ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করা জরুরী’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৩৬ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ সোমবার

ওয়েবিনারে বক্তারা

ওয়েবিনারে বক্তারা

চলমান করোনার মধ্যে জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করা জরুরী বলেই অভিমত দিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকালে ঢাকা আহছানিয়া মিশন তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘করোনায় তামাক ব্যবহারকারীর স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ভূমিকা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এমন অভিমত দেন বক্তারা।

ঢাকা আহছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আবদুল আজিজ, এমপি। ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, বিভাগীয় প্রধান, ডিপার্টমেন্ট অব এপিডেমিওলজি এন্ড রিসার্চ, ন্যাশনাল হার্ড ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এন্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট।

শারমিন আক্তার রিনির উপস্থাপনায় ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন মাদক ও ধূমপানবিরোধী সংগঠন (মানস)-এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস বাংলাদেশের লিড পলিসি এডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির প্রকল্প পরিচালক ও যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক।

ধূমপায়ীদের করোনায় মৃত্যুর ঝুঁকি ৫০% বেশি উল্লেখ করে মাদক ও ধূমপানবিরোধী সংগঠন (মানস)-এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, করোনায় আমরা সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছি মাস্ক ব্যবহারের প্রতি। কিন্তু একজন ধূমপায়ী যখন পাবলিক প্লেসে ধূমপান করেন, তখন তার পক্ষে মাস্ক পরাটা সম্ভব হয় না। এতে তিনি নিজে যেমন করোনা ঝুঁকিতে পড়ছেন, তেমনি তার আশেপাশের মানুষজনকেও ঝুঁকিতে ফেলছেন। উপরন্তু তার মাধ্যমে পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতির শিকার হচ্ছে অন্যরা।

ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস বাংলাদেশের লিড পলিসি এডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তামাক ব্যবহারকারীরা করোনায় অধিক ঝুঁকিতে থাকেন- এটা জেনেও করোনার এই অতিমারীর সময়ও তামাক কোম্পানীগুলোর প্রচার-প্রসার থেমে নেই।

বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির প্রকল্প পরিচালক ও যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, করোনার সময়েও যেসব ক্যান্সার আক্রান্তগণ ধূমপান থেকে বিরত ছিলেন না, তাদের ক্ষেত্রে অনেক ওষুধই কাজ করে না। উপরন্তু ধূমপায়ী ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হলে অনেক ক্ষেত্রেই তাদেরকে আইসিইউ পর্যন্ত যেতে হচ্ছে।

ওয়েবিনারের প্রধান অতিথি অধ্যাপক ডা. মো. আবদুল আজিজ এমপি বলেন, যুগের প্রয়োজনেই যে কোনো আইনকেও যুগোপযোগী করতে হয়। এক্ষেত্রে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটিরও প্রয়োজনীয় সংশোধন করা দরকার। বিশেষ করে পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জন্য নির্দিষ্ট স্থান বন্ধ করতে আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধনের বিকল্প নেই। এছাড়া তামাক কোম্পানীগুলোর ‘সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি’র আওতায় বিভিন্ন লোকদেখানো কার্যক্রমও আইন করে বন্ধ করাটা জরুরী।

সমাপনী বক্তব্যে ঢাকা আহছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ বলেন, করোনার এই ভয়ঙ্কর সময়েও তামাক কোম্পানীগুলো যদি তাদের প্রচার ও প্রসার অব্যাহত রাখে, তবে জনস্বাস্থ্যের জন্য তা মারাত্মক হুমকির কারণ হবে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তামাক ব্যবহার নির্মূল করার জন্য প্রয়োজন একটি শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন। এজন্য বিদ্যমান ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫’-এর সংশোধন অতি জরুরী। -বিজ্ঞপ্তি।

এনএস//