ঢাকা, রবিবার   ১৯ মে ২০২৪,   জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

ডিজিটাল ঢেঁকির চাল সুস্বাদু হওয়ায় বাড়ছে চাহিদা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০১:১৬ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ সোমবার | আপডেট: ০১:১৭ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ সোমবার

ডিজিটাল ঢেঁকি উদ্ভাবনের পর নিজেই ধান ভেনে চাল প্রস্তুত করছেন ঠাকুরগাঁওয়ের ওমর ফারুক। সুস্বাদু ও রাসায়নিকমুক্ত হওয়ায় ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই ঢেঁকি ছাঁটা চাল।

একসময় গ্রামের গৃহস্থ বাড়ির বউরা ঢেঁকিতে পাড় দিয়ে ধান ভানতেন আর গান গাইতেন। নানা সুখ-দুঃখের গল্পে সময় পার করতেন তারা। ধান ভানার পাশাপাশি চালের গুড়া, চিড়া-মুড়ি এমনকি হলুদ মরিচও গুড়া করা হতো ঢেঁকিতে। গ্রামীণ সভ্যতার সেই ঢেঁকির এখন আর তেমন দেখা মেলে না। 

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশৈংকলের ভোরনিয়া গ্রামের ওমর ফারুক ঢেঁকির ঐতিহ্য ধরে রাখতে যোগ করেছেন আধুনিক সংস্করণ। এই ডিজিটাল ঢেঁকিতে পা দিয়ে নয়, মোটরচালিত লোহার হাতলে চাপ দিয়ে ধান ভানতে হয়। এতে সময় ও শ্রম দুটোই কম লাগে। 

ওমর ফারুক বলেন, ‘আমার চিন্তা-ভাবনা ছিল নতুন ধরনের কাজ করবো। তারপরেই আমি এটা স্থাপন করেছি। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হচ্ছে, এটাকে বড় পরিসরে নিয়ে যাওয়া। এ অবস্থায় আমি যদি কারিগরি বা প্রযুক্তিগত সহযোগিতা পাই তাহলে আমি বৃহৎ আকারে উৎপাদনে যেতে পারবো।’

এই ঢেঁকিতে সহজেই দিনে ৫ থেকে ৬ মণ ধান ভানা যায়, জানালেন ওমর ফারুক।

তিনি আরও জানান, উৎপাদন হয় ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে। এখানে কোন মিডিসিনের সংস্পর্ষ নেই। আমরা যদি অটো চালের দিকে লক্ষ্য করি, সেই চালে ফাইবারের অংশটুকু আমরা পাই না। তবে আমার এই চালগুলো সম্পূর্ণ ফাইবার সমৃদ্ধ।

শতভাগ রাসায়নিকমুক্ত আর সুস্বাদু হওয়ায় দিনদিন বাড়ছে তার ঢেঁকি ছাঁটা চালের চাহিদা।

স্থানীয়রা জানান, এই ঢেঁকি চাল ঠিক মতো যদি দিতে পারে তাহলে আমরা খুব উপকৃত হবো। আমরা পূর্বে যেমন ঢেঁকিছাটা চালে অভ্যস্থ ছিলাম, ভিটামিনসহ সবটাই বজায় থাকতো। বর্তমানে সেই চাহিদা আবার ফিরে এসেছে।

এদিকে, ওমর ফারুকের উদ্ভাবনের প্রশংসা করে ঢেঁকি ছাঁটা চাল বাজারজাতকরণে প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, এটা যদি অব্যাহত রাখে তবে এটি জনপ্রিয় হবে এবং আমরা পুষ্টিসমৃদ্ধ চাল খেতে পারবো।

আধুনিকতার ছোঁয়ায় সবকিছু বদলে গেলেও চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখা দরকার বলে মনে করেন ঠাকুরগাঁওয়ের এই তরুণ।

ভিডিও-

এএইচ/