ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

দেশে বাড়ছে শিক্ষিত বেকার (ভিডিও)

মেহেদী হাসান

প্রকাশিত : ০১:৪৫ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ বুধবার

শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। যদিও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ করছেন অনেক বিদেশি নাগরিক। সংখ্যায় যা প্রায় পাঁচ লাখ। দেশের শিক্ষা-ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণেই এমন পরিস্থিতি বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এজন্য শিল্প ও সেবাখাতের অভ্যন্তরীণ চাহিদাকে মাথায় রেখে কর্মবান্ধব শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিতের পরামর্শ তাদের।

২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা ১২ কোটি ৯৮ লাখে উন্নীত হবে। জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপি’র মানব উন্নয়ন সূচকে এমন পূর্বাভাসই রয়েছে। বর্ধিত এই কর্মক্ষম মানুষের প্রত্যেককে উপযুক্ত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। তাগিদ দেয়া হয়েছে কর্মসংস্থান নিশ্চিতেরও।

কিন্তু বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস বলছে, দেশের মাধ্যমিক থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীদের মধ্যে ৩৩ দশমিক ৩২ শতাংশ পুরোপুরি বেকার। ২০১৯ সালে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের নিয়ে পরিচালিত এক অনলাইন জরিপে এমন তথ্য পায় সংস্থাটি।

তবে করোনা সংকটে বেকারত্বের হার বেড়ে ৩৭ শতাংশে উন্নীত হওয়ার কথা বলছেন গবেষকরা। বছরে যে ২০ লাখেরও বেশি নতুন মুখ শ্রমবাজারে প্রবেশ করে, তাদের অর্ধেকের বেশি কোন কাজের সুযোগ পাচ্ছেন না বলে জানান তারা। আর এজন্য দায়ী করা হচ্ছে বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থাকে।

বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, আমার দেশের টোটাল অর্থনীতি নির্ভর করে ইন্ডাস্ট্রিজের উপর। ছোট একটা দেশে জনসংখ্যা অনেক বেশি। এই জনবল নিয়োগ করতে ম্যানুফ্যাকচারিং এবং ইন্ডাস্ট্রি ছাড়া আর কেউ সেভাবে পারে না।

২০১৯ সালে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিডার এক চিঠিতে দেশে প্রায় ৫ লাখ বিদেশি বৈধ এবং অবৈধভাবে উচ্চ বেতনে কাজ করছেন বলে উল্লেখ করা হয়। বিডার হিসাবে বিদেশি নাগরিকরা বাংলাদেশ থেকে বছরে ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে যাচ্ছেন। দেশে দক্ষ মানবসম্পদের অভাব থাকায় বিদেশিরা কাজের সুযোগ পাচ্ছেন বলে মত বিশ্লেষকদের।

বিডি জবসের সিইও ফাহিম মাসরুর বলেন, গত কয়েক বছর থেকে দেখি যে সরকারের পর্যায় থেকে বিভিন্ন দাতাসংস্থা প্রচুর বিনিয়োগ করেছে স্কিলড ডেভেলপমেন্টে। কিন্তু সেই রাইড স্কিলডটা আসলে তৈরি হয়নি।

তারা বলছেন, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এমনভাবে ঢেলে সাজাতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তিগত জ্ঞান, কারিগরি দক্ষতার অর্জনের পাশাপাশি ভাষাগত যোগাযোগেও যথেষ্ট পারঙ্গম হন। এক্ষেত্রে শিল্প ও সেবা খাতের চাহিদা বিবেচনায় মানবসম্পদ তৈরির উদ্যোগ জরুরি বলছেন তারা।

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাসিম বানু বলেন, কারিক্যুলামগুলোর মধ্যে এমন কিছু জিনিস অন্তর্ভুক্ত করতে হবে যা পড়াশুনা করে একজন মনে করতে পারে- আমি একজন স্বাধীন মানুষ, আমি আমার নিজের দায়িত্ব নিব, পরিবারের দায়িত্ব নিব।

করিগরি শিক্ষায় বেকারত্বের হার অনেক কম। আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগও বেশি। বিদেশেও রয়েছে দক্ষ মানুষের চাহিদা। এসব বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষায় উৎসাহিত করতে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকার জরুরি  বলে মত বিশ্লেষকদের।  

ভিডিও-

এএইচ/