ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৯ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

ফ্রান্সে ঝিনুক চোর ধরতে অভিনব উপায়

একুশে টেলিভিশন  

প্রকাশিত : ০৬:২০ পিএম, ৬ জানুয়ারি ২০২২ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৬:২১ পিএম, ৬ জানুয়ারি ২০২২ বৃহস্পতিবার

উচ্চমানের ঝিনুক বেশ দামি৷ বিশেষ করে উৎসবের মৌসুমে ইউরোপের দেশগুলোতে দাম আরো বেড়ে যায়৷ ফলে ঝিনুক চোরেরাও এসময় বেশ করিৎকর্মা হয়ে ওঠে৷ তাদের ঠেকাতে ফরাসি এক ঝিনুক চাষী মজার এক পন্থা বেছে নিয়েছেন৷

ইউরোপে ঝিনুকের সবচেয়ে বড় উৎপাদক ফ্রান্স৷ ২০১৯ সালে দেশটি প্রায় ৮৬ হাজার টন ঝিনুক উৎপাদন করেছে, যার দাম আনুমানিক ৩৯৮ মিলিয়ন ইউরো বা ৩৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি৷।

বিশেষ করে বছরের শেষের দিকে ফ্রান্সের ঐতিহ্যবাহী নানা খাবারে ঝিনুক খুব আকর্ষণীয় উপাদান হয়ে ওঠে৷ ফলে এসময়ে ঝিনুকের চাহিদাও বেড়ে চলে৷ যেমন, দেশটির একটি রেস্তোরাঁয় ছয়টি উচ্চমানের ঝিনুকের একটি ডিশ বিক্রি হয় ২৪ ইউরো বা দুই হাজার ৩০০ টাকায়৷ এত চাহিদা থাকায় দামি এ পণ্য চুরিতে চোরেরাও ব্যস্ত হয়ে ওঠে৷

ফরাসি ঝিনুক চাষী ক্রিস্টোফ গিনোর খামার থেকে কয়েক বছর আগে তিন টনের মতো ঝিনুক চুরি হয়৷ বাজারে এর দাম ২০ হাজার ইউরো বা প্রায় দুই লাখ টাকা৷

ফ্রান্সের সঙ্গে স্পেনের সীমান্তবর্তী উপকূলীয় অঞ্চলে গিনোর খামার৷ পানিতে খাঁচার মধ্য়ে ঝিনুক রাখা থাকে, সেই খাঁচাগুলো যাতে ঢেউয়ে ভেসে না যায়, সেজন্য একটি লোহার ফ্রেমের সঙ্গে তার দিয়ে বাঁধা থাকে৷ খামার পাহারায় জনবল নিয়োগের পাশাপাশি প্রযুক্তির আশ্রয়ও নেন খামারিরা৷

কেউ কেউ ড্রোন, এমনকি ঝিনুকের আদলে তৈরি ট্রেসারও ব্যবহার করেন৷ কিন্তু তবুও ২৪ ঘণ্টা এত বড় খামার পাহারা দেয়া কোনো খামারির পক্ষেই সম্ভব হয় না৷ চোরেরাও নতুন নতুন ফন্দি বের করে, জলে থাকা খাঁচা থেকে ঝিনুক তুলে নিয়ে যায়৷

এই চুরি ঠেকাতে ক্রিস্টোফ গিনো মজার এক পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন৷ নিজের খামারের খাঁচা থেকে কিছু ঝিনুক বের করে সেগুলোর খোলের মধ্যে ‘আপনার ওজনের সমান ঝিনুক জিতেছেন' লেখা ছোট ছোট বার্তা পুরে আবার আঠা দিয়ে খোল জোড়া দিয়ে অন্য ঝিনুকের মধ্য়ে রেখে দিয়েছেন তিনি৷

এর ফলে চুরি করা ঝিনুক কিনে কেউ যখন এই চিঠি নিয়ে পুরস্কারের লোভে খামারে হাজির হচ্ছেন, তখনই পুলিশে খবর দেয়া হচ্ছে৷ কার কাছ থেকে এই ঝিনুক কেনা হয়েছে, তা খুঁজে বের করাও তখন পুলিশের জন্য বেশ সহজ হয়ে যাচ্ছে৷

২০১৬ সাল থেকে এই পদ্ধতি কাজে লাগানোর পর তার খামারে আর কোনো চুরির ঘটনা ঘটেনি বলেই জানা গেছে। 

আশেপাশের অন্য খামারিরাও এখন এই পন্থা অবলম্বন করতে শুরু করেছেন৷ গিনোর খামারে এখনও পুরস্কার দাবি করে কেউ আসেননি৷ তবে আশেপাশের বেশ কয়েকটি খামারে এমন ঘটনা ঘটেছে৷ কিছু ক্ষেত্রে তা পুলিশকে জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি৷

এতে যে কাজ হচ্ছে, পরিসংখ্যানই হয়তো তার প্রমাণ৷ ফরাসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ২০১৭ সালে ১৯টি চুরির ঘটনা ঘটলেও ২০২০ সালে একটিও চুরির খবর পাওয়া যায়নি৷

সূত্র: ডয়েচে ভেলে

এসবি/