ঢাকা, রবিবার   ১৯ মে ২০২৪,   জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

চুয়াডাঙ্গায় পাট নিয়ে সঙ্কটে চাষীরা

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৯:২৩ এএম, ৪ আগস্ট ২০২১ বুধবার

চুয়াডাঙ্গায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ হাজার ৭৯৭ হেক্টর জমিতে বেশি পাটের আবাদ হয়েছে। জাগ দেয়ার পানি ও জায়গা সঙ্কটের কারণে জমি থেকে পাট কাটতে পারছে না চাষীরা। অনেকে আঁটি প্রতি ৬ টাকা ব্যয়ে অন্যের জায়গায় পাট জাগ দিচ্ছেন। তবে রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পচানোর পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, গত বছর পাটের দাম ভাল পাওয়ায় এবছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৩ হাজার ৭৯৭ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের আবাদ করেছে চাষীরা। গত মৌসুমে চাষীরা পাটের আবাদ করেছিল ১৬ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে। আর এবার আবাদ করেছে ২০ হাজার ৫২৭ হেক্টর জমিতে।

এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১ হাজার ৫০ হেক্টর, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৭ হাজার ২৪৫ হেক্টর, দামুড়হুদা উপজেলায় ১০ হাজার ৫৩৫ হেক্টর ও জীবননগর উপজেলায় ১ হাজার ৬৯৭ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। 

আবহাওয়া অনুকূল থাকায় চলতি মৌসুমে পাটের আবাদ ও ফলন ভাল। হেক্টর প্রতি ফলন ৩ দশমিক ৫ মেট্টিক টন। প্রতি হেক্টরে ১৩ দশমিক ৫ বেল পাট উৎপন্ন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বোয়ালমারী গ্রামের কৃষক সোহাগ আহমেদ জানান, তিনি দেড় বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছেন। ফলন ভাল হয়েছে। বিঘা প্রতি ১২ থেকে ১৩ মণ পাটের ফলন হবে। তবে এলাকায় পাট জাগ দেয়ার পানি ও জায়গা সঙ্কট দেখা দেয়ায় তাকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এই সংকটের কারণে তিনি জমির পাট কাটা শুরু করেননি। গত বছর পানি সঙ্কট ছিলোনা। তাছাড়া এ বছর পাটের বাজার ভাল না। বর্তমানে ১ হাজার ৬শ’ থেকে ১ হাজার ৯শ’ টাকা মণ দরে পাট বিক্রি হচ্ছে।

আলমডাঙ্গা উপজেলার মাজহাদ গ্রামের শফিকুর রহমান বলেন, তার ৫ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ আছে। অতিবৃষ্টি হলে পাট জাগ দেয়ার কোনো সমস্যা হয়না। কিন্তু এবছর বৃষ্টিপাত হয়েছে খুবই কম। কোথাও পানি নেই। এ অবস্থায় পাট কাটার সময় হলেও জাগ দেয়ার অসুবিধার কারণে পাট কাটতে পারছেন না। এছাড়া গ্রামে পাট পচানো খুবই সমস্যা। গ্রামে গর্ত যা ছিল তা মাটি ভরাট করার কারণে পাট জাগ দেয়ার জায়গা নেই। বৃষ্টি না হলে গ্রামের গর্তে স্যালোমেশিন দিয়ে পানি উঠিয়ে পাট জাগ দিতে হবে। পাট পচানোর সমস্যার কারণে এবার লাভের চেয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক সুফি মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান বলেন, পাট চাষীরা তাদের জমির পাট কাটতে শুরু করেছে। চুয়াডাঙ্গায় বড় সমস্যা পাট পচানোর পানির অভাব। পানির অভাবে চাষীরা ভালভাবে পাট পচাতে পারেনা। আমরা চাষীদের কম ব্যয়ে রিবন রেটিং পদ্বতিতে পাট পচানোর পরামর্শ দিচ্ছি। 

এ পদ্বতিতে পাট পচালে পাটের আঁশের মানও ভাল হয়। ভাল মানের পাট উৎপাদন করতে পারলে দামও ভাল পাওয়া যাবে। এতে চাষীরা লাভবান হবে বলে জানান তিনি।

এএইচ/