ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার স্বাস্থ্য ঝুঁকি কী?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:৫৪ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ মঙ্গলবার

অনেকে খাবারের সঙ্গে অতিরিক্ত লবণ খেতে পছন্দ করেন।লবণ শরীরের জন্য প্রয়োজন, তবে অতিরিক্ত ক্ষতিকর। এটি কতখানি স্বাস্থ্যকর তা জানেন কী? এটি মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। লবণ মানেই সোডিয়াম,অতিরিক্ত লবণ বা সোডিয়াম শরীরের জন্য খুবই খারাপ। যে কারণে ব্লাড ভেসেলের ওপর চাপ বাড়তে থাকে। লবণ খাওয়ার পরিমাণে যদি নিয়ন্ত্রণ আনা না যায়, তাহলে ব্লাডপ্রেশার মারাত্মক বাড়তে শুরু করে। এমনটি হলে হার্টঅ্যাটাক এবং স্ট্রোকের আশঙ্কাও বাড়ে।

অনেকে  তরকারিতে লবণ লবণ খান আবার খাবারের সঙ্গে আলাদা লবণ খান। এভাবে প্রতিদিন কত পরিমাণ লবণ গ্রহণ করা হয়, সেটার হিসাব আর রাখা হয় না। এই অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার কারণে আপনার শরীরে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

পানির পিপাসা
অতিরিক্ত লবণ-জাতীয় খাবার মুখ শুষ্ক করে ফেলে। তাই তেষ্টা বৃদ্ধি পায়। এর কারণ হল, দেহ সোডিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখতে পানির ঘাটতি অনুভব করে। শুধু নোনতা খাবার খাওয়াই না বরং লবণ ও গরম পানি দিয়ে ‘গারগল’ করা হলেও কয়েক মিনিট পরে মুখে শুষ্ক অনুভব হয়।

রক্তচাপ বৃদ্ধি পেতে পারে
একবারে যথেষ্ট পরিমাণে নোনতা খাবার খাওয়া সাময়িকভাবে রক্তচাপ বাড়ায়। এর কারণ হল, সোডিয়াম-জাতীয় খাবার রক্তের চাপ বাড়ায়। ফলে ধনীর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে রক্ত প্রবাহিত হয়। তবে, নোনতা খাবার খাওরার পরে রক্ত প্রবাহের এই ওঠা-নামা সকলের মধ্যে দেখা দেয় না। তবে নিয়মিত সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া রক্তচাপ বা ‘হাইপারটেনশন’এর ঝুঁকি বাড়ায়। তাই বাড়তি লবণ গ্রহণে সচেতন থাকা প্রয়োজন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

স্মৃতির ক্ষয়
অতিরিক্ত লবণ খাওয়া স্মৃতি ক্ষয়ের কারণ হতে পারে। এতে করে মস্তিষ্ক কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে থাকে। কোনো তথ্য সহজে মনে পড়ে না। অল্প সময়ের ব্যবধানে অনেক তথ্য ভুলে যায়। ২০১১ সালে ১২০০ মধ্য বয়স্ক ব্যক্তির ওপর করা একটি কানাডিয়ান গবেষণা থেকে বলা হয় যে, লবণ বেশি খাওয়া ব্যক্তির স্মৃতি লবণ কম খাওয়া ব্যক্তিদের তুলনায় কম হয়ে থাকে।

শরীর ফুলে ওঠা
শরীরে সোডিয়ামের পরিমাণ বেড়ে গেলে শরীর ফুলে যেতে পারে। তবে তা হতে পারে কোনো নির্দিষ্ট স্থানে অর্থাৎ পুরো শরীর এক বারে ফুলে যায় না। শরীরের বিভিন্ন স্থান ফুলে যায়। শরীরের এই বিভিন্ন স্থান ফুলে যাওয়াকে স্বাভাবিক ভাবে নিবেন না বরং আপনার খাদ্য তালিকা থেকে লবণ খাওয়ার মাত্রা কমান।

কিডনিতে পাথর
অতিরিক্ত লবণ কিডনি ফাংশনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। যেমন শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে প্রস্রাবের সঙ্গে বেশি বেশি প্রোটিন বের হয়ে যায়। এতে করে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই কিডনিতে পাথর এড়াতে অতিরিক্ত মাত্রায় লবণ খাওয়া বন্ধ করুন।

পাকস্থলিতে আলসার
সবাই মনে করেন শুধু গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে আলসার হয়ে থাকে। কিন্তু না, অতিরিক্ত পরিমাণ সোডিয়াম বা লবণ খেলে পাকস্থলিতে আলসার হতে পারে। কারণ লবণ খাবার হজমে বাধা প্রদান করে। ফলে খাবার পাকস্থলিতে জমা হয় এবং ঠিকভাবে হজম না হতে পারার কারণে গ্যাস্ট্রিকের উৎপাদন ঘটায়।

অতিরিক্ত লবণ খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য খুবই খারাপ। ধীরে ধীরে এই অভ্যাসটিকে ত্যাগ করুন। অবশ্যই খাবার টেবিল থেকে লবণের পাত্রটি উঠিয়ে ফেলবেন আজই। 
এমএম/ এসএ/