ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

বাবা দিবস স্পেশাল

বাবারা হারে না, হারায়ও না! 

মানিক মুনতাসির

প্রকাশিত : ১২:৪৭ পিএম, ২০ জুন ২০২১ রবিবার | আপডেট: ১২:৪৮ পিএম, ২০ জুন ২০২১ রবিবার

আজ জুন মাসের তৃতীয় রোববার "বাবা দিবস"। তবে আমি মনে করি- বাবা, মা, কন্যা সন্তান, নারী এসব বিষয়কে কোনও একটি নির্দিষ্ট দিবস দিয়ে সম্মান দেখিয়ে তার মর্যাদা পরিপূর্ণ হয় না। প্রতিটি দিনই তো বাবা, মা, কন্যা সন্তান, নারী দিবস।

ফলে প্রতি মুহূর্তেই মা-বাবাকে অনুভব করি। কাছে থাকুক কিংবা দূরে। এ ধরায় থাকুন অথবা পরপারে। অনুভব আর অনুভূতিগুলো জেগে থাক সব সময়। সম্মান শ্রদ্ধা, আর দায়িত্বপূর্ণ আচরণই প্রকৃত ভালবাসা। বাবার ওষুধ, স্যান্ডেল, খড়ম, জায়নামাজ, তসবিহ, টুপি, দাঁতের খিলাল- ব্যবহার্য্য প্রতিটি জিনিসই যেন এখন আমারই নিজের। কারণ আমিই এখন বাবা। 

ভঙ্গুর আর নশ্বর এই সমাজে পারিবারিক বন্ধনগুলো আজ খুবই ঠুনকো। তবে কাঁচের পাত্রের মতো নয়। ঠিক যেন ফেব্রিকেটেড স্টিল। যা ভেঙেও যায়, আবার জোড়াও লাগে। তবে এ সম্পর্কগুলোর স্বাদ ঠিক আমলকির মতো। যত বেশি চুষবেন ততই মজা। 

কিন্তু বাস্তবতা হলো- আমলকির ক্ষেত্রে প্রথমদিকটা টক আর পারিবারিক বন্ধনের ক্ষেত্রে শেষদিকটা তেতো। এজন্যই বোধ হয় বৃদ্ধ মা-বাবাকে খুব সহজেই বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিই আমরা। তবে মানতে পারলে এই তিক্ততাই তো সম্পর্কের প্রকৃত মধুরতা।

গবেষণা বলছে, আপনি যতটা এলিট আর ধণাঢ্য, আপনার পারিবারিক বন্ধন ততোটাই অদৃঢ়। উন্নত বিশ্বে তো পরিবার বলতে ভিন্ন ভিন্ন অর্থ বেরিয়েছে বহু আগে থেকে। স্বামী, স্ত্রী, অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তান। অর্থাৎ সন্তান প্রাপ্ত বয়স্ক হলেই তার আবার আরেকটা বা একাধিক পরিবার থাকে। আবার কোথাও কোথাও সিঙ্গেল থেকে একক পরিবারের ভিন্ন ব্যাখ্যাও দাঁড় করানো হয়। যেমনটি হলো- সিঙ্গেল মাদার। অবশ্য সিঙ্গেল মাদার-এর ধারণাটি মেয়েদেরকে নতুন করে বাঁচতে শেখায়।

কোনও এক খুনী বাবা জেলে যাওয়ার সময় সন্তানকে জড়িয়ে ধরে নৈতিক শিক্ষার কথাই বলে বিদায় নেয়। আবার এও প্রত্যাশা করে যে, ছেলে তার ঠিকই একদিন বিচারক হবে। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করবে। আবার সেই সন্তানও কখনওই বাবাকে অপরাধী হিসেবে দেখে না। আসলে সম্পর্ক আর কর্ম, অপকর্ম, অপরাধ এগুলো প্রতিটিই ভিন্ন ভিন্ন। ফলে খুনী বাবারাও সন্তানের কাছে শ্রেষ্ঠ বাবা। 

কেননা সন্তানের কোনও না কোনও আবদার রাখতেই হয়তো ওই বাবা মানুষ, পশু, এমকি নিজের পশুত্ব কিংবা মনুষ্যত্বকে খুন করেছেন। তবুও হারতে চান নি সন্তানের মায়ায়। আবার সেই স্মৃতি ধরে রেখেই বেঁচে আছেন সন্তানের দেহে কিংবা প্রাণে। ফলে বাবারা কখনও হারেন না। আবার হারিয়েও যান না।

এনএস//