ঢাকা, সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

প্রাইমারি হাইপারটেনশনের প্রচলিত চিকিৎসা এবং সীমাবদ্ধতা

একুশে টেলিভিশন  

প্রকাশিত : ০৪:৪৯ পিএম, ৯ আগস্ট ২০২১ সোমবার

প্রাইমারি হাইপারটেনশন একটি লাইফস্টাইল ডিজিজ হলেও বিশ্বব্যাপী যে চিকিৎসা দেয়া হয় তা মূলত ড্রাগ থেরাপি। প্রতিটি ওষুধের রয়েছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। কারো ক্ষেত্রে হয় কম, আবার কারো ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত প্রকট। শুধু ওষুধ দিয়ে যারা উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা করান, তাদের ক্ষেত্রে প্রথমদিকে একটি ওষুধে কাজ হলেও কিছুদিন পর দু-তিনটি ওষুধ নেয়ার পরও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ হতে চায় না।

শুধু ওষুধ সেবন করে যে রোগী উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা করে  থাকেন, তিনি তো কোনোদিনই উচ্চ রক্তচাপের হাত থেকে রেহাই পান না, উপরন্তু ধীরে ধীরে একটা সময় তিনি ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, স্ট্রোক ইত্যাদিতে আক্রান্ত হন।

অথচ যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট ন্যাশনাল কমিটি অন দ্য প্রিভেনশন, ডিটেকশন, ইভ্যালুয়েশন এন্ড ট্রিটমেন্ট অব হাই ব্লাড প্রেশার (জেএনসিভিআই)-এর সর্বশেষ পরামর্শ  হচ্ছে : স্টেজ-১ এবং স্টেজ-২ উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায় ওষুধ শুরু করার আগে কমপক্ষে ৩-৬ মাস ওষুধ না দিয়ে শুধু জীবন-অভ্যাস পরিবর্তন করে চিকিৎসা করা উচিত। 

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে প্রচলিত বিশ্বাস
চারপাশের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে আমরা ধরেই নিয়েছি যে, বয়স বাড়ার সাথে সাথে একপর্যায়ে উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়বে। এরপর ডাক্তারের কাছে যাব। ডাক্তার সবকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ওষুধ খেতে দেবেন। মৃত্যুর দিন পর্যন্ত ওষুধ খাওয়াই হচ্ছে নিয়তি। অথচ এটিই একমাত্র বাস্তবতা নয়।

গবেষকেরা ১৯২০ সালে কেনিয়ার গ্রামের কিছু মানুষের জীবনধারা নিয়ে গবেষণা করলেন। তাদের খাদ্যতালিকায় সোডিয়ামযুক্ত বা লবণাক্ত খাবার খুব কম থাকে। আর থাকে পূর্ণ শস্যদানা, পর্যাপ্ত শাকসবজি, ফল, ডাল-বীজ-বিন এবং খুব অল্প প্রাণিজ আমিষ। দেখা গেছে, ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত গ্রামীণ কেনিয়ানদের রক্তচাপ থাকে সমবয়সী আমেরিকান ও ইউরোপিয়ানদের মতো ১২০/৮০ মি.মি. মার্কারি।

বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমেরিকান ও ইউরোপিয়ানদের রক্তচাপ বাড়তে থাকে, ৬০ বছর বয়সে তাদের রক্তচাপ হয় ১৪০/৯০-এর ওপরে। অথচ ৬০ বছর বয়সে কেনিয়ানদের রক্তচাপ বরং আগের থেকে কমে দাঁড়ায় ১১০/৭০-এ। দুবছর ধরে পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এ সময়ে ১৮০০ মানুষ নানা কারণে কেনিয়ার গ্রামের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। এদের মধ্যে একজনও উচ্চ রক্তচাপের রোগী ছিল না। এমনকি তাদের মধ্যে একজনেরও ধমনীতে চর্বি জমা বা হার্ট ব্লকেজের সমস্যা ছিল না।

লেখাটি ডা. মনিরুজ্জামান ও ডা. আতাউর রহমান এর লেখা এনজিওপ্লাস্টি ও বাইপাস সার্জারি ছাড়াই ‘হৃদরোগ নিরাময় ও প্রতিরোধ’ শীর্ষক বই থেকে নেয়া। 
 
আরকে//