ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০২ মে ২০২৪,   বৈশাখ ১৮ ১৪৩১

রংপুরে পুলিশের নির্যাতনে যুবক নিহত, সংঘর্ষে আহত ৬০

রংপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০১:৩৭ পিএম, ২ নভেম্বর ২০২১ মঙ্গলবার

পুলিশের সঙ্গে এলাকাবাসীর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

পুলিশের সঙ্গে এলাকাবাসীর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

রংপুরের হারাগাছ এলাকার নতুন বাজার পাকার মাথা এলাকায় পুলিশের নির্যাতনে তাজুল ইসলাম নামে এক যুবক নিহত হবার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশসহ অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন।

সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত হারাগাছ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা হারাগাছ থানায় হামলা চালিয়ে আসবাবপত্রসহ মালামাল ভাংচুর করেছে। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে শতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এতে ১০ জন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। 

পুলিশের দাবি, মৃত যুবক তাজুল ইসলাম মাদকসেবী ও মাদক কারবারী। মাদক বিরোধী অভিযান চালাতে গিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় তাকে আটক করলে সে হাট এ্যাটাকে মারা গেছে। তাকে কোন নির্যাতন করা হয়নি বলে দাবি পুলিশের।

এদিকে গভীর রাত পর্যন্ত পুলিশের সাধে বিক্ষুব্ধ জনতার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলার পর রাত ৩টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। পরে রাতেই নিহত তাজুল ইসলামের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে জানিয়ে রংপুর মেট্রোপলিটান পুলিশের ডিসি (ক্রাইম) মারুফ হোসেন বলেন, মৃত তাজুল ইসলাম মাদক কারবারী ও মাদকসেবী। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করলে সে হার্ট এ্যাটাকে মারা যায়। তারপরেও ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পাবার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

তিনি জানান, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু সুবিধাবাদী উচ্ছৃঙ্খল লোক থানায় হামলা করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে। এসব ঘটনায় থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশের কাজে বাধা ও থানায় হামলা-ভাংচুর এবং অন্যটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা। 

পুলিশ জানিয়েছে এ ঘটনায় কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি। তবে এলাকাবাসি জানিয়েছে ৫-৬ জনকে ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ। 

এলাকাবাসির অভিযোগ, তাজুল ইসলাম মাদক সেবী নয় এবং মাদক কারবারীও নয়। তাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে নির্যাতন করে হত্যা করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় দায়ি পুলিশ সদস্যদের বিচার দাবি করেন তারা। 

প্রত্যক্ষদর্শী নতুন বাজার এলাকার আফজাল জানান, আমার সামনে তাজুলকে গ্রেফতার করে হাতে হ্যান্ডকাপ পরিহিত অবস্থায় নির্যাতন করে পুলিশ। আমাদের সামনেই সে মারা গেল অথচ এখন বলছে সে মাদকসেবী ও করবারী- এটা পুরোপুরি বানানো এবং মিথ্যা। 

আর এক প্রত্যক্ষদর্শী সোহরাব হোসেন জানান, প্রকাশ্য বাজারে তাজুলকে আটক করে হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে মারধরের ঘটনাকে পুলিশ এখন ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। তারা নিরপেক্ষ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়না তদন্ত করার দাবি জানান।

এদিকে, গভীর রাতে পরিস্থিতি শান্ত হবার পর পুলিশী নির্যাতনের ভয়ে নয়াবাজারসহ আশপাশের এলাকার বাড়িঘর থেকে লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায়। বেশির ভাগ বাড়িতে পুরুষ মানুষ নেই। পুলিশ নিরীহ লোকদের মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসির।

এএইচ/