ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

পাইপলাইনে হামলায় মিয়ানমারে চীনের বিনিয়োগ হুমকির মুখে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:৩৬ পিএম, ৯ মে ২০২১ রবিবার

চলমান সহিংস বিক্ষোভে গোটা মিয়ানমারেই এখন বিশৃঙ্খল অবস্থা। এরমধ্যে দেশটিতে থাকা চীনের গুরুত্বপূর্ণ তেলের পাইপলাইনে হামলার পর এখানে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখার বিষয়টি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে বেইজিং কর্তৃপক্ষ। মিয়ানমারে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের চুক্তিবদ্ধ কোম্পানিগুলো দেশটি থেকে প্রস্থানের চিন্তাভাবনা করছে বলে জানা গিয়েছে। 

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ি, ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই চীন দেশটির পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। দেশটির সঙ্গে চীনের বাণিজ্যিক সুসম্পর্কের কারণেই চিন্তিত হয়ে পড়ছে তারা। 

চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে দৈনিক ১৬ মিলিয়ন ডলারের সীমান্ত বাণিজ্য সম্পন্ন হয়। এর পাশাপাশি ৮০০ কিলোমিটারের তেল ও গ্যাসের দুটি পাইপলাইনে অনেক অর্থ বিনিয়োগ করেছে চীন। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ পাইপলাইনটি দিয়ে বার্ষিক ১২ বিলিয়ন ঘন মিটার গ্যাস এবং অপরিশোধিত তেলের পাইপলাইনটি দিয়ে বছরে ২২ মিলিয়ন টন তেল সরবরাহ হয়। 

নিক্কেই এশিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রাকৃতিক গ্যাস ও সৌর বিদ্যুৎ জ্বালানী কোম্পানিগুলো তাদের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন নিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে। এখন সামরিক অভ্যুত্থান বিষয়গুলিকে আরো জটিল করে ফেলেছে।’

পাইপলাইনগুলোকে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ উল্লেখ করে ফেব্রুয়ারিতে চীনা কর্মকর্তারা মিয়ানমারকে এসব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের আহ্বান জানায়। সেসময় বলা হয়, ‘এসব পাইপলাইনে যে কোন ক্ষতি উভয় দেশের জন্য বিপুল লোকসান বয়ে নিয়ে আসবে।’ 

গত বুধবার মান্দালায়ে একটি পাইপলাইন স্টেশনে পাহারায় থাকা একদল নিরাপত্তা কর্মীর ওপর হামলা হলে এসব প্রকল্পের গুরুত্ব নিয়ে আরো নড়েচড়ে উঠেছে চীন। উল্লেখ্য, অজ্ঞাতনামা হামলাকারীরের হামলায় পাইপলাইন স্টেশনের তিনজন নিরাপত্তাকর্মী নিহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। 

চীন অভিযোগ করেছে বিক্ষোভকারীরা কারখানাগুলোয় আগুন লাগানোর চেষ্টা করেছিলো। অবশ্য বিক্ষোভকারীরা এ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। 

সুইডিশ জার্নালিস্ট বার্টিল লিন্টার বলেছেন, মিয়ানমারের অনেক মানুষই চীন কর্তৃপক্ষকে নিয়ে অসন্তুষ্ট। বহুবছর ধরেই মিয়ানমারের সামরিক সরকারের নৃশংসতা অথবা তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ইউএনএসসিতে নিন্দা জানানোর সব পদক্ষেপই তারা আটকে দিয়েছে। ফলে বিক্ষোভকারীরা যদি পাইপলাইনের ওপর হামলা করলেও তা অবাক করার মতো কিছু হবে না। ‘মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে সমর্থন দেয়া বন্ধ না করলে চীনের প্রতি এই মনোভাবের পরিবর্তন হবে না। এটিই সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়।’ সূত্র: এএনআই

এসি