ঢাকা, বুধবার   ১১ ডিসেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ২৬ ১৪৩১

জাম্বুরা কেনো খাবো

শামসুন নাহার স্মৃতি

প্রকাশিত : ০৩:১৬ পিএম, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ রবিবার | আপডেট: ০৩:১৯ পিএম, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ রবিবার

টক-মিষ্টি ফল জাম্বুরা আমাদের সবার কাছে যেমন পরিচিত, তেমনি খুব পছন্দের। টসটসে রসালো স্বাদের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পুষ্টি গুণে ঠাসা এই ফলটি আমরা কেনো খাবো, তা জেনে নেয়া যাক এক নজরে।  

ওজন নিয়ন্ত্রণেঃ
জাম্বুরা শরীরের মেটাবলিজম বাড়িয়ে দেয়। ফলে, ক্ষুধা কম লাগে। যা ওজন কমাতে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে এমন কিছু এনজাইম যা ফ্যাটকে পুড়িয়ে ফেলতে সাহায্য করে, তাছাড়া অত্যাধিক পানি ও খাদ্য থাকার কারণে জাম্বুরা খাওয়ার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। তাই যারা বাড়তি ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তারা প্রতিদিন এক কাপ জাম্বুরা অথবা এক গ্লাস জাম্বুরার রস খেয়ে নিতে পারেন। তবে রসের চেয়ে গোটা জাম্বুরাই শরীরের জন্য বেশি উপকারী, কারণ এতে রয়েছে ফাইবার।

রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করেঃ
জাম্বুররাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। এটি রক্তনালীর সংকোচন-প্রসারণ বৃদ্ধি করে এবং ডায়াবেটিস, নিদ্রাহীনতা, পাকস্থলীর বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এছাড়া জাম্বুরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। জাম্বুরাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি থাকার কারণে সর্দি-কাশিতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। 

হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়ঃ
জাম্বুরাতে পেকটিন নামক এক ধরনের উপাদান আছে, যা শরীর থেকে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বের করে দিতে সাহায্য করে, এছাড়াও ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট নির্ণয়ের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল এলডিএল-এর উৎপাদন ব্যাহত করে। আর পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। জাম্বুরা বা এর রস হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। 

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে জাম্বুরা কার্যকরী ভূমিকা রাখেঃ
জাম্বুরাতে রয়েছে উচ্চ পরিমাণে বায়োফ্লাভোনোয়েড, যা কোলন ক্যান্সার এবং অগ্নাশয়ের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। 

রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করেঃ
এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। যা রক্ত চলাচলের পথ সুগম করে, ফলে দেহের বিভিন্ন প্রান্তে অক্সিজেন পৌঁছানো সহজ হয়। এতে হৃদপিন্ডের উপর চাপ কমে, স্ট্রোক হার্ট অ্যাটাক ও অ্যাথেরোস্কলেরোসিস আশঙ্কা কমাতেও সাহায্য করে। 

বয়স ধরে রাখতে সাহায্য করেঃ
নিয়মিত জাম্বুরা খেলে অকাল বার্ধক্যের চিহ্ন হতে মুক্তি পাওয়া যায়, এছাড়া জাম্বুরায় স্পারমেডিন নামক একটি বিশেষ উপাদান রয়েছে এটি বার্ধক্য প্রতিরোধে সাহায্য করে। 

হাড় ও পেশি মজবুত রাখেঃ
পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম ম্যাগনেশিয়াম ও সোডিয়াম থাকায় পর্যাপ্ত জাম্বুরা খেলে, হাড়ের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি থাকায় পেশিতে টান লাগার সমস্যা থেকেও মুক্তি মেলে।

হজমে সাহায্য করেঃ
এই ফলে প্রচুর ফাইবার থাকায় খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এত গুণে গুণান্বিত এই ফল জাম্বুরা। এতে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি এবং পাটাশিয়াম। এছাড়া ফলিক এসিড পাইরিডক্সিন ও থায়ামিন রয়েছে উল্লেখযোগ্য মাত্রায়। আছে খানিকটা আয়রন ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস ফাইটো-নিউট্রিয়েন্টস এবং অন্যান্য উপাদান লাল রংয়ের জাম্বুরা নানান রকম ফাইটো-নিউট্রিয়েন্টস সমৃদ্ধ হোওয়ায় এগুলো অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। 

তাই সুস্থ ও কর্মক্ষম থাকতে চাইলে আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পরিমিত পরিমাণে জাম্বুরা বা জাম্বুরার রস রাখতে পারি।

লেখক- ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিষ্ট এন্ড ডায়েটিশিয়ান, উত্তরা ক্রিসেন্ট হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, উত্তরা, ঢাকা।

এসবি/এনএস//