরকারি খাতের একসাথে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করে টিপু মুনশি বলেন, ‘আমরা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) ও অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) সই করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। ইতোমধ্যে ভুটানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। আমাদের ইচ্ছা আছে ২০২১ সালের মধ্যে অন্তত ৭ থেকে ৮টি দেশের সঙ্গে চুক্তি করা। তিনি বলেন, এফটিএ বা পিটিএ সই হলে প্রথম দিকে রাজস্ব আহরণে কিছুটা ধাক্কা আসবে, তবে দীর্ঘমেয়াদে সেটা অত্যন্ত সুফল বয়ে আনবে।

তিনি ব্যবসায়ীদের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে বলেন, রপ্তানি পণ্যের বাজার বহুমুখীকরণের লক্ষ্যে বিদেশের মাটিতে ট্রেডিং হাউস চালু করা যেতে পারে। তিনি বলেন, আফ্রিকাসহ অন্যান্য নতুন বাজারে ১০০টি ট্রেডিং হাউস চালু করে এর সম্ভাবনা কতটুকু আছে-সেটা যাচাই করা যেতে পারে।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন বলেন, রপ্তানি পণ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে যে ২১টি দেশে কমার্স কাউন্সিলর রয়েছেন, তাদেরকে ওই দেশে চাহিদা রয়েছে এমন আমাদের ৫টি পণ্য চিহ্নিত করতে বলা হয়েছিল। তাদের দেয়া তালিকায় দেখা গেছে, মোট ১৭টি পণ্য সেসব দেশে রপ্তানি করা যাবে। এসব পণ্য রপ্তানির জন্য আমরা এখন বিদেশের এই মিশনগুলোকে কাজে লাগাচ্ছি। একইসাথে তিনি জানান, সারাবিশে^ প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের হালাল পণ্য রপ্তানির সুযোগ রয়েছে, সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে চাই আমরা। অনুষ্ঠানে অন্য বক্তারা পণ্যের পাশাপাশি সেবার রপ্তানি সম্প্রসারণ ও প্রশিক্ষিত মানবসম্পদ তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

আরকে//