ঢাকা, বুধবার   ১৫ মে ২০২৪,   বৈশাখ ৩১ ১৪৩১

চলচ্চিত্রকার দিলীপ বিশ্বাসের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:৪৫ পিএম, ১২ জুলাই ২০২১ সোমবার | আপডেট: ০১:৪৬ পিএম, ১২ জুলাই ২০২১ সোমবার

ঢাকাই সিনেমার উজ্জ্বল নক্ষত্র চলচ্চিত্রকার দিলীপ বিশ্বাসের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০০৬ সালের ১২ জুলাই না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। তিনি নির্মাতা ও উপস্থাপক দেবাশীষ বিশ্বাসের বাবা। 

সেলুলয়েডের এই কিংবদন্তির হাত ধরে ঢাকাই সিনেমা পেয়েছে দারুণ নান্দনিকতা। তিনি ছিলেন একাধারে পরিচালক, প্রযোজক, কাহিনিকার, অভিনেতা ও গায়ক। মৃত্যুবার্ষিকীতে দিলীপ বিশ্বাসকে স্মরণ করছেন তার পরিবার, বন্ধু, স্বজন ও অনুসারীরা।

বাবা দিলীপ বিশ্বাসের প্রয়াণ দিবসে শোকাতুর পুত্র দেবাশীষ বিশ্বাস নিজের ফেসবুকে লিখেছেন,-

‘আজ থেকে ১৫ বছর আগে আজকের দিনে আমার বটবৃক্ষের সুশীতল ছায়াটি আমার কাছ থেকে সরে গিয়েছিল চিরতরে! অনেকের কাছেই তিনি ছিলেন, আছেন, থাকবেন চমৎকার অভিনেতা, অনন্য প্যারোডি গায়ক, বিশাল হৃদয়ের মানুষ, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক কিংবা অসাধারণ প্রতিভাধর চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব হয়ে! আমার কাছে তিনি পৃথিবী'র শ্রেষ্ঠ মানব, জগৎের সর্বশ্রেষ্ঠ 'বাবা'! জানো বাবা, তোমার চলে যাবার সেই দিন থেকে তোমার 'গীতি' (আমার মা, গায়ত্রী বিশ্বাস) আর আমি আজ অবধি তোমাকে স্মরণ করি প্রতিক্ষণে, অনুভব করি যেন আশেপাশেই তুমি আছো, চেষ্টা করছো এখনো আমাদের আগলে রাখতে, যেভাবে তুমি করে এসেছো আজীবন! তোমাকে ছাড়া আমরা ভালো থেকেও ভালো নেই বাবা! একবার ভগবানের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে আমাদের দুদন্ড সময় কি দেয়া যায় না বাবা? তোমাকে দেখতে বড় ইচ্ছে হয় আমাদের! বড় ইচ্ছে হয়!’

উল্লেখ্য, দিলীপ বিশ্বাসের জন্ম ১৯৪৬ সালে পিরোজপুরের চাঁদকাঠি গ্রামে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে মাস্টার্স করেছিলেন।

দিলীপ বিশ্বাস ষাটের দশকে কৌতুক অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন। কমেডিয়ান হিসেবে বেশ খ্যাতি ও জনপ্রিয়তাও পেয়েছিলেন। তার অভিনীত সফল সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে আনোয়ারা, সমাধান, স্বীকৃতি, নতুন নামে ডাকো, দুই ভাই, অতিথি, রংবাজ। প্লে-ব্যাক করেছেন বেশ কিছু চলচ্চিত্রে। প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার জহির রায়হানের সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন অনেকদিন।

অভিজ্ঞতার ঝুলি পূর্ণ করে ‘জিঞ্জির’ সিনেমার মাধ্যমে ১৯৭৩ সালে চিত্রপরিচালক হিসেবে অভিষেক ঘটে তার। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের তিন কিংবদন্তি অভিনেতা রাজ্জাক, আলমগীর ও সোহেল রানাকে একসঙ্গে নিয়ে নির্মাণ করেছিলেন ‘জিঞ্জির’ চলচ্চিত্রটি। সেটি সে সময় অসাধারণ দর্শকপ্রিয়তা লাভ করেছিলো। এরপর তিনি নির্মাণ করেছেন বহু সুপারহিট চলচ্চিত্র। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- অনুরোধ, আসামী, বন্ধু, অংশীদার, আনারকলি, অস্বীকার, অজান্তে, অপমান, সমাধি, অপেক্ষা, অকৃতজ্ঞ ইত্যাদি। দর্শক নন্দিত এ নির্মাতা সর্বশেষ ২০০৫ সালে নির্মাণ শুরু করেছিলেন মায়ের মর্যাদা। এটি ২০০৬ সালে মুক্তি লাভ করে।

প্রযোজক হিসেবেও সফল ছিলেন দিলীপ বিশ্বাস। প্রযোজক হিসেবে তার ছিল গীতি চিত্রকথা নামে একটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতষ্ঠান, এখানে চলচ্চিত্র প্রযোজনাসহ পরিবেশনও করা হয়। তার পরিচালনার বেশির ভাগ সিনেমার প্রযোজনা তিনি নিজেই করতেন। ২০০২ সালে পুত্র দেবাশীষ বিশ্বাসের পরিচালনায় ‘শ্বশুরবাড়ী জিন্দাবাদ’ সিনেমাটিও প্রযোজনা করেছিলেন তিনি।
এসএ/