ঢাকা, সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

হৃৎপিন্ড পরিচিতি ও করোনারি হৃদরোগ

একুশে টেলিভিশন  

প্রকাশিত : ০৫:০৫ পিএম, ৯ জুলাই ২০২১ শুক্রবার | আপডেট: ০৫:২৭ পিএম, ৯ জুলাই ২০২১ শুক্রবার

মানবদেহ স্রষ্টার এক অপূর্ব সৃষ্টি। মহাবিশ্বে এত চমৎকার, এত বুদ্ধিমান, এত সৃজনশীল, এত সংবেদনশীল আর কোনো সৃষ্টির অস্তিত্ব এখন পর্যন্ত পাওয়া যায় নি। এ মানবদেহেরই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হচ্ছে হৃৎপিন্ড। বুকের মাঝখানে দুই ফুসফুসের মাঝে এটি অবস্থিত।

হৃৎপিন্ড পরিচিতি
হৃৎপিন্ডের গঠনের দিকে তাকালে দেখা যাবে, এর রয়েছে চারটি প্রকোষ্ঠ। ওপরের দুটিকে বলা হয় অ্যাট্রিয়াম বা অলিন্দ এবং নিচের দুটিকে বলা হয় ভেন্ট্রিকল বা নিলয়। আর হৃৎপিন্ড চারপাশে পেরিকার্ডিয়াম নামক একটি আবরণী দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে।

হৃৎপিন্ডকে আমরা বলতে পারি—এটি একটি পাম্প, যা একজন মানুষের জীবদ্দশায় প্রায় সাড়ে চার কোটি গ্যালনের চেয়ে বেশি রক্ত পাম্প করে থাকে। প্রতিদিন প্রায় এক লক্ষবার হৃৎস্পন্দনের মাধ্যমে হৃৎপিন্ড দেহের প্রতিটি কোষে প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও অক্সিজেন পৌঁছে দিচ্ছে। আর এটি সম্ভব হচ্ছে ধমনী শিরা উপশিরা ও ছোট ছোট রক্তনালী মিলিয়ে প্রায় ৬০ হাজার মাইল পাইপলাইনের মধ্য দিয়ে।

কেউ কেউ মনে করেন, হৃদয় আর হৃৎপিন্ড অভিন্ন অস্তিত্ব। আসলে তা নয়। হৃৎপিন্ড সম্পর্কে বলা যায়, এটি একটি মাংসপিন্ড। আর হৃদয় একটি চেতনাগত অস্তিত্ব—যাকে ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না; তবে এটি আমাদের অনুভূতিতে সাড়া দেয় ও প্রভাবিত হয়। হৃৎপিন্ড আর হৃদয় পরস্পর গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত এবং হৃদয় দ্বারা হৃৎপিন্ড দারুণভাবে প্রভাবিত হয়। বইয়ের পরবর্তী অধ্যায়গুলোতে এ সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানব।

আমরা জেনেছি, পাম্প করে সারা শরীরে রক্ত সরবরাহই হৃৎপিন্ডের অন্যতম প্রধান কাজ। মজার ব্যাপার, হৃৎপিন্ডের নিজের কোষ ও পেশিগুলোর সুস্থভাবে বেঁচে থাকা এবং কর্মক্ষম থাকার জন্যেও দরকার পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও পুষ্টি। এ পুষ্টি পৌঁছে দেয়ার কাজটি সাধিত হয় রক্তের মাধ্যমে।

হৃৎপিন্ডে রক্ত সরবরাহের গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করে করোনারি ধমনী। হৃৎপিন্ডের প্রধান দুটি করোনারি ধমনী হলো যথাক্রমে বাম ও ডান করোনারি ধমনী বা লেফ্ ট মেইন করোনারি আর্টারি ও রাইট করোনারি আর্টারি। লেফ্ ট মেইন করোনারি আর্টারি আবার একটু নিচের দিকে এসে দুভাগে ভাগ হয়ে গেছে—লেফ্‌ট অ্যান্টেরিয়র ডিসেন্ডিং আর্টারি (এলএডি) ও লেফ্‌ট সারকামফ্লেক্স আর্টারি (এলসিএক্স)।

লেখাটি ডা. মনিরুজ্জামান ও ডা. আতাউর রহমান এর লেখা এনজিওপ্লাস্টি ও বাইপাস সার্জারি ছাড়াই ‘হৃদরোগ নিরাময় ও প্রতিরোধ’ শীর্ষক বই থেকে নেয়া। 

আরকে//