ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সুস্থতার প্রতি মনোযোগী হোন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:৪৫ পিএম, ২৩ আগস্ট ২০২১ সোমবার | আপডেট: ০৬:৫২ পিএম, ২৩ আগস্ট ২০২১ সোমবার

সমীক্ষা বলছে, প্রসাধনী পণ্যের বিক্রিবাট্টা করোনাকালের শুরুর দিকে কিছুটা ধাক্কা খেলেও অল্প সময়ের মধ্যেই কোম্পানিগুলো অবলম্বন করতে শুরু করে নতুন নতুন সব পন্থা। যুক্তরাষ্ট্রের একটি সৌন্দর্যপণ্য প্রতিষ্ঠানের ভাষ্য হলো, ২০১৯-এর তুলনায় ২০২০ সালে তাদের বিক্রি বেড়েছে ১৮.৯%। ভোগ বিজনেস-এর রিপোর্ট বলছে, ২০২০ সালে কোনো কোনো ব্র্যান্ডে ক্রেতাদের মেম্বারশিপ বেড়েছে অন্য সময়ের তুলনায় ৭০%। সুন্দর দেখানোর এ আগ্রহকে ভিত্তি করেই বিশ্বে গড়ে উঠেছে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের ইন্ডাস্ট্রি!

বিজ্ঞাপন মাদকের মতোই প্রলুব্ধ করার ক্ষমতা রাখে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর অ্যা নিউ আমেরিকান ড্রিম-এর তথ্যমতে, প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে শিশু-কিশোরদের টার্গেট করে ১৭ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ২৫ হাজার বিজ্ঞাপন তৈরি করা হয়। এতে শিশু-কিশোররা সচেতন হতে শেখে—তাকে তারকাদের মতো দেখাচ্ছে কিনা! ফলাফল—তাদের মাঝে হীনম্মন্যতা এবং সহিংসতা যুগপৎ দানা বাঁধছে সৌন্দর্যকে কেন্দ্র করে।

৭ ডিসেম্বর ২০২০-এর রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে সারা বিশ্বে ৬১% কিশোর-কিশোরীর বিষণ্নতার কারণ তাদের চেহারা ও দৈহিক গড়ন। একইসাথে তারা স্কুল-কলেজ বা পথেঘাটে নানাভাবে হেনস্থা করতে শিখছে সেইসব সহপাঠীদের, যারা তাদের মতে দেখতে সুন্দর নয় বা যথেষ্ট স্মার্ট নয়।

বিশ্বের নানা প্রান্তে কিশোর-কিশোরীরা লুফে নিচ্ছে রং ফর্সাকারী প্রসাধন সামগ্রী। গায়ের রং ফর্সা দেখানোর পাকচক্রে যেন দিগ্বদিক ছুটছে তারা। কালো ত্বক সুন্দর নয়—সমাজের এই দৃষ্টিভঙ্গিকে পুঁজি করে নানা ধরনের ব্লিচিং প্রোডাক্ট ও ক্ষতিকর কেমিক্যাল দেদারসে বিক্রি হচ্ছে।

থেমে নেই ফিটনেসকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা হরেক রকম ব্যবসা। কেউ বলছে ওজন কমিয়ে দেবে। কেউ বলছে বাড়িয়ে দেবে। কেউ উচ্চতা বাড়ানোর মহৌষধ নিয়ে হাজির হচ্ছে। কেউ প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে—আপনাকে এমনভাবে আমূল পাল্টে দেবে যে, নিজেকেই আর চিনতে পারবেন না! কঠোর ডায়েট আর শরীরচর্চায় কাঙ্ক্ষিত ওজন হয়তো অর্জিত হচ্ছে, একইসাথে হারিয়ে যাচ্ছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, ত্বকের স্বাভাবিক লাবণ্য, দেহের নমনীয়তা ও এনার্জি লেভেল। সুন্দর দেখানোর এই ইঁদুর দৌড়ে উন্মত্ত মানুষ পারলে দেহের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গই যেন বদলে ফেলতে চায়।  

বিশ্বজুড়ে বাড়ছে প্লাস্টিক সার্জারির প্রতি আগ্রহ। আমেরিকান সোসাইটি অব প্লাস্টিক সার্জারির তথ্যমতে, ২০২০ সালে শুধু যুক্তরাষ্ট্রে কসমেটিক সার্জারির পেছনে মানুষ ব্যয় করেছে ১৬.৭ বিলিয়ন ডলার। ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অব অ্যাসথেটিক প্লাস্টিক সার্জারির রিপোর্ট অনুযায়ী সারা বিশ্বে ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে প্লাস্টিক সার্জারির সংখ্যা বেড়েছে ৭.৪ শতাংশ এবং এ সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।

তথ্যসূত্র : ওয়েবএমডি, ২২ জুন ২০২০, মেয়ো ক্লিনিক ওয়েবসাইট; সাইকোলজি টুডে, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯। 

কেআই//