ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

কুষ্টিয়া সুগার মিলের ৫২ টন চিনি গায়েব, কর্মকর্তা বরখাস্ত

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ০৩:৪২ পিএম, ৫ জুন ২০২১ শনিবার



কুষ্টিয়া সুগার মিলের প্রায় ৫২ মেট্রিক টন চিনির হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। মিলের গুদামে ১০০ টনের ওপরে চিনি মজুদ থাকলেও এখন আছে অর্ধেকেরও কম। এ ঘটনায় গুদাম কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলামকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে গঠন করা হয়েছে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি।

গত বৃহস্পতিবার (৩ জুন) মিলের কর্মকর্তারা স্টক রেজিষ্টারের সঙ্গে মজুদ চিনির পরিমাণ মেলাতে গিয়ে দেখতে পান সেখানে প্রায় ৫০ থেকে ৫২ টন চিনি কম আছে। এ ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয় সুগার মিল প্রশাসনে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক গুদাম কর্তকর্তা ফরিদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

মিলের সিবিএ সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান বলেন, এটা ন্যাক্কারজনক ঘটনা। দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র এ কাজ করে আসছিলো। মিল বন্ধ না হলে হয়তো বিষয়টা ধরা পড়তো না। তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন সিবিএ সভাপতি ফারুক হোসেন। তিনি বলেন, ফ্যাক্টারি, গোডাউন আর কর্মকর্তাদের কেউ কেউ জড়িত। ১০-১২ বছর ধরে এমন কাজ চলে আসছিলো বলে মনে হয়। এখন বিষয়টি সামনে এসেছে। পাচার হওয়া চিনির দামও কম নয়। প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা হবে। একদিনে এত চিনি পাচার হয়নি। তাই সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে।

ফরিদুল ইসলাম স্টোর কিপার ছিলেন। সম্প্রতি তাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়। এর আগে সোহেল নামের একজন দায়িত্বে ছিলেন। তার সময় চিনি চুরি ঘটনা হয়ে থাকতে পারে বলে বেশির ভাগ শ্রমিক-কর্মচারী মনে করছেন। তার আমলে তেল চুরি হয়, যার প্রমাণ পেয়েছেন মিল কর্তৃপক্ষ।

এদিকে মিলের জেনারেল ম্যানেজার (ফ্যাক্টরি) কল্যাণ কুমার দেবনাথকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

মিলের জেনারেল ম্যানেজার (প্রশাসন) হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি গত বৃহস্পতিবারে নজরে আসে। সেদিনই ফরিদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত ও তদন্ত টিম গঠন করে কর্পোরেশনকে জানানো হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘মিলের গোডউনের চিনি কখনো একেবারে শেষ হয়নি। এবার মিল বন্ধ হওয়ার পর চিনির স্টক শেষ হয়ে আসে। তাই রেজিষ্ট্রার ও গোডাউনের চিনির হিসাবে গরমিল পাওয়া যায়। তার পরিমাণ ৫০ টনের বেশি। তদন্ত চলছে, বিষয়টি উঠে আসবে। যারা জড়িত তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ 

একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে চিনিকলের একটি চক্র চিনি বিক্রির সময়ে গোপনে ট্রাকে পাচার করে আসছিল। এ বছরেও দিন ছাড়া রাতেও চিনির ট্রাক গেছে। তবে এক বছরে এমন হয়নি। কয়েক বছর ধরে এ কাজ হয়ে আসছে। এর আগে গোডাউন ধ্বসে পরেও কিছু চিনি নষ্ট হয়। সে সময় চিনি পাচার হতে পারে বলে মনে করেন অনেকে।

এদিকে, চিনি গায়েবের ঘটনায় কথা বলতে রাজী হননি মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাকিবুর রহমান। 

এএইচ/