ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

একুশের কণ্ঠ রোধের সেই কালো দিন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:১৬ এএম, ২৯ আগস্ট ২০২১ রবিবার

সরকারের নির্দেশে বাধ্য হয়ে বন্ধ করা হয় একুশে টিভির সম্প্রচার

সরকারের নির্দেশে বাধ্য হয়ে বন্ধ করা হয় একুশে টিভির সম্প্রচার

২৯ আগস্ট ২০০২। গণমাধ্যমের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আইনী মারপ্যাঁচ ও রাজনৈতিক কুটচালে বন্ধ করে দেয়া হয় দেশের প্রথম বেসরকারি টেরিস্ট্রিয়াল চ্যানেল একুশে টেলিভিশন। 

তবে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের এ ঘটনার পর ২০০৫ সালে আইনি লড়াইয়ে জয়ী হয় একুশে। শেষ পর্যন্ত সব বাধা পেরিয়ে ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ স্যাটেলাইট সম্প্রচারে এসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মাটি-মানুষ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের দর্পন হয়ে ওঠে একুশে টেলিভিশন। 

২০০০ সালের ১৪ এপ্রিল। বাঙালীর চিরায়ত উৎসব নববর্ষের দিনে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনী ঘোষণায় যাত্রা শুরু করে বেসরকারি খাতে প্রথম টেরিস্ট্রেরিয়াল চ্যানেল একুশে টেলিভিশন। 

২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের পর বিএনপি-জামাত জোট সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয় একুশে টেলিভিশন। আইনী মারপ্যাচে জোর করে কন্ঠরোধ করা হয় একুশের।

সম্প্রচার বন্ধে আদালতের নির্দেশনা না থাকলেও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ধারণ করার কারণেই বন্ধ করা হয়েছিলো একুশে টেলিভিশন। 


বন্ধ হয়ে যায় একুশে টিভি অন এয়ারের এই লাল বাতি

জন্মলগ্ন থেকেই একুশে টেলিভিশন গণমানুষের কন্ঠস্বরে পরিণত হয়েছিলো বলেই মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেছিলো বিএনপি-জামাত জোট। 

২০০৫ সালে মানুষের ভালোবাসা আর আইনি লড়াইয়ে একুশেকে সম্প্রচারের বৈধতা দেন আদালত। রায়ের পরও ২০০৭ সাল পর্যন্ত পুর্ণাঙ্গ সম্প্রচারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে নানা জটিলতায়। 

১ম পর্বে যাত্রার শুরুর পর থেকেই বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং বৈচিত্র্যময় অনুষ্ঠান দিয়ে একুশে টেলিভিশন জয় করে কোটি বাঙালির মন। পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের জয়গান, বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বলিষ্ঠ দাবি, ধর্মান্ধতা ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলো একুশে । 

ওইসময় পথের প্যাঁচালী, আমরাও বলতে চাই, পথে পথে, দৃষ্টি, সফল যারা কেমন তারা, ভার্জিন তাকদুম তাকদুম,কেনাকাটা অনুষ্ঠানসহ দেশ বিদেশের অসংখ্য ড্রামা সিরিজ জনপ্রিয়তা পায়। 

দ্বিতীয় যাত্রায়ও ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করেই পথ চলছে একুশে টেলিভিশন। সংবাদ বিনোদনে দেশের কোটি দর্শকের চাহিদা পূরণে একুশে টেলিভিশন এগিয়ে যাবে স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে।

বর্তমানে দেশের জনপ্রিয় এই টিভি স্টেশনে খবর ছাড়াও প্রচারিত হচ্ছে খবরের বিশ্লেষণধর্মী টকশো অনুষ্ঠান ‘একুশের রাত’। এ ছাড়াও একুশে টেলিভিশনে রয়েছে বিভিন্ন বিনোদনধর্মী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন। 

রান্না বিষয়ক অনুষ্ঠান- সেরা নারীর সেরা রান্না, মজার টিফিন চাই; লাইফ স্টাইল বিষয়ক অনুষ্ঠান- বিয়ের রাজকন্যা, রুপ লাবণ্য; গানের অনুষ্ঠান- ফোক মোমেন্টেস, মিউজিক এক্সপ্রেস, গানের ওপারে; স্বাস্থ্য বিষয়ক অনুষ্ঠান- হেলদি লাইফ, দ্য ডক্টরস ইতিমধ্যেই দর্শকদের মন জয় করেছে। 

এছাড়াও ইসলামী জিজ্ঞাসা, ই-টেক, ভাইরাল শো দর্শকদের তথ্য বিনোদনের খোরাক জোগাচ্ছে নিয়মিতই। 

এসব অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বৈচিত্র্যময় নাটক ও সিনেমা একুশের দর্শকদের মন রাঙিয়ে চলেছে সেই প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই।