ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০২ মে ২০২৪,   বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

চীনা নাগরিককে ঘিরে রহস্য ঘণীভূত, আতঙ্কে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:২৪ এএম, ১৫ জুন ২০২১ মঙ্গলবার

হান জানুই

হান জানুই

যে কোনও গোয়েন্দা কাহিনীকেও যেন হার মানাবে ঘটনাটি। ভারতের সীমান্তবর্তী মালদহের কালিয়াচকে ধরা পড়া চীনা নাগরিক হান জানুইকে ঘিরে ক্রমেই ঘণীভূত হচ্ছে রহস্য। প্রাথমিক তদন্তে আগেই তাকে চীনা গুপ্তচর বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। 

এবার তাঁদের আশঙ্কা, হানের শরীরের ভিতরে থাকতে পারে কোনও মাইক্রোচিপ বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস। যা নিশ্চিত করতে এবার আটককৃতের সিটি স্ক্যান করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে কী কোনও বড়সড় সাইবার হামলার প্ল্যান নিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন হান জানুই? এই প্রশ্নেই বাড়ছে কর্তৃপক্ষের যত চিন্তা।

এরইমধ্যে আটককৃতের থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া ল্যাপটপ ও আইফোন নিয়েও মহাবিপদে পড়েছেন ভারতীয় তদন্তকারীরা। পাসওয়ার্ড ক্র্য়াক করতে কার্যত নাজেহাল অবস্থা তাঁদের। জানা গেছে, হানের ল্যাপটপ ও আইফোনের পাসওয়ার্ডে ব্যবহার করা হয়েছে মান্দারিন ভাষা। যা উত্তর চীনে বেশ প্রসিদ্ধ ভাষা। 

এছাড়া আরও একটি সোশ্যাল গ্রুপে মান্দারিন ভাষায় কথোপকথনেরও তথ্য মিলেছে। এখন মান্দারিন ভাষা জানেন এমন ব্যক্তির খোঁজ করছে পুলিশ। হানের ল্যাপটপ ও আইফোন থেকে বহু তথ্য মিলতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। 

তাঁরা জানিয়েছেন, আটককৃত হান জানুই মোটেই কোনও সাধারণ ব্যক্তি নন। তাঁর কথায় একাধিক অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। কেবলমাত্র আর্থিক প্রতারণা নাকি হানের ভারতে আসার পেছনে রয়েছে আরও বড় কোনও কারণ? সেই রহস্য ভেদ করার চেষ্টা করছেন তাঁরা। 

বিএসএফ জানাচ্ছে, সীমান্তে ধরা পড়া চীনা নাগরিক হান জানুই একজন সাইবার বিশেষজ্ঞ। সেই কারণে তার শরীরে চিপ লুকোনো থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তাই তার সিটি স্ক্যান করার কথা ভাবছে পুলিশ। মালদহ পুলিশ জানাচ্ছে, হানের অন্য দু’টি ফোন থেকে বেশ কয়েকটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের হদিস মিলেছে।

সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগও হানকে জেরা করতে উদগ্রীব। এছাড়া উত্তরপ্রদেশের অ্যান্টি টেররিজম স্কোয়াডের (এটিএস) একটি দল হানকে হেফাজতে পেতে সোমবারেই উত্তরপ্রদেশের আদালতে আবেদন করেছে। 

এটিএসের দাবি, হানের বিরুদ্ধে সাইবার ও আর্থিক প্রতারণার মামলা রয়েছে। সেই মামলায় হানের ব্যবসায়ী বন্ধু সান জিয়াং এবং আরও ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হান ও তার সঙ্গী অন্তর্বাসের মধ্যে লুকিয়ে ভারতীয় সিম কার্ড চীনে পাচার করত বলে অভিযোগ। সেই সব সিম কার্ড কাজে লাগিয়েই অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হতো বলে এটিএস ও বিএসএফ সূত্রের খবর। 

বিএসএফের অভিযোগ, ভারত থেকে প্রচুর ডেটাবেস চীনে পাচার করেছে হান। জানা গেছে, হান চীনের জুন জেই গং চেং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতক। ওই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করে চীনা সেনাবাহিনী। 

পুলিশ জানিয়েছে, হানের কাছ থেকে যেমন টাকা ট্রান্সফারের পাঁচটি যন্ত্র উদ্ধার হয়েছে, পাওয়া গেছে ‘সিম বক্স’ নামে বিশেষ যন্ত্রও। সেই যন্ত্রের সাহায্যে টেলিফোনিক কলকে ডেটা কলে রূপান্তরিত করা যায়।

তাই এসব রহস্যকে উন্মোচন করতে আজ মঙ্গলবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন মালদহ জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া ও ডেপুটি পুলিশ সুপার প্রশান্ত দেবনাথ। সূত্র- আনন্দবাজার।

এনএস/