ঢাকা, মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

বিদ্যুতের আলোয় বদলে যাচ্ছে পার্বত্যাঞ্চলের জীবন মান (ভিডিও)

মানিক শিকদার

প্রকাশিত : ১২:০৯ পিএম, ২৪ জুন ২০২১ বৃহস্পতিবার

করোনাকালেও রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে শতভাগ বিদ্যুতায়নের কাজ এগিয়ে চলেছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সংযোগের পাশাপাশি দুর্গম এলাকায় সৌরবিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনার কাজও এগোচ্ছে। এরইমধ্যে ৫৫ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। বিদ্যুতের আলোয় বদলে যাচ্ছে পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের জীবন মান। নিরাপত্তা, শিক্ষা ও পর্যটনে এসেছে নতুন আলো।

আকাশের মেঘ আর পাহাড়ের সাথে লুকোচুরি খেলতে খেলতে সুর্য লুকায়, আধার নামে পাহাড়ে। 

রাত ৯টা। খাগড়াছড়ির ভাইবোন ছড়া ইউনিয়নের ছোটবাড়ি গ্রাম। কিছুদিন আগেও এই সময়টাতেই ঘুমিয়ে পড়তো গোটা গ্রাম। এখন বিদ্যুতের আলোয় সন্তানদের শিক্ষার আলো দিচ্ছেন বাবা।

বিদ্যুৎ সংযোগে বিনোদনে এসেছে টেলিভিশন। লাগতে শুরু করেছে ইন্টারনেট সংযোগ। তাই তথ্য এখন তাদের হাতের মুঠোয়।

স্থানীয়রা জানান, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ায় এখন অনেক সুবিধা হয়েছে। এখানে পানির সংকট আছে, এখন মটার দিয়ে বিশুদ্ধ পানি তুলে আমরা খেতে পারছি।

পাহাড়ের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো। কমেছে চুরি, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধ।

পাহাড়ীরা জানান, বিদ্যুৎ পাওয়ার কারণে নিরাপত্তার বিষয়টি আগের চেয়ে অনেক ভালো।

অর্থনীতিতেও সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। এগোচ্ছে পাহাড়ের কৃষি। তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন উদ্যোক্তা।

খাগড়াছড়ি পৌর মেয়র বলেন, যুবক সমাজের অনেকে বেকার ছিল, বিদ্যুৎ আসার পরে তারা মুরগী ফার্মসহ অন্যান্য ফার্মও করতে পারছে।
 
স্বাধীনতার ৫০ বছরে শতভাগ বিদ্যুৎ বাস্তবায়নের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে মহামারি করোনা। তারপরও ৫৫ শতাংশ মানুষকে এ সুবিধার আওতায় আনা গেছে।

খাগড়াছড়ি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী স্বাগত সরকার বলেন, দুর্গম পাহাড়ী অঞ্চলে শতভাগ বিদ্যুৎ দেয়ার জন্য প্রকল্প চলমান আছে। আশা করছি, অতিশীঘ্রই এসব এলাকায় শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবো।

খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসু প্রু চৌধুরী অপু বলেন, আমাদের প্রিয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য মানুষকে ভালবেসে ৪০ হাজার পরিবারকে সোলারের মাধ্যমে বিদ্যুতায়নের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ২০১৭ সালে প্রকল্পটি হাতে নেয়। ৮০ শতাংশের বেশি কাজ শেষ হয়েছে। নতুন প্রকল্পের আওতায় ১২টি উপকেন্দ্রের কাজও শেষের দিকে। দুর্গম এলাকাগুলোতে সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ আসায় সাজেকের মতো পর্যটন ক্ষেত্রে এসেছে নতুন আলো।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ট্যুরিজমকে যদি উন্নত করতে হয় তাহলে বিদ্যুৎ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অথচ এই সমস্যার কারণে আমাদের ট্যুরিজম ঠিকমতো উন্নত হতে পারছিল না। সেই সমস্যাটাও এখানে সমাধান হয়েছে। এখানে বিদ্যুতের একটি গ্রিড স্টেশন হয়েছে।

পাবর্ত্য চট্টগ্রামের পর্যটনের লীলাভূমি সাজেক। এখানে পর্যটনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে নিত্য নতুন ব্যবসা বাণিজ্য। এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ হয়েছে। হয়েছে নতুন রাস্তা। যার ফলে এলাকাবাসীরা যেমন সুফল পাচ্ছেন তেমন পাচ্ছেন পর্যটকরাও। 

ভিডিও-

এএইচ/