ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৪ মে ২০২৪,   বৈশাখ ৩০ ১৪৩১

ভারতে গেল মাত্র ১ হাজার ২২৭ মেট্রিক টন ইলিশ

বেনাপোল প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১০:০৭ পিএম, ৫ নভেম্বর ২০২১ শুক্রবার

রপ্তানি মূল্যের চেয়ে ভারতের বাজারে ইলিশের মূল্য কম হওয়ায় এবার দুর্গাপূজা উপলক্ষে দুই দফায় মাত্র এক হাজার ২২৭ দশমিক ৫ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানি হয়েছে। 

চার হাজার ৬০০ মেট্রিক টন মাছ রপ্তানির কথা থাকলেও এবার প্রথম দফায় এক হাজার ১৩৭ ও দ্বিতীয় দফায় ৯০ দশমিক ৫ মেট্রিক টন মোট এক হাজার ২২৭ দশমিক ৫ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রপ্তানি হয়। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা, দুর্গাপূজার আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ১১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৪০ মেট্রিক টন করে মোট চার হাজার ৬০০ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রপ্তানি করার অনুমতি দেয়। প্রথমে ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ অক্টোবর এর মধ্যে রপ্তানির আদেশ দেয়া হলেও পরে প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ প্রজনন মৌসুম হওয়ায় ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, বিক্রি ও বাজারজাত নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় ৩ অক্টোবর মধ্য রাত পর্যন্ত বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানি হয় মাত্র এক হাজার ১৩৭ মেট্রিক টন। 

এ সময় পর্যাপ্ত মাছ না পাওয়ায় ও মাছের মূল্য অতিরিক্ত হওয়ায় রপ্তানিকারকরা ইলিশ রপ্তানি করতে পারেনি। সেই হিসেবে তিন হাজার ৩৭২ দশমিক ৫ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রপ্তানি করা যায়নি। 

এদিকে গত ২৬ অক্টোবর ভারতে ইলিশ রফতানির সময় বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব তানিয়া ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ১১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৪০ টন করে ইলিশ রফতানি করার অনুমতি প্রদান করা হয়েছিল। কিন্তু গত ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের প্রজনন মৌসুম হওয়ায় সারাদেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ ও বিক্রি নিষিদ্ধ ছিল। যে কারণে অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো ইলিশ রফতানি করতে পারেনি। এ জন্য অবশিষ্ট ইলিশ রফতানির সময় ৫ নভেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। কিন্থু ভারতে ইলিশ মাছ যে মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে সেই মূল্য থেকে বাংলাদেশের বাজার থেকে অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে ইলিশ কেনা, তারপর প্যাকেজিং করা ও বেনাপোল পর্যন্ত ট্রাক ভাড়া যে পরিমাণ পড়ছে তাতে রপ্তানিকারকদের লাভতো দুরে থাক প্রতি টনে হাজার হাজার টাকা লোকসানে পড়ছে। সে কারণে ২৮ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৯০ দশমিক ৫ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি করা হয়।

বেনাপোল মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ অফিসের পরিদর্শক আসওয়াদুল ইসলাম বলেন, দ্বিতীয় দফায় বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) পর্যন্ত ভারতে ৯০ দশমিক ৫ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে বেনাপোল বন্দর দিয়ে। এর আগে প্রথম দফায় গিয়েছিল এক হাজার ১৩৭ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ। সরকারি হিসেবে তিন হাজার ৩৭২ দশমিক ৫ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রপ্তানি করা যায়নি। 

ইলিশ রপ্তানিকারক বিশ্বাস ট্রেডার্সের মালিক নূরুল আমিন বিশ্বাস বলেন, এবার ভারতে চার হাজার ৬০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি করার কথা ছিল। কিন্তু বাজারে ইলিশ সংকট ও মূল্য অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকে ইলিশ রপ্তানি করতে পারেনি। এবার অতিরিক্ত অনুমতি দেওয়ায় এ অবস্থার সৃস্টি হয়েছে। প্রতি কেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য ১০ মার্কিন ডলার ধরা হয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশের কাস্টমস থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধায় ইলিশের এসব চালান রপ্তানি করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

দেশে ইলিশের উৎপাদন ঘাটতি থাকায় ২০১২ সাল থেকে ইলিশ রফতানি বন্ধ করে সরকার। পরবর্তীতে বন্ধুত্ব ও সৌহার্দ্যের সম্পর্কের সূত্র ধরে ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছর দূর্গাপূজার আগে ভারতে ইলিশ রফতানির অনুমতি দিয়ে আসছে সরকার।

এসি