ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

এক আমের দাম ছয় হাজার টাকা, উৎপাদন শুরু বাংলাদেশে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৩৮ পিএম, ৫ জুন ২০২১ শনিবার

আমের নাম ‘মিয়াজাকি’। যাকে বলা হয় ‘রেড ম্যাঙ্গো’। কেউ কেউ একে ‘এগ অব দ্য সান’ হিসেবে চেনেন। বাংলাদেশে পরিচিত ‘সূর্যডিম আম’ নামে। এটি জাপানিজ আমের একটি প্রজাতি। পৃথিবীর সব চেয়ে দামি আম এটি। অন্য সব আমের চেয়ে ১৫ গুণ বেশি সুস্বাদু ও মিষ্টি এই আম। বিশ্ববাজারে একটি মিয়াজাকির দাম প্রায় ৭০ ডলার। যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ছয় হাজার। প্রতিটি আমের গড় ওজন প্রায় ৪০০-৫০০ গ্রাম। অর্থাৎ প্রতি ১০ গ্রাম আমের দাম এক ডলারের মতো।

বিশ্বের এই সেরা ও দামি আমের উৎপাদন এবার শুরু হতে চলেছে বাংলাদেশে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে এ আমের পরীক্ষামূলক চাষ শুরু হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এটি চাষ করে সাফল্যের মুখ দেখছেন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় পাকতে শুরু করেছে এ আম। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, জাপানিজ এই আম বা রেড ম্যাঙ্গো উৎপাদনে দেশ অচিরেই সফলতার মুখ দেখবে।

অধিদপ্তরের পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক ড. মো. মেহেদী মাসুদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সূর্যডিম আম চাষে কৃষকরা বেশ আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এ প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো- ফলের নতুন নতুন জাত দেশে সম্প্রসারণ করা। থাইল্যান্ড থেকে আমরা আমের ১৪টি ভ্যারাইটি নিয়ে এসেছি। এরমধ্যে ২০১৬ সালে ১৫শ’ সূর্যডিম জাতের আম দেশের ৭৫টি হর্টিকালচার সেন্টারে মাতৃবাগান হিসেবে রোপণ করা হয়। প্রায় চার বছর পর রাজধানীর আসাদগেট, মাদারীপুরের মোস্তফাপুর, দিনাজপুর, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী ও গাজীপুরের নুরবাগের হর্টিকালচার সেন্টারে ফল এসেছে এবং পেকেছে।’

৫০ শতাংশ গাছে ফল ধরেছে জানিয়ে ড. মো. মেহেদী মাসুদ বলেন, ‘পাকলে এই আমের রং হয় লাল, পাকার আগে রং থাকে গোলাপি। দামি এই আমের চাষ সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে চায় সরকার। সেই লক্ষ্যে এক হাজার গাছের কলম করা হচ্ছে। এসব কলম চাষিদের কাছে বিতরণের পাশাপাশি তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ফল পাওয়া গেছে। প্রতিটি সেন্টারে আরও বেশি গাছ লাগানো হবে। বিশেষ করে বাসা-বাড়ির ছাদে এই আমের গাছ লাগানোর ব্যাপারে আমরা উৎসাহী করছি। এখনও কলম বিক্রির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সূর্যডিম আমের চারা একশ টাকার বেশি হবে না।’

হর্টিকালচার সেন্টারের মাধ্যমে সূর্যডিম আম সারাদেশে কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘জাপানের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে উৎপাদিত এ আম খেয়ে প্রশংসা করেছেন। জাপান সরকার ব্রিটিশ রানী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের এই আম উপহার দেয়। বাংলাদেশে অনেক সেন্টারে সূর্যডিম গাছ লাগানো হয়েছে, উৎপাদনও হয়েছে।’

তিনি বলেন, সম্প্রতি চারটি আম আসাদ গেট থেকে সংগ্রহ করে প্রধানমন্ত্রীকে দেখার জন্য দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, শুধু আম উৎপাদন নয়, দিনে দিনে আরও অনেক ফল উৎপাদনে সফলতার উদাহরণ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। মৌসুমি ফল উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ।
এসএ/