ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৪ মে ২০২৪,   বৈশাখ ৩১ ১৪৩১

ভঙ্গুর অর্থনীতিতে আফগানিস্তানে মানবিক বিপর্যয়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:৪৫ পিএম, ৩০ নভেম্বর ২০২১ মঙ্গলবার

সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবান গত মধ্য আগস্টে কাবুল দখলের পর পরই ভেঙে পড়ে ধুঁকতে থাকা আফগানিস্তানের অর্থনীতি। এর ফলেই দেশটিতে বিশ্বের ভয়াবহতম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে সাংবাদিক ক্রিস্টিনা গোল্ডবাম লিখেছেন, 'তিন মাস হলো আফগানিস্তান তালবানের অধীনে। এরই মধ্যে দেশটির অর্থনীতি ভঙ্গুর হয়েছে। আর, বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি।'

প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, পূর্ববর্তী সরকারকে দেওয়া বিপুল অর্থ তালেবান শাসনামলে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তালেবান ক্ষমতায় আসায় দেশটির বিলিয়ন বিলিয়ন রাষ্ট্রীয় সম্পদ ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা নতুন সরকারকে বিশ্বব্যাপী ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। ফলে, মারাত্মক নগদ ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে দেশটি, যা ব্যাংক এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলোকে পঙ্গু করে দিয়েছে। সেই সঙ্গে, সেখানে খাদ্য ও জ্বালানীর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মারাত্মক খাদ্যসঙ্কট দেখা দিয়েছে। 

তিনি বলেন, 'মারাত্মক অর্থসঙ্কটে পড়ে ঘরের আসবাবপত্র বিক্রি করছেন অনেকেই। শুধু তাই নয়, নিতান্ত বাধ্য হয়ে সন্তানদেরও বিক্রি করছেন অনেক বাবা-মা। বেতন না হওয়ায় সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন। ফলে ব্যহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। এ ছাড়া হাসপাতালের প্রয়োজনীয় সামগ্রীর যোগান না থাকায় অনেক মানুষ চিকিৎসার অভাবেই মারা যাচ্ছে।'

এর আগে নভেম্বরের শুরুতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করেছিল যে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ আফগানিস্তানে প্রায় ৩২ লাখ শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগতে পারে। আর তীব্র শীতের কারণে অন্তত আরাও ১০ লাখ মানুষ মারা যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানায় সংস্থাটি।

প্রতিবেদনে আফগানিস্তানকে দেওয়া সাহায্যের কথা তুলে ধরে গোল্ডবাম লিখেছেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন আফগানিস্তান এবং প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নেওয়া আফগান শরণার্থীদের জন্য আরও ১.২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে দেশটির অর্থনীতি যদি ক্রমাগত ভেঙে পড়তে থাকে, তবে মানবিক বিপর্যয় প্রতিরোধে এই অর্থ সহায়তা কোন কাজে আসবে না, তেমনটাই জানাচ্ছে অর্থনীতিবিদ এবং সাহায্য সংস্থাগুলো।  

একই বক্তব্য আফগানিস্তানে নিযুক্ত ইউএনডিপির প্রধান আবদুল্লাহ আল দারদারিরও। তিনি বলেছেন, 'মানবিক সহায়তা দিয়ে অভুক্ত কিছু মানুষকে সাহায্য-সহযোগিতা করা যায় কিন্তু কোন দেশের অর্থনীতিকে দাঁড়া করানো যায় না।' ইউএনডিপির এক বিশ্লেষণ বলছে- আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে আফিগানিস্তানে দারিদ্র্য মানুষের সংখ্যা ৯৭ শতাংশের ঘরে দাঁড়াতে পারে।

এসি